
কুড়িগ্রামের
চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের কুষ্টারি গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে থাকেন মজিরন
বেগম (৫২)। অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। তার সেই আবাসনের ঘরে আছে একটি ফ্যান
ও দুটি বৈদ্যুতিক বাল্ব। অথচ তার মাসিক বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৫৪ হাজার ২৩৭ টাকা। ভুতুড়ে
এই বিদ্যুৎ বিলের কাগজ পেয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন ওই নারী। মজিরন বেগমের অভিযোগ, প্রতিমাসে
সর্বোচ্চ বিল আসে ২০০ টাকা। অথচ মে মাসের বিল এসেছে অনেক বেশি। তবে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের
কর্মকর্তাদের দাবি, এটি আসলে খসড়া বিল ছিল।
মজিরন
বেগমকে দেওয়া পল্লী বিদ্যুতের বিলের কাগজে দেখা যায়, তার বৈদ্যুতিক মিটারে বর্তমান
রিডিং ৬৯৪৫। পূর্ববর্তী রিডিং ২৮৭৭। মজিরনের ব্যবহৃত ইউনিট দেখানো হয়েছে ৪ হাজার ৬৮
। ২৭ মে জরিমানা ছাড়া বিল পরিশোধের তারিখ উল্লেখ করে তাকে ৫৪ হাজার ২৩৭ টাকা পরিশোধ
করতে বলা হয়। একটি ফ্যান ও দুটি লাইটে বিগত মাসগুলোতে ২০০ থেকে ২২০ টাকা বিদ্যুৎ বিল
পরিশোধ করলেও মে মাসের বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৫৪ হাজার ২৩৭ টাকা।
বিল
দেখে মজিরন বেগম দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। তিনি বিদ্যুৎ অফিসসহ বিভিন্ন জনের কাছে সমাধানের
জন্য যান। সর্বশেষ চিলমারী উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে গেলে তিনি পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাকে
ফোন দিলে বিষয়টি সমাধান হয়।
মজিরন
বলেন, আমার ঘরে একটা ফ্যান ও দুইটি লাইট জ্বলে। গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে ২২০ টাকা করে
বিল দিয়েছি। কিন্তু এই মাসে বিল এসেছে ৫৪ হাজার টাকার বেশি। আমি নিজে লেখাপড়া জানি
না। অন্যরা যখন আমার বিলের কাগজ দেখে এত টাকার কথা জানায় আমার মাথা ঘুরে যায়। বিলের
কাগজ নিয় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গেলে তারা পুরো বিল পরিশোধ করতে বলে। নিরুপায় হয়ে বিষয়টা
উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানাই। আজ মঙ্গলবার পল্লী বিদ্যুতের লোকজন এসে কাগজসহ আমাকে বিদ্যুৎ
অফিসে নিয়ে যায় এবং ১৬০ টাকা বিল পরিশোধ করতে বললে তা দিয়ে আসি।
চিলমারী
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রুকুনুজ্জামান শাহীন জানান, মজিরন বেগম আমার অফিসে এসে
মৌখিক অভিযোগ জানিয়েছিল। পরে বিষয়টি আমি চিলমারী বিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএমকে সমাধান করার কথা জানিয়েছিলাম।
চিলমারী
জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোস্তফা কামাল দাবি করেন, ‘মজিরন বেগম নিজে
নিজেই বিদ্যুৎ মিটার এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরিয়ে নিয়েছিলেন। এ কারণে মিটার রিডিং
এমন হয়েছিল। মূলত মিটার সমস্যার কারণে এ বিল এসেছে। তবে এটি খসড়া বিলের কপি ছিল। আমরা
তার বিলের বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি।’