জাপানের শিকোকু ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানির জন্য ৫০ হাজার টন কয়লা রফতানি করছে ফিলিপাইনের প্রতিষ্ঠান সেমিরারা মাইনিং অ্যান্ড পাওয়ার করপোরেশন। এ চুক্তির মাধ্যমে চীনের ওপর একক নির্ভরশীলতা কমবে ও এশিয়ার রফতানি বাজারে বৈচিত্র্য আসবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, সেমিরারা কোম্পানির জাপানমুখী দ্বিতীয় দফার চালান এটি। এর আগে জানুয়ারিতে ৭৮ হাজার ৪১০ টন কয়লার চালান ফিলিপাইন থেকে জাপানে যায়।
দেশটির কয়লা রফতানি খাতে গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যে পরিণত হয়েছে জাপান। সেদিকে ইঙ্গিত করে সেমিরারার প্রেসিডেন্ট মারিয়া ক্রিস্টিনা গোটিয়ানানের দাবি, ‘এখন পর্যন্ত চীনই আমাদের প্রধান বিদেশী ক্রেতা। কিন্তু দেশটিতে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও শিল্পোৎপাদনের গতি প্রত্যাশার চেয়ে মন্থর। ফলে আমরা এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়াতে কাজ করছি।’
সেমিরারা থেকে চীনে কয়লার চালান চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ১১ লাখ টন স্পর্শ করেছে। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় রফতানি বেড়েছে ৫০ শতাংশ। কোম্পানির মোট রফতানির ৭২ শতাংশ হয়েছে চীনে। ফিলিপাইনে উৎপাদিত কয়লার ৯৯ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে মূলত সেমিরারা কোম্পানি।
গত বছর রফতানি বাজারে যুক্ত হয়েছে ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ার নাম। এদিকে দক্ষিণ কোরিয়াকেও একটা স্থির বাজার হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে কোম্পানির পক্ষ থেকে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে তিন লাখ টনের চালান গেছে সেখানে, যা মোট রফতানি হওয়া কয়লার এক-পঞ্চমাংশ। সেমিরারা সারা বছরের বিক্রি হিসেবে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ১ কোটি ৫০ লাখ টন থেকে ১ কোটি ৬০ লাখ টন, যা এক বছর আগের তুলনায় বেশি। ২০২২ সালের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ কোটি ৪৮ লাখ টন। উৎপাদিত অধিকাংশ কয়লাই ব্যবহার হয় অভ্যন্তরীণ বিদ্যুৎ উৎপাদনে।
কয়লা ও জ্বালানি তেল উৎপাদন কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে ফিলিপাইন অনেকটাই পেছনে। দেশটি নতুন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। প্রাকৃতিক গ্যাস ও নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়াতে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে দেয়া হচ্ছে উৎসাহ। তার পরও সেমিরারা অভ্যন্তরীণ কয়লা বাজার নিয়ে আশাবাদী। দীর্ঘমেয়াদি টেকসই অর্থনীতির সঙ্গে অভিযোজন করে এগিয়ে যেতে চায় দেশটি। কয়েক বছরের মধ্যে স্থানীয় বাজারে বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান করবে প্রতিষ্ঠানটি, এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।