দোহায় নতুন চুক্তি সই

২০২৬ সাল থেকে কাতার আরো বেশি এলএনজি দেবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

আরো বেশি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্য কাতারের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ। গতকাল কাতারের রাজধানী দোহায় এ চুক্তি সই হয়। চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৬ সাল থেকে বিদ্যমান চুক্তির আওতায় সরবরাহকৃত এলএনজির বাইরে অতিরিক্ত এলএনজি সরবরাহ করবে কাতার।

১৫ বছর মেয়াদি দ্বিতীয় ধাপে করা এ চুক্তি ২০২৬-৪০ সাল পর্যন্ত। চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার ও কাতার এনার্জি ট্রেডিংয়ের পক্ষে নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ আহমাদ আল হোসাইনি সই করেন।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১ জুন স্বাক্ষরিত এ চুক্তি ১৫ বছর মেয়াদি। এ চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৬ সালে বিদ্যমান সরবরাহের বাইরে অতিরিক্ত ১২ কার্গো এলএনজি এবং ২০২৭ সালে ২৪ কার্গো এলএনজি (যা কম-বেশি ১ দশমিক ৫ এমটিপিএ এলএনজির সমতুল্য) বাংলাদেশে আসবে।

চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘‌অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সব ধরনের জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। বিশ্বের অন্যতম দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত গ্যাস ও বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। বাড়তি জ্বালানি জোগান দিয়ে দেশের শিল্পায়ন ও অর্থনীতিকে আরো গতিশীল করতে গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানির প্রয়োজন হচ্ছে।’

কাতার সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‌বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যকার এই জ্বালানি মৈত্রী দুই দেশের বিরাজমান বন্ধুত্বকে এক নতুন মাত্রা যোগ করল। পৃথিবীজুড়ে জ্বালানি অস্থিরতার এ সময়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কূটনৈতিক দক্ষতার জন্যই দ্রুত এ দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি চুক্তি সই করা সম্ভব হয়েছে।’

চুক্তি সই অনুষ্ঠানে কাতারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী সাদ বিন সেরিদা আল কাবি বলেন, ‘‌বাংলাদেশে বৃহত্তম এলএনজি সরবরাহকারী দেশ হতে পেরে আমরা গর্বিত। বার্ষিক ৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন টন এলএনজি সরবরাহ বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থাসহ সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখবে।’

উল্লেখ্য, দুটি দেশ থেকে বর্তমানে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এলএনজি আসছে বাংলাদেশে। এর একটি কাতার। দেশটির রাস ল্যাফান লিকুইফায়েড ন্যাচারাল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (কাতার গ্যাস) থেকে বাংলাদেশে এলএনজি আসছে। এ কোম্পানির সঙ্গে প্রথম দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি সই হয় ২০১৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। ১৫ বছরব্যাপী এ চুক্তির মেয়াদকাল ২০১৮ থেকে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত। এ চুক্তির আওতায় দেশটি থেকে বছরে ১ দশমিক ৮ থেকে ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন টন আওতায় বছরে ৪০ কার্গো এলএনজি আমদানি করছে পেট্রোবাংলা। বর্তমানে দ্বিতীয় চুক্তির কারণে দেশটি থেকে সাড়ে তিন মিলিয়ন টন এলএনজি আমদানির সুযোগ তৈরি হলো। দুটি চুক্তিই জিটুজি আওতায় করা হয়েছে।

চুক্তি সইয়ের পর জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন