নেটওয়ার্ক নিরাপত্তার জন্য হুমকি

চীনা নিষেধাজ্ঞায় যুক্তরাষ্ট্রের চিপ নির্মাতা মাইক্রন

বণিক বার্তা ডেস্ক

নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারায় এবার যুক্তরাষ্ট্রের চিপ নির্মাতা কোম্পানি মাইক্রনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চীন। পাশাপাশি মাইক্রনের কাছ থেকে পণ্য না কেনার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সাইবারস্পেস নিয়ন্ত্রক সংস্থা। খবর রয়টার্স।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অবকাঠামোর ব্যাখ্যায় থাকা টেলিকম, পরিবহন আর্থিক খাতেও সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যুতে মার্কিন সরকার চীনের বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ফলে আধুনিক প্রযুক্তি থেকে শুরু করে চিপ উৎপাদনে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশসহ চীনে সবকিছুর রফতানি বন্ধ রয়েছে। এরই মধ্যে মাইক্রনের ওপর চীনের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি প্রকাশ্যে এলো।

এক বিবৃতিতে সাইবারস্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব চায়না (সিএসি) জানায়, পর্যালোচনায় দেখা গেছে মাইক্রনের পণ্যগুলোয় গুরুতর নেটওয়ার্ক নিরাপত্তাঝুঁকি রয়েছে, যা চীনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অবকাঠামো সরবরাহ শৃঙ্খলে উল্লেখযোগ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করে। পাশাপাশি চীনের জাতীয় নিরাপত্তাকেও প্রভাবিত করে।

মাইক্রন জানায়, প্রতিষ্ঠানটি সিএসির নোটিসের বিষয়ে জানতে পেরেছে এবং কার্যক্রম বহাল রাখতে চীনের নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী। তবে কী ধরনের ঝুঁকির সন্ধান পাওয়া গেছে সে বিষয়ে এবং মাইক্রনের কোন ধরনের পণ্য নিষেধাজ্ঞায় পড়বে সে বিষয়ে সিএসি বিস্তারিত জানায়নি। জেফেরিসের বিশ্লেষকদের মতে, নিষেধাজ্ঞার কারণে মাইক্রোনের ওপর তেমন প্রভাব পড়বে না। কেননা চীনে ভোক্তা ইলেকট্রনিকস সংস্থা যেমন স্মার্টফোন কম্পিউটার নির্মাতা, অবকাঠামো সরবরাহকারীদের জন্য মাইক্রন প্রধান সরবরাহকারী নয়।

এক নোটে বিশ্লেষকরা জানান, চীনে থাকা সার্ভারগুলোয় ডির্যাম ন্যান্ড পণ্য খুব একটা ব্যবহার করা হয় না। পাশাপাশি মাইক্রনের আয় চীনের টেলিকম সরকারের ওপর নির্ভরশীল নয়। সে হিসেবে মাইক্রনের খুব একটা ক্ষতি হবে না। মাইক্রন মূলত ডির্যাম ন্যান্ড ফ্ল্যাশ মেমোরি চিপ উৎপাদন করে। এর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং ইলেকট্রনিকস এসকে হাইনিক্স এবং জাপানের কিওক্সিয়ার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে। টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস্টোফার মিলার জানান, জাপানে গ্রুপ অব সেভেনের সম্মেলন চলার সময় সিএসির ঘোষণাটি প্রকাশ্যে এসেছে।

গত সপ্তাহে এক ঘোষণায় জাপানে এক্সট্রিম আল্ট্রাভায়োলেট প্রযুক্তির উন্নয়নে বিকাশে ৫০ হাজার কোটি ইয়েন বা ৩৭০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করার কথা জানায়।

অন্যদিকে সিএসির পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার, চীনের কর্মকাণ্ডে মেমরি চিপ বাজারের বাজে অবস্থা তুলে ধরতে মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করবে বলে জানায়।

দেশটির বাণিজ্য বিভাগের এক মুখপাত্র জানান, আমরা দৃঢ়ভাবে ধরনের ভিত্তিহীন বিধিনিষেধের বিরোধিতা করি। পদক্ষেপের পাশাপাশি সাম্প্রতিক বিভিন্ন অভিযান অন্যান্য মার্কিন কোম্পানিকে শিকার বানানোর প্রচেষ্টা চীনেরনতুন বাজার খোলা স্বচ্ছ নিয়ন্ত্রক কাঠামোর প্রতিশ্রুতি দেয়া দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। সিএসির ঘোষণাকে ওয়াশিংটন বেইজিংয়ের মধ্যে চলমান বিরোধের সর্বশেষ পরিস্থিতি হিসেবে আখ্যা দিয়েছে বিবিসি। অন্যদিকে, চীনের চিপ নির্মাণ শিল্পের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকেও বেশকিছু ব্যবস্থা আরোপ করতে দেখা গেছে।

জি৭ নেতাদের বৈঠকের একদিন পরই সিএসির ঘোষণা এলো। আর ওই বৈঠকে দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে চীন দেশটির অর্থনৈতিক বাধ্যবাধকতার ব্যবহার নিয়ে সমালোচনা করে জাপান। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘জি৭ সদস্যভুক্ত দেশগুলো চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে ঝুঁকিমুক্ত বৈচিত্র্যময় করতে চায়। এর মানে নিজস্ব সরবরাহ চেইনে বৈচিত্র্য আনতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন