আইইউটির সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

নতুন অর্থবছরে বাজেটের আকার ৭ লাখ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল গাজীপুরে আইইউটির ৩৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ছবি: পিআইডি

নতুন অর্থবছরে (২০২৩-২৪) বাজেটের আকার ৭ লাখ কোটি টাকা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল গাজীপুরে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) ৩৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘১ জুন আমরা নতুন অর্থবছরের বাজেট পেশ করতে যাচ্ছি। এবার আমরা ৭ লাখ কোটি টাকার বাজেট দিতে সক্ষম হব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৬ সালে আমাদের বাজেটের আকার ছিল মাত্র ৬১ হাজার কোটি টাকা। আজকে সেই বাজেট আমরা ৬ লাখ কোটি টাকায় উন্নীত করেছি।’

তিনি বলেন, ‘যেকোনো উন্নয়নের জন্য দরকার একটি পরিকল্পনা। সেটা আমাদের রয়েছে। আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম তখন থেকেই এ পরিকল্পনা করি। ২০২১ সালে বাংলাদেশকে একটি পর্যায়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। ওই বছরেই আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। ৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে ‍উন্নত সমৃদ্ধিশালী দেশ।’

দেশে একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করার কারণে বিদ্যমান অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করে, যার ফলে বাংলাদেশে আজ স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করছে।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক ঝড় এসেছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। অনেক প্রতিবন্ধকতা তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবু আমি বলব, দেশ যখন স্থিতিশীল থাকবে, দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা থাকবে, তখনই দেশ সমৃদ্ধ হতে পারবে।’

ওআইসির মহাসচিব ও আইইউটির চ্যান্সেলর হিসেন ব্রাহিমের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইইউটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি। সমাবর্তনে ২০২১ ও ২০২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের স্নাতক, মাস্টার্স, পিএইচডি ও ডিপ্লোমা ডিগ্রি দেয়া হয়। 

বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশের প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুসলিম উম্মাহকে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে তাদের সন্তানদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিশিক্ষার ক্ষেত্রে আরো বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান। 

তিনি বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য আরো বেশি পরিমাণে বিনিয়োগ করতে হবে। আমাদের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির উন্নয়নে যথাযথভাবে এ সম্পদ ব্যবহার করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আমরা এটা করতে পারব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতির অভাব, জ্ঞান-বিজ্ঞানের অভাব এবং অন্যান্য অনেক বিষয় মুসলিম উম্মাহর পতনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি মনে করি, এ হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের মুসলিম উম্মাহকে মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আধুনিক যুগে মুসলিমরা মাত্র তিনটি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে এটাই এ আধুনিক যুগে গবেষণা, প্রযুক্তি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে মুসলিম উম্মাহর অবদানের প্রকৃত উদাহরণ। মুসলিম জাতির এ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে জোরালো প্রচেষ্টা প্রয়োজন, যাতে তারা এক্ষেত্রে আরো অবদান রাখতে পারেন।’

প্রধানমন্ত্রী তার অর্থায়নে আইইউটির নবনির্মিত নারী হলের উদ্বোধন করেন।

আইইউটি দেশের শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান, যেটি অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) অর্থায়নে পরিচালিত হয়। এর মূল উদ্দেশ্য ওআইসির সদস্যরাষ্ট্রগুলোর মানবসম্পদ উন্নয়নে, বিশেষ করে প্রকৌশল, প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে অবদান রাখা। আইইউটি ওআইসিভুক্ত সদস্যদেশগুলো থেকে সরাসরি অনুদান পায় এবং ছাত্রদের বিনামূল্যে শিক্ষাদান, বোর্ডিং, বাসস্থান ও চিকিৎসা দেয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন