বিদ্যুতে বরাদ্দ বাড়ল সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকার বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দের সুপারিশ করা হয়েছে ৩৩ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১২ দশমিক ৮ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ২৪ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের তুলনায় নতুন অর্থবছরে বরাদ্দ বেড়েছে ৯ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা বেশি। যদিও চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বিদ্যুৎ খাতের বরাদ্দ ১ হাজার ১০৮ কোটি বাড়িয়ে ২৫ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা করা হয়।

গতকাল বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৪ হাজার ৯৪২ থেকে বর্তমানে ২৬ হাজার ৭০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানির ব্যবহার বহুমুখীকরণের জন্য গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পাশাপাশি কয়লা, তরল জ্বালানি, ডুয়াল ফুয়েল, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।’

বিদ্যুৎ খাতের সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে গত কয়েক বছর বাজেটে বড় অংকের বরাদ্দ রাখে সরকার। গত পাঁচ অর্থবছরের বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের পর দেশের বিদ্যুৎ খাতের বরাদ্দ ২০ হাজার কোটি টাকার নিচে নামেনি। এ অর্থবছরে বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ২১ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২৩ হাজার ১৪৭ কোটি, ২০২০-২১ অর্থবছরে ২১ হাজার ৩৫০ কোটি, ২০২১-২২ অর্থবছরে ২১ হাজার ১৯৯ কোটি, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৪ হাজার ২১৩৯ কোটি ও নতুন অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দের সুপারিশ করা হয়েছে ৩৩ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা।

পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে দেশের বিদ্যুৎ খাতে বাজেটে বরাদ্দ বেড়েছে ১২ হাজার ২০৫ কোটি টাকা। এ খাতে বরাদ্দের বিপরীতে সক্ষমতা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও বিদ্যুৎ সরবরাহের ঘাটতি দূর হয়নি বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

বাজেট বক্তৃতায় বিদ্যুৎ খাতের অবকাঠামোগত ও বিভিন্ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘পটুয়াখালী জেলার পায়রা, কক্সবাজার জেলার মহেশখালী ও মাতারবাড়ী এলাকায় নির্মিত পাওয়ার হাবগুলোয় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে জীবাশ্ম ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক ৩৩টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণাধীন। আরো ১৭টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া সরকার মোট ১০ হাজার ৪৪৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরো ৩৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে।’ 

বিদ্যুৎ আমদানি নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের অভ্যন্তরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার পাশাপাশি আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কূটনৈতিক সম্পর্কের মাধ্যমেও বিদ্যুৎ সংগ্রহ করা হচ্ছে। ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ আসবে নেপাল থেকেও। ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে বাংলাদেশ, ভুটান ও ভারতের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত পর্যায়ে স্বাক্ষরের অপেক্ষায় আছে। সব মিলিয়ে আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট ও ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করতে পারব বলে আশা করছি। ২০৩০ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।’ 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন