উচ্চশিক্ষা

যেভাবে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলেন মামুন

মেহেদী মামুন

সবার ইচ্ছা থাকে স্ব স্ব বিষয়ের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। ২০১৭ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভর্তি হওয়ার পর থেকে মনের ভেতর একটি স্বপ্ন উঁকি দিত জাবির স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মামুনের। পাবলিক হেলথ ডিসিপ্লিনের বিশ্বসেরা বিদ্যাপীঠ জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটিতে কোনো একদিন পা রাখবেন। স্বপ্নটা আরো দানা বাঁধে ২০১৮ সালে গবেষণা করতে গিয়ে যখন দেখলেন পাবলিক হেলথের সেরা গবেষণাগুলো জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের। এর মধ্যে নিজে গবেষণা করতে গিয়ে ফল কিছুটা খারাপ হওয়ায় শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিলেন। সেসব অতিক্রম করে গবেষণায় আরো বেশি মনোযোগী হলেন বিশেষত মানসম্পন্ন জার্নালে গবেষণা প্রকাশের প্রতি। 

গবেষণা করতে গিয়ে জনস হপকিন্সের জন্য বিশেষ কোনো প্রস্তুতি নিতে পারেননি তিনি। তবে গবেষণার মান ও সংখ্যা বাড়তে থাকায় আশাবাদী মামুনের কাছে কয়েক বছর পর হলেও স্বপ্নের সে মুহূর্ত এসেছিল এ বছর ফেব্রুয়ারিতে। যখন তিনি জনস হপকিন্স ইউনিভাসির্টি ও ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথ থেকে ‘‌মাস্টার অব পাবলিক হেলথ’ (এমপিএইচ) করার কনফার্মেশন মেইলটি পেয়েছিলেন। জনস হপকিন্সের সেরা স্কুল বলে খ্যাত এটি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে এমপিএইচে স্কলারশিপের আবেদনের বিষয়ে মামুন জানান, সাধারণত ফল সেমিস্টারের জন্য আগের বছর ডিসেম্বরের ১ তারিখের মধ্যে আবেদন করতে হয়। তিনি গত বছর নভেম্বরের শেষের দিকে আবেদন করেন। স্কলারশিপ আবেদন বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এর মধ্যে আইএলটিএসের স্কোর, গবেষণা প্রকাশনা, নেতৃত্বের দক্ষতা, প্রাতিষ্ঠানিক ফল, স্টেটমেন্ট অব পারপাস (এসওপি), রিকমেন্ডেশান লেটার এবং জীবনবৃত্তান্ত। 

মামুনের আইএলটিএস করা ছিল না তবে মামুনকে স্কলারশিপ পেতে সুবিধা দিয়েছে বেশ কয়েকটি বিষয়। যার মধ্যে রয়েছে তার নিজের প্রতিষ্ঠা করা আন্ডারগ্র্যাজুয়েট রিসার্চ অর্গানাইজেশন ‘চিন্তা রিসার্চ অর্গানইজেশন’ নামে পরিচিত। এ সংগঠনের অধীনে তিনি দুই শতাধিক স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীকে হাতে-কলমে গবেষণার প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তাদের বিভিন্ন জার্নালে গবেষণাপত্র প্রকাশে সহায়তা করেছেন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে দুই শতাধিক গবেষণা প্রকাশনা, দেশী-বিদেশী তিন বিশিষ্ট গবেষক কর্তৃক দেয়া রিকমেন্ডেশান লেটার ও শক্তিশালী জীবনবৃত্তান্ত। এগুলোর জন্য তাকে আলাদাভাবে মার্কিং করার নিয়ম রয়েছে। 

জনস হপকিন্সে পড়তে যাওয়ার বিষয়ে বিশ্বসেরা ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় নাম আসা এ শিক্ষার্থী জানালেন এবার নিজের কিছু ব্যস্ততা ও চিন্তা রিসার্চ অর্গানাইজেশনকে এগিয়ে নেয়ার জন্য একটু সময় প্রয়োজন। এজন্য কোর্স ডিফার করার (পরবর্তী সেমিস্টারে নেওয়ার) প্রয়োজন হতে পারে। বিশেষত এটুকু সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের মধ্যে গবেষণার আগ্রহ বাড়াতে কাজ করবেন তিনি। মামুন বলেন, ‘‌জন হপকিন্সে চান্স পেতে হলে একটি বিষয় সবসময় মনে রাখতে হবে। সেটি হলো তারা সবসময় গবেষণা দেখতে চায়। সুতরাং  স্নাতকোত্তর থেকে ভালো মানের জার্নালে পেপার পাবলিকেশন করার চেষ্টা করতে হবে। গবেষণা সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকা, ভালো সিভি আর শক্তিশালী রিকমেন্ডশেন লেটার ও এসওপি দিতে পারে অধিক সুবিধা। খেয়াল রাখতে হবে ন্যূনতম প্রাতিষ্ঠানিক ফল নিশ্চিত করার প্রতিও।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন