ফ্রাঁসোয়াজ জিলো

পিকাসোকে চ্যালেঞ্জ করা একমাত্র নারী

আন্দালিব রাশদী

পিকাসোর নারীদের মধ্যে একমাত্র ফ্রাঁসোয়াজ জিলো এখনো জীবিত আছেন ছবি: রবার্ট ক্যাপা/ আইসিএফ

৫০ বছর আগে ৮ এপ্রিল ১৯৭৩ বিশ শতকের সেরা চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসো প্রয়াত হয়েছেন। তার মৃত্যুর ২০ বছর আগে দুই সন্তান নিয়ে ১০ বছরের সংসারজীবন শেষে পিকাসোকে তাচ্ছিল্য করে প্রবল ক্রোধ নিয়ে ১৯৫৩ সালে সংসার ছেড়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ফ্রাঁসোয়াজ জিলো। ২৬ নভেম্বর ২০২১ ফ্রাঁসোয়াজ জিলো জীবনের শতবর্ষ পার করেছেন। এখন ১০২ বছর পূর্ণ করতে চলেছেন। 

ফ্রাঁসোয়াজ জিলো বলেছেন, ‘আমিই একমাত্র নারী যে পিকাসোকে পরিত্যাগ করে এসেছি। আমিই একমাত্র নারী যে এই ঐশ্বরিক দানবের কাছে নিজেকে বলিদান করিনি। আমিই একমাত্র নারী যে তার কাহিনী বলার জন্য এখনো বেঁচে আছি।’ পিকাসো মানব না দানব—এ বিতর্কও তিনি উসকে দিয়েছেন।

৮ এপ্রিল ১৯৭৩ ভোর ৩টা পর্যন্ত ৯১ বছর বয়সী পিকাসো ছবি এঁকেছেন। তারপর ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে বিছানা থেকে নামতে কষ্ট হচ্ছিল। তিনি শেষ স্ত্রী জ্যাকুলিনকে নাম ধরে ডাকেন। ১০ মিনিট পর তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর কারণ বড়মাপের হার্ট অ্যাটাক। নিজেকে নিয়ে আঁকা সর্বশেষ সেলফ পোর্ট্রেট শেষ করেন ৩০ জুন ১৯৭২। সে পোর্ট্রেটের নাম ‘সেলফ পোর্ট্রেট ফেইসিং ডেথ’ মৃত্যুর মুখোমুখি আত্মপ্রতিকৃতি। কাগজের ওপর ক্রেয়নে আঁকা এ পোর্ট্রেট পিকাসো তার নিজের মুখের ওপর স্থাপন করে তার বন্ধু পিয়েরে দাইকে দেখিয়েছেন। তার মনে হয়েছে, এখানে ভীতির অভিব্যক্তি, আসলে পিকাসোর একটি কৌশল। তিন মাস পর পিয়েরে আবার যখন পিকাসোর কাছে যান, দেখতে পেলেন ছবির রূঢ় দাগগুলো আরো গভীর হয়ে আছে। তিনি অপলক তাকিয়ে আছেন। তার মনে হয়েছে পিকাসো সরাসরি নিজের মৃত্যুর দিকে তাকিয়ে আছেন।

পিকাসোর স্ত্রী কিংবা মিসট্রেস

ফার্নান্দে অলিভিয়ে: পিকাসো যখন তার শিল্পীজীবনের নীল অধ্যায় অতিক্রম করছেন, লালের আভা উঁকি দিতে শুরু করেছে, এমন সময় ৪ আগস্ট ১৯০৪ অপ্রত্যাশিত ঝড়ঝঞ্ঝার মধ্যে আরো অপ্রত্যাশিতভাবে আবির্ভূত হন পিকাসোর চেয়ে চার মাসের বড় বৃষ্টিভেজা ফার্নান্দে অলিভিয়ে। তিনি তখন অন্য শিল্পীদের মডেল হিসেবে কাজ করতেন। পিকাসো তাকে বেঁধে ফেললেন প্রণয়ের বন্ধনে। ১৯০৪ থেকে ১৯১২—সাত বছরেরও বেশি সময় তিনি শিল্পীর সঙ্গে ছিলেন, মিসট্রেস হিসেবেই। সে সময় পিকাসো তাকে অন্য কারো মডেল হতে নিরস্ত করেছেন। তাকে নিয়ে আঁকা পিকাসোর ভাস্কর্য: নারীর মাথা (১৯০৯)।

ইভা গুয়েল: ফার্নান্দে অলিভিয়ে ১৯১২ সালে পিকাসোকে ছেড়ে যান। সে সময় তার জীবনে আসেন ২৭ বছর বয়সী মার্সেল হামবার্ট কিংবা ইভা গুয়েল। পিকাসোর তখন ৩১ বছর বয়স। ১৯১৫ সালে যক্ষ্মা কিংবা ক্যান্সারে তার মৃত্যু হয়। পিকাসো ব্যথিত হয়ে ভেঙে পড়েছিলেন। ইভাকে নিয়ে ‘আই লাভ ইভা’ নামে কয়েকটি ছবিও এঁকেছেন। ১৯১৩-তে আঁকা ‘ওমেন ইন আর্মচেয়ার’ ইভাকে নিয়ে আঁকা অন্যতম শ্রেষ্ঠ তেলচিত্র।

ওলগা খোকলোভা: ব্যালে নৃত্যশিল্পী ওলগার সঙ্গে পিকাসোর দেখা রোমে। শিল্পী তখন ব্যালে নৃত্যনাট্য ‘প্যারেডে’র ডিজাইন করছিলেন। প্যারিসের এক রুশ অর্থোডক্স চার্চে ১৯১৮-তে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের সাক্ষী ছিলেন জ্যঁ ককতো। বিয়েটা সুখের হয়নি। দুজন ভিন্ন মেজাজের শিল্পীর দ্বন্দ্ব লেগেই ছিল।

তাকে নিয়ে আঁকা পিকাসোর ছবির মধ্যে রয়েছে: হাতলওয়ালা চেয়ারে ওলগা (১৯১৩) 

ম্যারি-থেরেস ওয়াল্টার: ওলগার সঙ্গে বিবাহিত থাকা অবস্থায় ১৯২৭ সালে ৪৬ বছর বয়সী পিকাসোর সঙ্গে ১৭ বছর বয়সী ম্যারির দেখা। ১৯২৭ থেকে ১৯৩৬—প্রায় ১০ বছর পিকাসোর মিসট্রেস ও মিউজ। তাকে নিয়ে পিকাসোর হাতে উঠে এসেছে কিছু অসাধারণ স্নিগ্ধ ছবি। ‘স্বপ্ন’ ও ‘ঘুমন্ত’ এ রকম দুটি ছবি।

ডোরা মার: যুগোস্লাভিয়ান ফটোগ্রাফার ডোরা মারকে পিকাসোর বাম রাজনীতির প্রতি আসক্তি ও প্রতিবাদী চিত্রের প্রেরণা বলে মনে করা হয়। ১৯৩৬ সালে পিকাসো ৫৪, ডোরা ২৯; ডোরা স্প্যানিশ গণযুদ্ধের ভয়াবহতা নিয়ে আঁকা গুয়ের্নিকার হয়ে ওঠার বিভিন্ন পর্বের চিত্র ধারণ করেন। মিসট্রেস হিসেবে পিকাসোর সঙ্গে কাটিয়ে দেন ১৯৩৬ থেকে ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত আট বছর। শিল্পী তাকে নিয়ে আঁকেন তার ‘ক্রন্দসী’ সিরিজের বহু ছবি। বঞ্চিত ডোরার জীবনে পিকাসো অধ্যায় শেষ হলে নিজে ছবি আঁকতে শুরু করেন, প্যারিসে প্রদর্শনীও করেছেন। নিঃসঙ্গ, জনবিচ্ছিন্ন ও দরিদ্র অবস্থায় তার শেষ দিনগুলো কাটে। ডোরাকে নিয়ে পিকাসোর সবচেয়ে আলোচিত ছবি ‘দ্য উইপিং ওমেন’—ক্রন্দসী নারী।

ফ্রাঁসোয়াজ জিলো: ১৯৪৩ সালে পিকাসোর ৬২ বছর আর চিত্রকলার শিক্ষার্থী ফ্রাঁসোয়াজ জিলোর মাত্র ২২ বছর; অবস্থাপন্ন পরিবারের ফ্রাঁসোয়াজকেও রক্ষিতার জীবনই যাপন করতে হয়েছে; ক্লদ ও পালোমা, এক পুত্র ও এক কন্যার জননী হয়েছেন। তিনি প্রতিবাদী ছিলেন এবং তার ভাষায়, ‘অন্য নারীদের মতো নিজেকে পিকাসোর কাছে বিকিয়ে দেননি। তিনিই পিকাসোকে ত্যাগ করেছেন। তাকে নিয়ে আঁকা ছবির মধ্যে রয়েছে ওমেন ফ্লাওয়ার।

জেনভিয়েভ লোপার্ত: ১৯৪৪ সালে ১৭ বছর বয়সী এ তরুণী স্কুলের সংবাদপত্রের জন্য পিকাসোর সাক্ষাৎকার নিতে গিয়েছিলেন। ১৯৫১ সালে পিকাসোর বয়স ৭০ বছর। জেনভিয়েভ তাকে দেখতে তার স্টুডিওতে আসেন। গ্রীষ্মে তাকে নিয়ে চলে যান সেন্ট ত্রোপেজ। তাকে নিয়ে সেখানেই থাকতে চান। কিন্তু এ তরুণী যেতে অসম্মতি জানান। ১৯৫৩ সালে তাকে ছেড়ে যান। একই সময়ে ফ্রাঁসোয়াজও পিকাসোকে পরিত্যাগ করেন।  তাকে নিয়ে পিকাসোর ছবি: জেনভিয়েভের পোর্ট্রেট (১৯৫১)। 

জ্যাকুলিন রোক: মৃৎশিল্প প্রদর্শনী ও বেচাকেনার দোকানের সেলসগার্ল জ্যাকুলিনের সঙ্গে ১৯৫৩ সালে পিকাসোর প্রণয় পর্ব যখন শুরু হয় তখন তার বয়স ২৯ বছর। তিনি জ্যাকুলিনকে বিয়ে করেন। পিকাসো তাকে নিয়েই সবচেয়ে বেশি ছবি এঁকেছেন। কেবল পোর্ট্রেটের সংখ্যা ৭০ ছাড়িয়েছে। তিনি পিকাসোকে তার মিসট্রেস ও তাদের গর্ভজাত সন্তানদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিলেন। তাকে নিয়ে পিকাসোর একটি বিখ্যাত ছবি জ্যাকুলিন উইথ ফ্লাওয়ার্স। 

পিকাসোর মৃত্যুর পর পুরো ৫০ বছর পেরিয়ে গেছে। তার সঙ্গে সম্পর্কিত নারীদের মধ্যে একমাত্র প্রতিবাদী ফ্রাঁসোয়াজ জিলোই এখনো জীবিত আছেন।

ফ্রাঁসোয়াজ জিলোর জন্ম ২৬ নভেম্বর ১৯২১ সালে সচ্ছল এক ফরাসি পরিবারে। বাবা ব্যবসায়ী ও কৃষিতত্ত্ববিদ আর মা জলরঙশিল্পী। তিনি লিখতে শুরু করেন বাম হাতে, কিন্তু বাবা তাকে লিখতে বাধ্য করেন ডান হাতে। তিনি দুই হাতেই সমানে লিখে যেতে পারেন। পাঁচ বছর বয়সেই ঠিক করলেন চিত্রশিল্পী হবেন। কিন্তু বাবা চাইলেন মেয়েকে তার মতো উচ্চশিক্ষিত করতে, তাকে হতে হবে বৈজ্ঞানিক কিংবা আইনজীবী। তিনি আইন অধ্যয়ন শুরু করলেন, কিন্তু সুযোগ পেলে ক্লাস ফেলে চলে যান কোনো না কোনো মিউজিয়ামে।

দিনভর বিখ্যাত সব শিল্পীর আঁকা ছবি দেখেন, ফিরে এসে যত আইন পড়েন তার চেয়ে বেশি পড়েন সাহিত্য। এডগার অ্যালেন পো,  শার্ল বোদলেয়র। ১৯ বছর বয়সে শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন এগিয়ে নিতে আইন অধ্যয়ন চিরদিনের মতো ছেড়ে দেন।

১৯৪৩ সাল। প্যারিস তখন জার্মানির দখলে। পিকাসোর সঙ্গে দেখা। পিকাসো তখন ৬১ আর এই ছবিপাগল তরুণী ২১। ১৯৪৩-৫৩ প্রায় ১০ বছর ফ্রাঁসোয়াজ জিলো পিকাসোর মিসট্রেস ও প্রেরণাদাত্রী ছিলেন; বৈধতার সংকট মেনে নিয়েই তিনি শিল্পীর এক কন্যা ও এক পুত্রের জননী হয়েছেন। ২০১১-তে ৯০ বছর বয়সে জেনেট হাউলের কাছে অনেক বছর পর তিনি মুখ খোলেন তার নিউইয়র্কের অ্যাপার্টমেন্টে। তিনি নিজ মেধা ও শৈলীতে একজন উল্লেখযোগ্য চিত্রশিল্পী এবং পিকাসোকে নিয়ে লেখা বেস্ট সেলার একটি গ্রন্থের রচয়িতা।

ফ্রাঁসোয়াজ জিলো বলেছেন, আমিই একমাত্র নারী যে পিকাসোকে পরিত্যাগ করে এসেছি। ...অন্যদের কী হয়েছে দেখো—ম্যারি-থেরেস ওয়াল্টার আর জ্যাকুলিন রোক আত্মহত্যা করেছে। প্রথমজন ফাঁসিতে ঝুলেছে, দ্বিতীয়জন নিজেকে গুলি করেছে। ওলগা খোকলোভা হিস্টিরিয়াগ্রস্ত হয়েছে আর ডোরা মার তো বদ্ধ উন্মাদ। মনমোহিনী ফ্রাঁসোয়াজ জিলো যখন ২৪, তাকে নিয়ে পিকাসোর আঁকা বহু ছবি তাকে অমরত্ব দিয়েছে। ‘পাবলো আমার সঙ্গে অনবদ্য এক মানুষ তার সঙ্গ আতশবাজির সঙ্গে থাকার মতো। পাবলো বিস্ময়কর ধরনের সৃজনশীল, মেধাদীপ্ত ও জাদুকরী ব্যক্তিত্বের মানুষ। তার মন যখন মোহিত করতে চায়, এমনকি পাথরও তার সুরে নাচতে চাইবে। কিন্তু পাবলো একই সঙ্গে অন্যের প্রতি নির্মম, মর্ষকামী ও নির্দয়, কখনো নিজের প্রতিও। পাবলো চাইত সবকিছুই তার ইচ্ছে অনুযায়ী হবে, নারীকে থাকতে হবে তার সেবায়। সে নারীর জন্য নয়। পাবলো ভাবত সে ঈশ্বর। কিন্তু সে তো ঈশ্বর নয়। এটা তাকে বিচলিত করত। পাবলো আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রেম, কিন্তু (তার মতো ঐশ্বরিক দানবের সঙ্গে থেকে) নিজেকে রক্ষা করার পদক্ষেপও তো নিতে হবে। আমি নিয়েছি। ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আগে আমি বেরিয়ে এসেছি। অন্যরা পারেনি। তারা প্রবল শক্তিশালী মিনোটার (গ্রিক উপকথার অর্ধেক মানব, অর্ধেক ষাঁড়) আঁকড়ে থেকেছে এবং সেজন্য চরম মূল্য দিয়েছে।’

১৯৫৩ সালে ফ্রাঁসোয়াজ যখন দুই সন্তান ক্লদ (১৯৪৭) ও পালোমাকে (১৯৪৯) নিয়ে পিকাসোকে চিরদিনের মতো ছেড়ে যান, পিকাসো তাকে সতর্ক করে দিয়েছেন, ‘আমার মতো মানুষকে কেউ এভাবে ছেড়ে যায় না।’ তার কথায় প্রচ্ছন্ন ছিল: এর পরিণতি ভালো হবে না। শেষ পর্যন্ত ফ্রাঁসোয়াজ ও তার সন্তানদেরও অনেক মূল্য দিতে হয়েছে।

১৯৬৪ সালে প্রকাশিত হলো ফ্রাঁসোয়াজ জিলোর বই ‘লাইফ উইথ পিকাসো’। নিরন্তর সৃজনশীল শিল্পীকে তিনি যেমন এঁকেছেন, তেমনি সামনে নিয়ে এসেছেন তার যৌন লালসা। স্ত্রী, মিসট্রেস/প্রেরণাদাত্রী/মডেলের সঙ্গে সম্পর্ক, তাদের নিজ প্রয়োজনে ব্যবহার এবং দরজার পাপোশ হিসেবে তাদের ছুড়ে ফেলার কাহিনী। তার ভেতরের আগ্নেয়গিরির উষ্ণতা ও শক্তি, নিত্যকার নারীসঙ্গ, আঁধার অলিগলির ওপর তিনি আলোকসম্পাত করেছেন।

ক্ষুব্ধ পিকাসো তার এই সাবেক মিসট্রেসের সঙ্গে তো বটেই, দুই সন্তানের সঙ্গেও যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। ১৯৭৩-এ ৯১ বছর বয়সে মৃত্যু পর্যন্ত পিকাসো তার জীবনের ফ্রাঁসোয়াজ অধ্যায়টির দিকে আর ফিরে তাকাননি।

ফ্রাঁসোয়াজ জিলো বলেন, ‘পিকাসো আমার অতীত জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। কিন্তু আমি তো অতীত নিয়ে জীবনধারণ করি না। আমার নিজের শিল্পকর্ম রয়েছে, আমি প্রতিদিনই ছবি আঁকি। আমি যা লিখেছি বা বলেছি তা তো লেখা বা বলা হয়ে গেছে। এসব নিয়ে আবার কথা বলে আমি সময় নষ্ট করতে চাই না।’

জেনেট দেখলেন, তার বাড়িভর্তি  বই ও ছবি। কিন্তু পিকাসো নেই। ‘আমার কাছে পিকাসোর একটি ছবিই ছিল Le Femme-Fleur, কিন্তু কয় বছর আগে এটি বেচে দিয়েছি। আমার মনে হয়েছে এই ছবি আমার জন্য দুর্ভাগ্য ডেকে আনছে। আমি পিকাসোর আর কোনো ছবি কখনো নিতে চাইনি। তাহলে পিকাসোর বলার সুযোগ হতো তুমিও তো আমার অন্য নারীদের মতোই; আমি কিছুই নিইনি। আমি স্বাধীন থাকতে চেয়েছি। তাছাড়া এটা তো আমার জানাই, পিকাসোর কাছ থেকে কিছু নিলে তার কাছে ঋণী হয়ে যাব, আর সেজন্য আমাকেও মূল্য দিতে হবে। সে চেয়েছে তার আর সব নারীর মতো নিজেকে বিছিয়ে দিই, কিন্তু আমি কখনো তা করিনি। আমি পিকাসোর শিল্পীজীবনের ‘জিলো অধ্যায়’ হিসেবে পরিচিত হতে চাইনি ফার্নান্দে/ইভা/ওলগা/ম্যারি-থেরেস/ডোরা মার অধ্যায়ের মতো। সম্ভোগ ও অঙ্কনের জন্য পিকাসো কেমন করে একজনের পর একজন নারীকে হত্যা করেছে তা আমার জানা।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন