এআই, চিপ ও কোয়ান্টাম কম্পিউটিং

চীনে বিনিয়োগ বন্ধে নীতিমালা তৈরি করবে যুক্তরাষ্ট্র

বণিক বার্তা ডেস্ক

২০২২ সালে দাখিল হয়েছিল ৫ হাজার ৬৪টির বেশি রফতানি ও পুনঃরফতানি লাইসেন্স আবেদন ছবি: কমিউনিকেশনস টুডে

উন্নত প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ রফতানিতে আগেই চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্ববাজার থেকে হুয়াওয়ে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। আরো অনেক চীনা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমও প্রভাবিত হয়েছে। এর সঙ্গে নতুন আরো নিষেধাজ্ঞা যুক্তের কথা ভাবছে বাইডেন প্রশাসন। এর আওতায় মার্কিন কোনো কোম্পানি চীনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), চিপ কোয়ান্টাম কম্পিউটিং খাতে বিনিয়োগ করতে পারবে না। সম্প্রতি দেশটির ট্রেজারি বিভাগের এক কর্মকর্তা সূত্রে তথ্য জানা গেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, সম্প্রতি সিনেটের ব্যাংকিং কমিটির শুনানিতে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের বিনিয়োগ নিরাপত্তা বিভাগের দায়িত্বে থাকা পল রোজেন উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিনিয়োগ বন্ধে কর্মকর্তারা কাজ করছে।

বিশেষ করে চীন চীনের সামরিক বাহিনীর উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত উন্নত সেমিকন্ডাক্টর, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোয়ান্টাম কম্পিউটিং সম্পর্কিত। ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানায়, বাইডেন প্রশাসন চীনের বেশকিছু প্রযুক্তি কোম্পানিতে বিনিয়োগ বন্ধের উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে। বিষয়ে অবগত তিনটি সূত্র জানায়, নিষেধাজ্ঞার আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চীনের বিভিন্ন সংবেদনশীল খাতে কয়েকশ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। মূলত বিনিয়োগ বন্ধ করতেই উদ্যোগ। ওয়াশিংটনে অবস্থানরত চীনবিদ্বেষীরা দেশটিতে মূলধন পাঠানোর জন্য বিনিয়োগকারীদেরই অভিযুক্ত করেছেন। বিনিয়োগের মাধ্যমে চীন তাদের সামরিক বাহিনীর উন্নয়নে কাজ করছে বলেও জানান তারা।

অন্যদিকে রিপাবলিকান সিনেটর বিল হ্যাগার্টলি চীনের টেলিযোগাযোগ কোম্পানি হুয়াওয়ের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত পণ্য সরবরাহ বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন। বর্তমানে চীনের প্রযুক্তি কোম্পানি হুয়াওয়ের কাছে কোনো পণ্য পাঠাতে বা রফতানি করতে হলে আলাদা লাইসেন্সের প্রয়োজন হয়। লাইসেন্স প্রত্যাহারের বিষয়ে জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি থিয়া রোজম্যান কেন্ডলার বলেন, ‘বর্তমানে এর জন্য আমাদের খসড়া কোনো আইন নেই। তবে বিষয়ে পর্যালোচনা চলছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মকর্তারা চীনে বড় ধরনের রফতানির বিষয়ে প্রতিনিয়ত সমালোচনা করে আসছে। তাদের অভিযোগ, বেইজিংয়ের সামরিক বাহিনীর অগ্রগতি হবে এমন পণ্য বিক্রি বা রফতানি বন্ধে অনুরোধ করা হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

সিনেট ব্যাংকিং কমিটির শুনানিতে লিখিত জবানবন্দিতে কেন্ডলার জানান, ২০২২ সালে হাজার ৬৪টির বেশি রফতানি পুনঃরফতানি লাইসেন্স আবেদন দাখিল হয়েছিল। যার মধ্যে ২৬ শতাংশের বেশি বাতিল করে দেয়া হয়েছে।

চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সাধারণ হলেও মে মাসে বিপরীত পদক্ষেপে সবাইকে চমকে দিয়েছে দেশটি। নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারায় যুক্তরাষ্ট্রের চিপ নির্মাতা কোম্পানি মাইক্রনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় চীন। পাশাপাশি মাইক্রনের কাছ থেকে পণ্য না কেনার নির্দেশও দেয় দেশটির সাইবারস্পেস নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এক বিবৃতিতে সাইবারস্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব চায়না (সিএসি) জানায়, পর্যালোচনায় দেখা গেছে মাইক্রনের পণ্যগুলোয় গুরুতর নেটওয়ার্ক নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে, যা চীনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অবকাঠামো সরবরাহ শৃঙ্খলে উল্লেখযোগ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করে। পাশাপাশি চীনের জাতীয় নিরাপত্তাকেও প্রভাবিত করে। মাইক্রন জানায়, প্রতিষ্ঠানটি সিএসির নোটিসের বিষয়ে জানতে পেরেছে এবং কার্যক্রম বহাল রাখতে চীনের নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন