যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের উৎপাদন ঊর্ধ্বমুখী

বণিক বার্তা ডেস্ক

টেক্সাসে এক্সন মবিলের একটি জ্বালানি তেল শোধনাগার ছবি: রয়টার্স

মূল্যবৃদ্ধির জেরে তেল ও গ্যাসের উৎপাদন বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২২ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে উচ্চমূল্য থাকার কারণে তার প্রভাব পড়েছে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে। মার্কিন সরকার প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে উৎপাদন গড়ে প্রতিদিন ১ লাখ ৭১ হাজার ব্যারেল বেড়েছে। স্বল্প পরিসরে ৪৮টি অঙ্গরাজ্যেই দিনপ্রতি গড় উৎপাদন বেড়েছে। গালফ্ অব মেক্সিকোয় বেড়েছে প্রতিদিন ৪৫ হাজার ব্যারেল, যা আলাস্কার ১১ হাজার ব্যারেল ঘাটতির তুলনায় বেশি। খবর রয়টার্স। 

প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে উৎপাদন গত বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় ১০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ২০২০ সালের পর উত্তোলনের দিক থেকে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এদিকে মার্চে গ্যাস উত্তোলিত হয়েছে ৩ লাখ ১৭ হাজার ১০০ কোটি ঘনফুট। বছরওয়ারি মার্চে গ্যাস উত্তোলন বেড়েছে ৭ শতাংশ। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে উত্তোলিত গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ১৮ হাজার কোটি ঘনফুট, যা ২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় ৭ শতাংশ বেশি। শেল উৎপাদনকে স্বল্পমেয়াদি কার্যক্রম হিসেবে গণ্য করা হয়। কারণ শেল উত্তোলনের ক্ষেত্রে কূপ খুব দ্রুত বন্ধ হয়ে যায়। উত্তোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন কূপ খনন করতে হয়। কিন্তু সেটাও পরবর্তী প্রস্তুতির নিরিখে সময়বহুল। 

মূল্যস্ফীতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ২০২২ সালের জুনে প্রতি ব্যারেলে ১১৯ ডলার বেড়েছিল। তেলের দাম বাড়ার কারণে মার্কিন সরকার তেল উত্তোলনের প্রতি ঝুঁকে পড়ে। প্রকৃত গ্যাসের দাম ২০২২ সালের আগস্টে মাসিক ভিত্তিতে প্রতি মেট্রিক মিলিয়ন ব্রিটিশ থারমাল ইউনিটে ৯ ডলার করে বেড়েছে। ফলে আরো এক দফার জন্য বেড়েছে উত্তোলনের প্রবণতা। যদিও তারপর থেকে দাম প্রতি ব্যারেলে ৭২ ডলার পতন ঘটেছে। প্রতি মেট্রিক মিলিয়ন ব্রিটিশ থারমাল ইউনিটে কমেছে ২ দশমিক ৩০ ডলার। কিন্তু পূর্ববর্তী মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবকে লাঘব করতে পারেনি। উচ্চমূল্যের প্রভাব পড়েছে ২০২২ সালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকে, এমনকি ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকেও প্রভাব দূর হয়নি।

সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে চলতি বছরের দ্বিতীয় ও বিশেষ করে চতুর্থ প্রান্তিকে প্রভাব কমতে পারে। অবশ্য ২০২২ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় ২০২৩ সালের মে মাসে মন্থর হয়েছে তেল ও গ্যাসের খনন তৎপরতা। ২০২২ সালে উৎপাদন প্রবণতা ছিল শীর্ষে। আর খনন কার্যক্রম মন্থর হয়ে আসার মানে উৎপাদনের গতি মন্থর হয়ে আসা। যার প্রভাব ছয় মাসের মধ্যেই দৃশ্যমান হতে শুরু করে। সে হিসেবেই চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে উত্তোলন কমার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে উৎপাদনের আধিক্য কারখানাগুলোকে গতিশীল রেখেছে। বিশেষ করে গ্যাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট খাতগুলো বেশ সরব। মার্চে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মার্কিন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কারখানায় উত্তোলন ছিল ২ কোটি ৪০ লাখ ব্যারেল, যা গত ১০ বছরের মধ্যে বেশি। তার পর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মার্চে গ্যাসের মজুদ ছিল ২১ হাজার ৪০০ কোটি ঘনফুট, যা গত ১০ বছরের গড় মজুদের চেয়ে বেশি। গড় অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ও উদ্বৃত্তের মাধ্যমেই বোঝা যায়, তেলের দাম কেন গড় সূচকের কাছাকাছি অবস্থান করছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন