মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইউরোপে ডিজেল রফতানি কমেছে

বণিক বার্তা ডেস্ক

এপ্রিলে বেলজিয়ামের জ্বালানি তেল আমদানি ছিল গড়ে ১ লাখ ৫১ হাজার ব্যারেল ছবি: রয়টার্স

মে মাসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইউরোপে ডিজেল রফতানি কমেছে। মার্চ ও এপ্রিলে সরবরাহ রেকর্ড উচ্চতায় উত্তীর্ণ হলেও মে মাসে দেখা দিয়েছে মন্থরতা। পশ্চিমা দেশগুলোয় চাহিদা কমে আসা ও অভ্যন্তরীণ উৎস ব্যবহারের প্রবণতাই প্রধান অনুঘটকের ভূমিকা পালন করছে। একই সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহতে অবস্থিত খোর ফাক্কান বন্দর থেকে দুই বছর পর প্রথমবারের মতো চালান যাচ্ছে ইউরোপে। খবর প্লাটস।

এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, এপ্রিলে সর্বোচ্চ আমদানিকারক ছিল বেলজিয়াম। বিপরীতে সর্বোচ্চ রফতানিকারক ছিল সৌদি আরব। এপ্রিলে বেলজিয়ামের জ্বালানি তেল আমদানি ছিল প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ ৫১ হাজার ব্যারেল। অন্যদিকে সৌদি আরবের গড়ে প্রতিদিন রফতানি ছিল ৩ লাখ ৩১ হাজার ব্যারেল। এপ্রিলে গড় রফতানি ছিল প্রতিদিন ৬ লাখ ৩৪ হাজার ব্যারেল ও মার্চে ৫ লাখ ৩৪ হাজার ব্যারেল। ২০১৬ সালের পর পরিসংখ্যানে রফতানির এ সূচক সর্বোচ্চ। এদিকে মে মাসে চালান ছিল প্রতিদিন মাত্র ১ লাখ ৬৩ হাজার ব্যারেল।

এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের ইউরোপীয় শাখার প্রধান হেডি গ্রাটি বলেন, ‘‌মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইউরোপে চালান আসা মে মাসে কমে গেছে। কারণ ইউরোপিয়ান ডিজেল থেকে জটিলতা কমে যাওয়া। পরিশোধন কেন্দ্রগুলো ফিরে আসতে শুরু করেছে আগের অবস্থায়। অভ্যন্তরীণ চাহিদাও কমতে শুরু করেছে। ফলে পশ্চিমের বদলে ডিজেল রফতানি বেশি হচ্ছে এশিয়ার দিকে।’

ইউরোপীয় তেলজাত পণ্য সরবরাহে রাশিয়ার একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল, যা ইউক্রেন আক্রমণের মধ্য দিয়ে নড়বড়ে হয়ে ওঠে। বিশেষ করে যুদ্ধের আগে পশ্চিম ইউরোপের ডিজেল ও গ্যাসোলিনের একমাত্র উৎস ছিল রাশিয়া। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে মধ্যপ্রাচ্য বাজার দখলে নেয়। এসঅ্যান্ডপির করা পূর্বাভাসে প্রতিদিন গড় রফতানি ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ব্যারেল। ২০২৪ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে পশ্চিম ও পূর্ব ইউরোপে ডিজেল রফতানি প্রতিদিন ৫ লাখ ৫ হাজার ব্যারেল স্পর্শ করবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের খোর ফাক্কান বন্দর নিকটস্থ ফুজাইরাহ তেল উৎপাদন কেন্দ্র থেকে ডিজেল সরবরাহ করে। ২০২১ সালের এপ্রিলের পর প্রথমবারের মতো পশ্চিম ইউরোপে ডিজেল রফতানি করছে বন্দরটি। ২০২১ সালের জুলাইয়ে প্রতিদিন ১১ হাজার ব্যারেল ডিজেল রফতানি হয়েছে বন্দরটি থেকে। এদিকে পশ্চিম ইউরোপে ওমানের ডিজেল রফতানি বেড়ে এপ্রিলে প্রতিদিন ১৩ হাজার ব্যারেলে দাঁড়িয়েছে, যা ২০২২ সালের অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ।

মধ্যপ্রাচ্য নতুন পরিশোধন কেন্দ্র স্থাপন করেছে ইউরোপের চাহিদার ভিত্তিতে। সৌদি আরব, কুয়েত, ইরাক ও ওমানে বাড়ানো হয়েছে সক্ষমতা। প্রকল্পগুলো মধ্যপ্রাচ্যের জ্বালানি তেল উৎপাদনের সক্ষমতা চলতি বছরের শেষ দিকে গড়ে প্রতিদিন ১ কোটি ৪০ হাজার ব্যারেল পর্যন্ত উত্তীর্ণ করবে, রফতানি উত্তীর্ণ হবে ২০ শতাংশ। কুয়েতের আল-জৌর পরিশোধন কেন্দ্রে প্রথমবারের মতো ২০২২ সালের ডিসেম্বরে উইন্টার গ্রেডের ডিজেল সরবরাহ করেছে ইউরোপে। তবে সবচেয়ে চমক দেখাচ্ছে সৌদি আরবের জাজান পরিশোধন কেন্দ্র। শিগগিরই ইউরোপের অন্যতম প্রধান সরবরাহকারী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে বন্দরটি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন