বিএনপি নেতা টুকু ও আমানের কারাদণ্ড বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতির মামলায় বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর নয় বছরের সাজা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। পৃথক আরেকটি মামলায় দলটির আরেক নেতা আমান উল্লাহ আমানের ১৩ বছরের সাজা বহাল রাখা হয়েছে। এছাড়া আমান উল্লাহ আমানের স্ত্রী সাবেরা আমানেরও তিন বছরের সাজা বহাল রেখেছেন আদালত। রায় প্রকাশের দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণেরও আদেশ দেয়া হয়েছে। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল এ রায় ঘোষণা করেন। জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার আদালতে রায়ের মূল অংশ পড়ে শোনান।

রায় ঘোষণার সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ ও এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। টুকু ও আমানের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাইফুল্লাহ মামুন।

এদিকে, বিএনপির শীর্ষ দুই নেতার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল সকাল থেকে সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

১৭ মে দুর্নীতি মামলায় সাজার বিরুদ্ধে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর আপিলের রায়ের জন্য ৩০ মে দিন ধার্য করা হয়। অন্যদিকে ১৪ মে দুর্নীতির মামলায় বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের খালাসের রায় বাতিল করে হাইকোর্টে আপিলের পুনঃশুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য একই দিন ধার্য করা হয়।

সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আমান দম্পতির বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। ওই বছরের ২১ জুন বিশেষ জজ আদালতের রায়ে আমানকে ১৩ বছরের ও সাবেরাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে আপিল করেন। 

২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট সে আপিল মঞ্জুর করে তাদের খালাস দেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২৬ মে আপিল বিভাগ সে রায় বাতিল করে দেন। একই সঙ্গে হাইকোর্টকে মামলাটির আপিল পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন।  

অন্যদিকে, ৪ কোটি ৯৬ লাখ ১১ হাজার ৯১৬ টাকার সম্পত্তির হিসাব ও আয়ের উৎস গোপন করার অভিযোগে ২০০৭ সালের মার্চে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী হাসান মাহমুদ টুকুর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করে দুদক উপপরিচালক শাহরিয়ার চৌধুরী। কমিশনের উপপরিচালক এসএমএম আখতার হামিদ ভূঞা ওই বছরের ২৮ জুন মহানগর হাকিম আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র দেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত এ মামলার রায়ে টুকুকে নয় বছরের কারাদণ্ড দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে টুকু আপিল করলে ২০১১ সালের ১৫ জুন তাকে খালাস দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারি খালাসের রায় বাতিল করে পুনঃশুনানির আদেশ দেন আপিল বিভাগ।

এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বিএনপির দুই নেতার এ রায় বিচারিক আদালতে যাওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের সেখানে আত্মসমর্পণ করতে হবে। আত্মসমর্পণের পর জেলে গিয়ে তারা আপিল করতে পারবেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘শুনানিতে ভারতের জয়ললিতার মামলাটিকে তুলে ধরা হয়েছে। ওই মামলায় কর্ণাটকের আদালত খারিজ করে দিলেও রাষ্ট্রপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করে। এরপর সেই শাস্তি বহাল রাখেন উচ্চ আদালত। বিএনপির দুই নেতার এ রায়ের ফলে রাজনীতিবিদরা দুর্নীতির বিষয়ে আরো সতর্ক হবেন।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন