কালীগঞ্জের বেদে পল্লী পরিদর্শনে মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দল

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ

‘পথে পথে সাপ ও বানরের খেলা দেখিয়ে যা আয় হতো তা দিয়ে আমার পরিবারের খাবার জোগাতাম। যেখানে যেতাম সেখানে বাঁশের কঞ্চি আর পলিথিনের তৈরি ছোট্ট একটি তাঁবুতে আশ্রয় নিতাম। ঝড়বৃষ্টিতে ভিজতাম। আমাদের একটি স্থায়ী ঘরের স্বপ্ন ছিল, তা সত্যি হয়েছে। এখন নিজেদের জমি আর পাকা ঘর হয়েছে। স্বামী-সন্তান নিয়ে নিশ্চিন্তে বসবাস করছি।’—এভাবেই বলছিলেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামে প্রতিষ্ঠিত বেদে পল্লী স্বপ্ননীড় আশ্রয়ণ প্রকল্পের  বাসিন্দা পুতুল। 

তৎকালীন কালীগঞ্জ উপজেলার ও বর্তমানে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া জেরিনের দীর্ঘদিনের চেষ্টায় বাস্তবায়িত হয় বেদে সম্প্রদায়ের সদস্যদের জন্য কালীগঞ্জের স্বপ্ননীড় আশ্রয়ণ প্রকল্প। 

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পিছিয়ে পড়া বেদে জনগোষ্ঠীকে মূল ধারায় নিয়ে আসতে সরকারের উদ্যোগে ২০২২ সালের ২১ জুলাই ঝিনাইদহে কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের মাজদিয়া বাঁওড়ের ধারে ৫৯ পরিবারের জন্য স্থায়ী ঘর ও জমির দলিল বুঝিয়ে দেয়া হয়। সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখে পল্লীটি নির্মাণ করা হচ্ছে জলাধারের পাশেই। ঘরের চারপাশে কিছু খোলা জায়গা রাখা হয়েছে। পল্লীর প্রতিটি ঘরের সামনে এখন সবজি চাষ করছেন এখানকার বাসিন্দারা। 

গতকাল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল এ স্বপ্ননীড় আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শন করে। দলটির নেতৃত্ব দেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আব্দুর রাজ্জাক সরকার ও উপসচিব মো. রফিকুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মো. ইয়ারুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রাজীবুল ইসলাম খান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া জেরিন, কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হাবিবুল্লাহ, ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। 

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া জেরিন বলেন, ‘‌বেদে সম্প্রদায় কালীগঞ্জ উপজেলায় দীর্ঘদিন মানবেতর জীবনযাপন করে আসছে। মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি একটি পরিবারও গৃহহীন থাকবে না। এমন প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেদে সম্প্রদায়ের ৫৯ পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেয়া হয়। পিছিয়ে পড়া বেদে সম্প্রদায়ের সদস্যদের পুনর্বাসন সম্পন্ন হওয়ায় তাদের নতুন প্রজন্ম শিক্ষা-স্বাস্থ্যের পাশাপাশি নাগরিক সুবিধা নিয়ে গড়ে উঠবে।’ 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন