অনলাইন শপিং স্ক্যাম সামাজিক মাধ্যমেই ভুক্তভোগীর সংখ্যা বেশি

বণিক বার্তা ডেস্ক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম বর্তমানে অনলাইন শপিং স্ক্যামের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে।এতে যুক্তরাজ্যের ভোক্তারা প্রতি ৭ মিনিটে ভুক্তভোগীতে পরিণত হচ্ছেন। সম্প্রতি লয়েডস ব্যাংকিং গ্রুপ পরিচালিত এক জরিপ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। খবর টেকটাইমস।

জালিয়াতি বা অনলাইন স্ক্যামের দুই-তৃতীয়াংশই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচালিত হয় বলে গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে। লয়েডসের জরিপ থেকে একটি বিষয়ের চিত্র স্পষ্ট। সেটি হলো ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম থেকে অনলাইন কেনাকাটাসংক্রান্ত যে স্ক্যাম পরিচালনা করা হয় সেখানে প্রতি ৭ মিনিটে একজন ভুক্তভোগী হন। আর এর মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে ৫০ লাখ ইউরোর বেশি ব্যয় হয়।

প্রতিনিয়ত এ ধরনের ঘটনা বাড়তে থাকায় বর্তমানে ব্যাংকিং গ্রুপগুলো মেটাসহ অন্য প্রযুক্তি জায়ান্টদের স্ক্যাম বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি যেসব ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের অর্থ ফিরিয়ে দেয়ার কথাও বলেছে। 

দেশটির ব্যাংক ও প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক অস্থিতিশীল পরিবেশের বিষয়টিকেই ইঙ্গিত করে। বিশেষ করে মেটার সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি স্পষ্ট। বর্তমানে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামসহ হোয়াটসঅ্যাপও এর মালিকানাধীন। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন এক প্রতিবেদনে জানায়, অপকর্ম পরিচালনার জন্য একসময় অপরাধীদের কাছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সবচেয়ে উপযুক্ত মাধ্যম ছিল। ২০২১ সালে ৯৫ হাজারের বেশি ভুক্তভোগী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচালিত স্ক্যামের কারণে ৭৭ কোটি ডলারের বেশি অর্থ হারানোর কথা জানিয়েছে।

কয়েক সপ্তাহ আগে যুক্তরাজ্যের ফাইন্যান্স ব্যাংকিং খাতের পর্ষদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। তাদের দাবি, অনলাইন স্ক্যাম থেকে কোম্পানিগুলো লভ্যাংশ পেয়ে থাকে। এ সময় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথাও জানানো হয়। বর্তমান সময়ে অনলাইন কেনাকাটা বেশ জনপ্রিয়। আর এটাকেই কাজে লাগাচ্ছে আক্রমণকারীরা। যেসব পণ্য বাজারে নেই সেগুলো এবং কম দামে বিভিন্ন পরিষেবা দেয়ার কথা বলে এসব জালিয়াতি পরিচালনা করা হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, সামাজিক মাধ্যমের সহায়তায় ৭৮ শতাংশ স্ক্যাম পরিচালনা করা হয়েছে।

প্রতারণা করার এ ধরনের বিষয়গুলোর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সহায়তায় ছড়িয়ে দেয়া হয়। যেখানে প্রায় সময়ই ভুক্তভোগীকে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ স্থানান্তরের জন্য বলা হয়। এর মাধ্যমে ভুক্তভোগী বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ে। লয়েডসের জরিপে জোর দিয়ে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভোক্তারা আসল প্রোফাইল ও বিজ্ঞাপনে দেখানো বিষয় শনাক্তে হিমশিম খায়। আর এসব কারণে স্ক্যামাররা সহজেই আক্রমণ করতে পারে। পোশাক, প্রশিক্ষক, গেমিং কনসোল ও সেলফোনের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি স্ক্যাম কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

২ কোটি ৫০ লাখের বেশি গ্রাহকের অভিযোগ পর্যালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকিং গ্রুপটি জানায়, ৬৮ শতাংশের বেশি পারচেজ বা অনলাইন ক্রয় স্ক্যামগুলো ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম থেকে তৈরি হয়েছে। প্রাপ্ত ও সাম্প্রতিক তথ্য পর্যালোচনার পর লয়েডস জানায়, এ দুটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচালিত স্ক্যাম কেনাকাটার মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের ভোক্তারা প্রতি বছর ২ কোটি ৭০ লাখ ইউরোর বেশি লোকসান গোনে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন