এআই ঘিরে কঠোর আইনের পরিকল্পনা অস্ট্রেলিয়ার

বণিক বার্তা ডেস্ক

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য কঠোর আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা করেছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটি ডিপ ফেক বা বাস্তবসম্মত দেখতে কিন্তু ভুয়া বা বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট তৈরি করতে পারে—এমন সব প্রযুক্তিকে কঠোর নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হচ্ছে। এ ধরনের প্রযুক্তির অপব্যবহার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর রয়টার্স।

প্রযুক্তি খাতের শীর্ষ নির্বাহীদের অংশগ্রহণে সম্প্রতি ‘রিস্ক অব এক্সটিংকশন ফ্রম এআই’ শীর্ষক বৈঠকে এআইয়ের ঝুঁকির বিষয়টি গুরুত্ব পায়। বৈঠকে এআইয়ের বর্তমান উত্থানকে মহামারী এবং পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকিগুলোর মতো বিবেচনা করার আহ্বান জানানো হয়। বৈঠকের পরপরই এআইভিত্তিক প্রযুক্তি ঘিরে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। 

এবিসি টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অস্ট্রেলিয়ার শিল্প ও বিজ্ঞানবিষয়ক মন্ত্রী এড হিউজিক বলেন, ‘প্রযুক্তির অগ্রগতি হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে স্পষ্টই উদ্বেগ রয়েছে। এ ধরনের ঝুঁকির বিষয়টি গুরুত্ব দিতে এবং নিয়ন্ত্রণে আনতে অবশ্যই সরকারের ভূমিকা রয়েছে।’

অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কাউন্সিলের সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি কনটেন্ট সংসদে অধিবেশন চলাকালীন ভুলভাবে উপস্থাপন করা যেতে পারে। এমনটা ঘটলে জনগণের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছবে এবং তা বিরূপ পরিস্থিতির তৈরি করবে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়া এর আগেও পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০১৮ সালে একটি স্বেচ্ছাসেবী নৈতিক কাঠামো উন্মোচনের মাধ্যমে এআই নিয়ন্ত্রণ করে আসছে দেশটি। এড হিউজিক স্বীকার করেন, কপিরাইট, প্রাইভেসি এবং ভোক্তা সুরক্ষাসংক্রান্ত আইনগুলোয় কিছু ঘাটতি রয়েছে। তবে তিনি এও জানান, সরকার নিশ্চিত করতে চায় অস্ট্রেলিয়ার আইনি কাঠামোগুলো এআই খাতের দ্রুত বিকাশে উপযুক্ত।

হিউজিক বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া সরকার এআইয়ের উচ্চঝুঁকিপূর্ণ কনটেন্টগুলো নিষিদ্ধ করার বিষয়টিও বিবেচনা করবে। নতুন আইনকে কাঠামোগত করার জন্য বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও নাগরিক সুরক্ষার জন্য সংগতিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

অন্যদিকে ইউরোপীয় আইন প্রণেতারা গত মাসে চ্যাটজিপিটির মতো এআই প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রণে আইন প্রণয়ন কার্যক্রম শুরু করেছে। এ বিষয়ে এরই মধ্যে কঠোর খসড়া আইনও অনুমোদন করা হয়েছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নাগরিক স্বাধীনতা এবং অভ্যন্তরীণ বাজার কমিটিতে প্রস্তাবগুলো যৌথভাবে গৃহীত হওয়ার পর এমন সিদ্ধান্ত এসেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের এআই আইন হলো একটি ফ্ল্যাগশিপ আইন। আইনটি এআইয়ের মাধ্যমে সৃষ্ট সম্ভাব্য ঝুঁকি সমাধান করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। জুনের মাঝামাঝি একটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন চলাকালে আইনটি গৃহীত হবে। আর এ আইন গঠন হলে তা হবে বিশ্বের প্রথম কঠোর এআই আইন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন