স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ আরো কম হলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়বে

দেশে বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের বিনিয়োগ রয়েছে ল্যাবএইড গ্রুপের। তিন দশকেরও বেশি সময়ে সারা দেশে রোগ নির্ণয় বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবার প্রসার করেছে গ্রুপটি। আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে বেসরকারি চিকিৎসাসেবা খাতে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা নিয়ে বণিক বার্তা সঙ্গে কথা বলেছেন ল্যাবএইডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এএম শামীম সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ

দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে আসন্ন বাজেটে কী ধরনের নীতি প্রত্যাশা করেন?

স্বাস্থ্য মানুষের মৌলিক চাহিদা। সরকারি বেসরকারি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই সেবা দেয়া হচ্ছে। আগের চেয়ে সেবা ভালো হয়েছে। তবে এখনো ১০ লাখের বেশি মানুষ দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য যায়। এতে ১০ বিলিয়ন ডলার সেখানে খরচ হয়। এসব বিবেচনা করে আসন্ন বাজেটে নিশ্চয়ই কিছু প্রতিফলন থাকবে। আমরা যদি করের কথা বলি, চিকিৎসা যন্ত্রাংশের ওপর শতাংশ কর রয়েছে। আরো শতাংশ অগ্রিম আয়কর রয়েছে। এরপর স্পেয়ার পার্টসগুলোর (খুচরা যন্ত্রাংশ) ওপর ৩৫ শতাংশ আসে। জীবনরক্ষাকারী যেমন ব্লাড ব্যাংক, ওটি লাইট, ওটি টেবিল এসবের ওপর ১৫-৩৫ শতাংশ কর আসে। একটা কর রেখে যদি অগ্রিম আয়করকে বাতিল করা যায় তাহলে ভালো। কেননা এই টাকা ফেরতের ক্ষেত্রেও অনেক অফিশিয়াল আনুষ্ঠানিকতা থাকে, যা কিছুটা কঠিন। জনবান্ধব সরকারকে বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে অনুরোধ করব।

দেশে সব মানুষের হাতের নাগালে চিকিৎসাসেবা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন বলে আপনি মনে করেন?

আমাদের দেশে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে আউট অব পকেট এক্সপেন্ডিচার (নিজের পকেট থেকে বাড়তি ব্যয়) ৭০ শতাংশের বেশি। আন্তর্জাতিকভাবে তা ২৭ শতাংশ পর্যন্ত স্বীকৃত, যা আমাদের দেশে পুরোপুরি বিপরীত। তবে একদিনেই তো আমাদের সরকার তা দিতে পারবে না। আমরা চাই প্রাথমিক চিকিৎসা, জরুরি চিকিৎসা, ট্রমার (শরীরে বা মনে সৃষ্ট আঘাত) বিষয়গুলোকে একটা স্বাস্থ্যবীমার মধ্যে আনার ব্যবস্থা করা হোক। সব বেসরকারি হাসপাতালকেও বলে দেয়া উচিৎ যে, পরে একটা স্কিমের মাধ্যমে তারা টাকাটা ফেরত পাবে। এটা প্রাথমিকভাবে মানুষকে ভরসা দেবে। স্বাস্থ্য খাতে বাজেট কম বা বেশি যা- বলা হোক না কেন, বাজেটের বরাদ্দ সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয় না। অর্থের ব্যবহার ভালোভাবে হলে বিদ্যমান ব্যবস্থাপনার মধ্যেই তিন-চার গুণ সেবা দেয়া যাবে। আরেকটি বিষয় হলো পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ বা সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) এটা আমরা অনেক বলি কিন্তু হয় না। সরকারের অনেক জায়গা আছে, যা আমরা ব্যবহার করতে পারি। একই সঙ্গে সরকার যদি তার বাজেটের কিছু অংশ আমাদের দিয়ে দেয়, তাহলে একটা ডায়ালাইসিস আমরা হাজার টাকার মধ্যে করতে পারি। একটা বাইপাস সার্জারি আমরা লাখ টাকায় করতে পারি। একটা এনজিওপ্লাস্টি ৫০ হাজার টাকায় করতে পারি। একটা এমআরআই আমরা হাজার টাকায় করতে পারি। যেমন প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, জরুরি সেবা, পিপিপি সব জায়গায় না হলে কিছু জায়গায় পাইলট প্রজেক্ট করে স্বাস্থ্যবীমা চালু করা যেতে পারে। এমন চার-পাঁচটা পদক্ষেপ নিতে পারলে আমাদের স্বাস্থ্যসেবা মানুষের আরো কাছাকাছি যাবে বলে মনে করি।

স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি খরচ কমানোর বিষয়ে আপনার মতামত কী?

স্বাস্থ্যসেবার ওপরে মানুষের আস্থা ফিরেছে। তবে তাতেও কিছুটা সংশয় রয়েছে। এখানে মানের প্রশ্ন তৈরি হয়। আমরা যে সেবা দিচ্ছি তার মান কেমন? অবশ্যই বাজেটে একটা স্কিম থাকতে হবে, তা হলো অ্যাক্রেডিটেশন (যোগ্যতার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি), মান নিয়ন্ত্রণ। এগুলো সারা পৃথিবীতে রয়েছে। যেমন এনএবিএইচ, জেসিআই, এনএবিএল। প্রত্যেকটি হাসপাতালকে দুই বছরের মধ্যে অ্যাক্রেডিটেশনের মধ্যে এসে মান নিয়ন্ত্রণ করে আবার দুই বছরের মধ্যে তা যাচাই করতে হবে। অডিট করে আবার রিনিউ করা। খুব কম খরচেও সরকার ব্যবস্থা নিলে স্বাস্থ্যসেবার মান নিয়ে যে প্রশ্ন আসে তার ৬০-৭০ শতাংশ আমরা উত্তরণ করতে পারব।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বেসরকারি রোগ নির্ণয় কেন্দ্র হাসপাতালের সংখ্যা বাড়ছে, তবে মান বাড়ছে না। চিকিৎসায় অবহেলা দায়িত্বহীনতার অভিযোগ উঠছে নানা সময়ে। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিপূর্ণ শৃঙ্খলায় আনতে কী পদক্ষেপ প্রয়োজন?

বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেখভালের জন্য আমার মনে হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আলাদা শাখা থাকা উচিত। দেশের মানুষকে বেসরকারি খাত প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সেবা দিচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লোকবল বাড়ানো উচিত। যাতে নিবন্ধন দেয়া, কোনো ঘটনা ঘটলে তার সুষ্ঠু তদন্ত করে তাত্ক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা নেয়া। এসব ক্ষেত্রে আমরা দুই পক্ষ না হয়ে এক পক্ষ হয়ে কাজ করলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নত হবে। সারা বিশ্বে যেমন সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ায় মানুষকে সেবা দেয়ার জন্য সরকার বেসরকারি প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করে। আমাদের কোনো ইলেকট্রনিক মেডিকেল রেকর্ড (ইএমআর) কিপিং ব্যবস্থা নেই। ফলে দেখা যায়, আমরা একটা পরীক্ষা চারবার করি। জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে যদি ব্যক্তির রোগ পরীক্ষার ফলাফলগুলো সংরক্ষণ করা যায়, তাহলে খরচ এক-তৃতীয়াংশ হয়ে যাবে। আজকে কেউ পেটে ব্যথার জন্য কোনো চিকিৎসকের কাছে গেলেন, মাথাব্যথার জন্য বা জরুরি প্রয়োজনে অন্য কোথাও গেলেন। তাহলে তাকে তিন স্থানেই তিন ধরনের পরীক্ষা করতে হচ্ছে। কিন্তু যখন একটি ইএমআর থাকবে, তখন ওই পরিচয়পত্রের নম্বরের বিপরীতে সব পরীক্ষার প্রতিবেদন এসে যাবে। ব্যবস্থাপনা আরো ভালো করা গেলে চিকিৎসা খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। আমাদের প্রায় ১৮টি লাইসেন্স লাগে। বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) বা রফতানি উন্নয়ন জায়গাগুলোয় একট টেবিলে সব কাজ করে। করও দেয়। আর আমাদের যেমন জেনারেটর লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স, পরমাণু শক্তি কমিশন, পরীক্ষাগার, মন্ত্রণালয় এসব কাজ কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন কর্তৃপক্ষ করে। তবে আমরা যদি এসব কাজ এক টেবিলে গিয়েই করতে পারি, তাহলে আমরা আরো ১০ বছর এগিয়ে যাব বলে মনে হয়। এগুলো করা যায়। শুধু সদিচ্ছা প্রয়োজন।

যেকোনো ধরনের রোগ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে সরকারের পক্ষ থেকে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয় তা পর্যাপ্ত কিনা?

পদক্ষেপগুলো পর্যাপ্ত নয়। এখন ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে। দিল্লিতে করোনা শনাক্ত কিছুটা বেড়েছে। সব সংক্রামক অসংক্রামক রোগের বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেনতা বৃদ্ধি করতে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে আরো সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। বেসরকারি স্বাস্থ্য খাতকে সম্পৃক্ত করে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে পারে।

দেশের চিকিৎসকদের উন্নত প্রশিক্ষণ চিকিৎসা ব্যবস্থায় আধুনিকায়নে কী করা যেতে পারে?

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চিকিৎসক নিবন্ধন পেলে দুই বছর পর পর নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নবায়ন করায়। আমাদের দেশেও এমন ব্যবস্থা করা উচিত। চিকিৎসা ডিগ্রি অর্জন করার পর কিন্তু আমরা জানি না, সরকারি চাকরিতে যাব নাকি বেসরকারি চাকরিতে যাব, নাকি প্রশাসনে। এটা যদি এমবিবিএস ফাইনালের সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়, তাহলে অনেক বিষয় নিয়েই জটিলতা কমে যাবে। এসব ছোট বিষয়গুলো বিবেচনায় নিলে আমরা বহু বছর এগিয়ে যাব। আজকে শুরু করলে হয়তো কয়েক বছর পর উপকার পাব। সরকারের ব্যবস্থাপনায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে কমিউনিটি ক্লিনিক বেশ ভালো একটি পদক্ষেপ। ব্যবস্থাপনাকে আরো কার্যকরী করার পরিকল্পনা করতে হবে।

মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে যেসব খাতে কম ব্যয় করা হয় তার মধ্যে স্বাস্থ্য খাত একটি। বিষয়ে আপনার মতামত কী?

আমাদের জনপ্রতি সরকারের ব্যয় ১০-১২ ডলার। শ্রীলংকার মতো দেশেও ৩০-৩৫ ডলার। উন্নত বিশ্বে আরো অনেক বেশি। সরকারের হয়তো সক্ষমতা নেই যে কয়েক দিনের মধ্যে তা ৩৫ ডলার করা। তবে যে ব্যয় সরকারের রয়েছে তাও যথাযথভাবে হলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।

বর্তমানে পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি বেশ আলোচনায় রয়েছে। মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে কী ধরনের পদক্ষেপ প্রয়োজন?

মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে, তবে তা পর্যাপ্ত নয়। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে যুক্ত করে কাজ করতে হবে। বিশ্বব্যাংক বিষয়ে অর্থায়নও করতে চেয়েছিল। সারা দেশকে বড় ৬০ বা তারও বেশি জোন করে ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা উচিত। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা ফি দিয়ে থাকি। ধরুন ওইসব জোন করতে হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। তবে ছয় বছর পর কিন্তু তা ফেরত পাওয়া যাবে। কার্যক্রম শুরু করার জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি একটি পরিকল্পনা করা উচিত। এই সময় পর তা দীর্ঘমেয়াদি উপকারে আসবে। এগুলো আমাদের হাতের নাগালেই রয়েছে। খুব ছোট ছোট কাজ, তবে আমাদের অনেক বড় বড় বিপদ থেকে রক্ষা করবে। বিভিন্ন ক্লিনিক হাসপাতালে ব্যবহূত সিরিঞ্জ অন্যান্য চিকিৎসা বর্জ্য ট্রাকে এনে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দিচ্ছে। এসব আবার পানিতে মিশে যাচ্ছে। কুকুরে নিচ্ছে। বন্যায় ভেসে যাচ্ছে। এতে অনেক রোগের জন্ম হচ্ছে। এগুলো বড় ধরনের অপরাধ। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে এনে এই কাজ দিয়ে দেয়া উচিত। এটা একটি সামাজিক ব্যবসা। পাঁচ-সাত বছর পর বলা যাবে বাংলাদেশ মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে পৃথিবীর যেকোনো দেশের চেয়ে ভালো।

দেশের প্রথম, দ্বিতীয় তৃতীয় সারির বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বশীলতা জবাবদিহিতা সমান নয়। এখানে সংকট কোথায়?

সুনাম, অঙ্গীকার ইত্যাদি সব প্রতিষ্ঠানের সমান নয়। আমাদের দেশে এমনিতেই আস্থার সংকট। স্বাস্থ্য খাতে যাদের বড় বিনিয়োগ রয়েছে তাদের প্রতি মানুষের আস্থার সংকট আরো তৈরি হলে বিনিয়োগ ফেরত পাওয়া কঠিন। এসব বিনিয়োগের বেশির ভাগই ব্যাংকঋণে করা। দ্বিতীয়ত, সামাজিক দায়বদ্ধতা বড় বিনিয়োগকারীদের বেশি। কেননা তাদের বিভিন্ন মহলের মুখোমুখি হতে হয়। ভালো সেবা না দিলে মানুষ অভিযোগ করে। বড় বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে সামাজিক জবাবদিহিতা অনেক বেশি। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে খুব পরিশীলিত লোকজন আসেনি। এসব মানুষকে শুদ্ধাচারের মধ্যে আনা, তাদের আরো জনবান্ধব করা, জবাবদিহিতা আরো বাড়ানো, এসবও কিন্তু এনজিও বা সরকারের কাজ। এগুলো যখন একসঙ্গে করা যাবে, অ্যাক্রেডিটেশন করা যাবে, তখন সবার মধ্যেই জবাবদিহিতা দায়িত্বশীলতা ফিরে আসবে।

এবারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কমেছে। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

বৈদেশিক মুদ্রা, রিজার্ভ, বড় বড় প্রকল্পের মতো কার্যক্রমে সরকার এখন অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন, বিশ্বব্যাংকের যে ঋণ তা বিভিন্ন বড় প্রকল্পে বেশি চলে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ আরো কম হলে নিশ্চয়ই সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরো বাড়বে।

বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবায় বিনিয়োগে আগ্রহী করে তোলার জন্য চিকিৎসা সরঞ্জাম রোগ নির্ণয়ের যাবতীয় উপাদান আমদানির ক্ষেত্রে বাজেটে কী নীতি থাকা উচিত?

অন্যান্য শিল্পে যেমন কর বা শুল্ক রয়েছে, চিকিৎসার বিষয়ে তা বেশি। রিএজেন্ট, মূল যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশে অনেক কর দিতে হয়। কিছু কিছু আছে যাতে ১০০ শতাংশের বেশি কর দিতে হয়। এসব ক্ষেত্রে যদি কর শতাংশ করা যায়, তাহলে বিনিয়োগকারীরা আরো আসবে। চিকিৎসায় বিনিয়োগ কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবায় বড় বিনিয়োগকারী তেমন একটা আসছে না। গত ১০ বছরে যারা বিনিয়োগ করেছে তার বেশির ভাগই বিভিন্ন খাতে হয়েছে। অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ অনেক নিরাপদ থাকে। রফতানির ক্ষেত্রেও প্রণোদনার একটা ব্যবস্থা রয়েছে। এসব বিষয় চিন্তা করার সময় এসেছে। সম্প্রতি ৩০-৪০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে সরকার করোনার টিকা দিয়েছে। এটা ভালো কাজ হয়েছে। আগামীতে যদি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে যুক্ত করে টিকা উৎপাদনের কাজ করে তাহলে নতুন ভালো উদ্যোক্তা পাওয়া যাবে।

দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারি খাতে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন। গত কয়েক দশকের বাজেটে কী কী নীতি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবাকে এগিয়ে নিয়েছে?

একসময় রোগীর বিলের ওপর ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত ছিল। এখন সেই ভ্যাট উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। আগে ক্যাপিটাল মেশিনারিজের কর ৩৫-৫০ শতাংশও ছিল। সরকার স্বাস্থ্য খাতের জন্য অনেক পদক্ষেপই নিয়েছে তা অস্বীকার করার কিছু নেই। তবে এখন সময় এসেছে সব শতাংশ করে দেয়া।

 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন