আবাসন খাতে খরচ বাড়ছে ইঙ্গিত উদ্যোক্তাদের

রাশেদ এইচ চৌধুরী I চট্টগ্রাম ব্যুরো

নির্মাণসামগ্রীর দামের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেই ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেটে আমদানি পর্যায়ে সিমেন্ট উৎপাদনের মূল কাঁচামাল ক্লিংকারের প্রতি টনের সুনির্দিষ্ট শুল্ক ২০০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আবারো সিমেন্টের দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। 

চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্যমতে, বর্তমানে আমদানি পর্যায়ে প্রতি টন ক্লিংকারের জন্য ৫০০ টাকা শুল্ক দেন সিমেন্ট উৎপাদনকারীরা। এছাড়া বাণিজ্যিক আমদানিকারকরা টনপ্রতি ৭৫০ টাকা শুল্ক পরিশোধ করেন। প্রস্তাবিত বাজেটে সিমেন্ট উৎপাদনকারীদের জন্য ২০০ টাকা বাড়িয়ে ৭০০ এবং বাণিজ্যিক আমদানিকারকের জন্য ৯৫০ টাকা করা হয়েছে। 

প্রস্তাবে এ নিয়ে বলা হয়েছে, ২০১২-১৩ অর্থবছর থেকে ক্লিংকার আমদানির ক্ষেত্রে করহার অপরিবর্তিত রয়েছে। বর্তমানে সিমেন্ট উৎপাদনে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ। পণ্যটির আমদানি শুল্ক যৌক্তিকীকরণ এবং রাজস্ব আয় বৃদ্ধির স্বার্থে এ খাতে কর বাড়ানো হয়েছে। 

তবে এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে সিমেন্ট খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, সিমেন্ট শিল্পের কাঁচামালের শতভাগই আমদানিনির্ভর। দেশে সিমেন্টের চাহিদার কারণে এ খাতের উদ্যোক্তারা ধারাবাহিকভাবে কারখানা সম্প্রসারণ করেছেন। কিন্তু অর্থনৈতিক অস্থিরতায় এ বিনিয়োগ নিয়ে এমনিতেই সংকটে পড়েছেন উদ্যোক্তারা। এরই মধ্যে শুল্ক বাড়ানোর এ পদক্ষেপে সিমেন্ট খাতকে ক্ষতির মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশে সচল সিমেন্ট কারখানা রয়েছে প্রায় ৩৫টি। টাকার অংকে দেশে সিমেন্টের বাজার ৩৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। 

প্রিমিয়ার সিমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল হক বণিক বার্তাকে বলেন, ‘একটা সেক্টরে কত টাকা পর্যন্ত কর নিতে হবে তার নিশ্চয়ই একটা যৌক্তিক পর্যায় থাকবে। সিমেন্ট খাতে এটা দেখতে পাইনি। ডলারের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে বাড়তি জ্বালানি খরচ যুক্ত হয়ে লোকসান কমাতে এর আগেও সিমেন্ট খাতের কোম্পানিগুলোর মূল্য সমন্বয় করতে হয়েছিল। এখন কাঁচামালের ডিউটি ৭০০ টাকা নিয়ে নিলে আর ওইদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে ৫০ ডলার যদি ক্লিংকার হয় তাহলে কত শতাংশ নেয়া হচ্ছে? মধ্যবর্তী কোনো কাঁচামালে আর কোথাও ১৩ শতাংশ শুল্ক আছে? এআইটি নিয়ে বছর শেষে আর ফেরত দেয়া হচ্ছে না। এটা কর আইনের আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমি ৫০ ডলারে আমদানি করলেও ৬০ ডলারে হিসাব করে এআইটি নিয়ে নিচ্ছে। শুল্ক করের প্রস্তাবে সিমেন্টে কমপক্ষে ১০ টাকা করে প্রতি ব্যাগে বেড়ে যাবে।’

সিমেন্টের গুণগত মানের ভিত্তিতে সিমেন্টের দাম কম-বেশি হয়ে থাকে। একাধিক কোম্পানির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খুচরা পর্যায়ে এখন ৫০ কেজির প্রতি বস্তা সিমেন্টের দাম কোম্পানিভেদে ৫৫০ টাকার কম-বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। সিমেন্ট ক্লিংকারে ২০০ টাকা শুল্ক বাড়ার ফলে প্রতি ব্যাগে ১০ টাকার ওপর দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে কোম্পানিগুলো। 

সিমেন্ট প্রস্তুতকারক সমিতির (বিসিএমএ) সভাপতি মো. আলমগীর কবির বণিক বার্তাকে বলেন, ‘২০০ টাকা যেটা বেড়েছে এটার কারণে ওই অনুপাত অনুসারে ভ্যাট, এআইটিসহ অন্যান্য করও বেড়ে যাবে। এত বড় জাম্প আমরা কোনোভাবে মেনে নিতে পারছি না। দ্বিতীয় কথা হলো কোনো ইন্ডাস্ট্রিয়াল কাঁচামালের ওপর এত বেশি শুল্ক অন্য কোথাও নেই। এটা অত্যন্ত বেশি হয়ে যাচ্ছে। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন