কোরবানির হাট

চাহিদার চেয়ে এবার বেশি গরু যশোরের খামারিদের কাছে

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, যশোর

যশোরের অধিকাংশ খামারি এনজিও কিংবা ব্যাংক ঋণ নিয়ে কোরবানির পশু পালন করছেন ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

মুসলিমদের দ্বিতীয় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহার বাকি এক মাসেরও কম। যশোরে এবার কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা ধরা হয়েছে ৯০ হাজার। এর মধ্যে জেলায় গরু রয়েছে ৩১ হাজারের কিছু বেশি এবং ছাগল ৫০ হাজারের মতো। তবে খামারে পশু গণনার কাজ এখনো চলমান। করোনার ভয় নিয়ে অবশ্য গত ঈদে গরু-ছাগল বেচাকেনা হয়েছে, যে কারণে অনেকে কোরবানি দেননি। তবে এবার স্বাচ্ছন্দেÅ পশু বিক্রি হবে বলে আশা করছেন খামারিরা।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলায় এবার কোরবানির গরুর চাহিদা ২৯ হাজার থাকলেও খামারে গরু রয়েছে ৩১ হাজার ২১টি। এর মধ্যে সদর উপজেলায় রয়েছে হাজার ৪৪৪টি, মণিরামপুরে হাজার ৯৬৪, ঝিকরগাছায় হাজার ৭৪৭, শার্শায় হাজার ৯১০, চৌগাছায় হাজার ৯৭৫, কেশবপুরে হাজার ৪৬২, অভয়নগরে হাজার ৫৭৪ এবং বাঘারপাড়ায় গরু রয়েছে হাজার ৯৪৫টি। এছাড়া ছাগল রয়েছে ৫০ হাজার।

ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসাড়া ইউনিয়নের বেজিয়াতলা গ্রামের আবদুস সোবহান জানান, তার খামারে ২৪টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে ১০-১২টি এবারের কোরবানিতে বিক্রি করবেন। খামারি বলেন, ‘আমার খামারে সব দেশী জাতের গরু, যেগুলো লাখ ১০ হাজার থেকে লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করব। পশুখাদ্যর অস্বাভাবিক দাম বাড়ায় এবার গরুর দামও বেশি বলে তিনি জানান।

বাঘারপাড়া উপজেলার রাধানগর গ্রামের বাশুয়াড়ী গ্রামের তানভীর হোসেন এবার খামারে ১৪টি গরু লালন-পালন করছেন। প্রতিটি গরু তিনি লাখ ৫০ হাজার থেকে লাখ টাকায় বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন।

চৌগাছা উপজেলার মশ্মিমনগর গ্রামের শরিফুল ইসলাম এবার কোরবানিতে ১৫টি গরু মোটাতাজা করেছেন। প্রতিদিন একটি গরুর পেছনে তার ব্যয় হয় গড়ে ১৮০ টাকা। গরুকে তিনি খৈল, ভুসি, কুঁড়া, ফিড কাঁচা ঘাস খেতে দেন। গতবার করোনার কারণে আশানুরূপ দাম না পেলেও আশা করছেন এবার দাম ভালো পাবেন।

জানা গেছে, অধিকাংশ খামারি নিজেদের গচ্ছিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পুঁজি বিনিয়োগ করে কোরবানির পশু পালন করছেন। আবার অনেকের রয়েছে ব্যাংক এনজিওর ঋণ। খামার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ভারতীয় গরুর চাপে আগে খাতে কোনো সুফল পাননি। অনেকেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন। তবে গত তিন বছর ভারতীয় গরু না আসায় সুফল পেতে শুরু করেছেন খামারিরা। কিন্তু গত বছর করোনায় কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়েছিল তাদের। এবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে অনেক খামারি পথে বসে যাবেন।

যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রাশিদুল হক বলেন, ‘এবারের কোরবানি ঈদে চাহিদার চেয়ে বেশি গরু রয়েছে জেলায়। আর কী পরিমাণ ছাগল খামার বাড়িতে রয়েছে তা গণনার কাজ চলমান। আশা করছি, ছাগলও চাহিদার চেয়ে বেশি থাকবে। আমরা খামারিদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখছি। তিনি আরো বলেন, ‘এবার যশোরে ২৪টি হাট বসবে। সেখানে আমাদের মেডিকেল টিম কাজ করবে। কোনো পশু রোগাক্রান্ত হলে তা শনাক্ত করবে মেডিকেল টিম। একই সঙ্গে হাটে থাকবে ক্যাশলেস ব্যবস্থাও। ক্রেতারা চাইলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও পশু কিনতে পারবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন