
চাপের মুখে পড়তে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ভুট্টা রফতানি। চীন চলতি সপ্তাহে কয়েক কার্গো ভুট্টার ক্রয়াদেশ বাতিল করে দেয়ায় এমন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে অন্যতম শীর্ষ রফতানিকারক দেশ ব্রাজিলের সঙ্গেও বাড়ছে দেশটির রফতানি প্রতিযোগিতা।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বছরের এ সময় যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি ভুট্টা রফতানি করে। দেশটি থেকে সর্বাধিক ভুট্টা আমদানি করে চীন। চলতি সপ্তাহে কয়েক কার্গো ভুট্টার আমদানি ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে চীনের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো। বিষয়টি মার্কিন রফতানিকারকদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব পণ্যের জন্য নতুন ক্রেতা খোঁজার চাপে পড়েছে তারা।
এদিকে ব্রাজিলে বছরের মাঝামাঝি সময়ে বিপুল পরিমাণ ভুট্টা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে রফতানি বাজারে প্রতিযোগিতা আরো বাড়বে। আর এর অর্থ হলো বাজার হিস্যা ধরে রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের রফতানিকারকদের জোর প্রয়াস চালাতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভুট্টা রফতানি এরই মধ্যে কমে গেছে। যার পেছনে দুটি বিষয়কে প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিশ্লেষকরা। প্রথমত, রফতানিযোগ্য ভুট্টার সরবরাহ কম। দ্বিতীয়ত, প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের ভুট্টার দাম বেশি।
ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে চীন ছাড়া অন্যান্য দেশেও যুক্তরাষ্ট্রের ভুট্টার চাহিদা কমেছে। এর অর্থ হলো মার্কিন রফতানিকারকরা বর্তমানে ক্রেতা খুঁজে পেতে হিমশিম খাচ্ছেন, যা এ খাতকে অতিরিক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। চীনের বাইরে অন্য ক্রেতা দেশগুলোর ক্রয়াদেশ কমে দুই দশকের সর্বনিম্নে নেমেছে।
মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২২-২৩ মৌসুমে যুক্তরাষ্ট্রের ভুট্টা রফতানি ৪ কোটি ৭০ লাখ টনে (১৮৫ কোটি বুশেল) নামবে। গত বছরের তুলনায় রফতানি কমবে ২৫ শতাংশ।
আগামী আগস্টে ২০২২-২৩ মৌসুম শেষ হবে। মৌসুমের শুরু থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত রফতানি কমেছে ৩৩ শতাংশ। রফতানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৮৪ লাখ ৫০ হাজার টনে।
ইউএসডিএ চলতি সপ্তাহে দ্বিতীয়বারের মতো চীনের ক্রয়াদেশ বাতিল করার খবর নিশ্চিত করেছে। এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৫ লাখ ৬০ হাজার টন (২ কোটি ২০ লাখ বুশেল) ভুট্টার ক্রয়াদেশ বাতিল করা হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ব্রাজিলের ভুট্টা বাজারে ঢুকতে শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্রের রফতানিকারকরা আরো বিপাকে পড়বেন।
চীন ২০ এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে ৮৬ লাখ টন ভুট্টার ক্রয়াদেশ দিয়েছে। এর মধ্যে জাহাজীকরণের অপেক্ষায় আছে ৩৭ লাখ টন। গত বছর দুই দেশের মধ্যে ১ কোটি ৪০ লাখ টন ও তার আগের বছর ২ কোটি ৩০ লাখ টন ভুট্টার বাণিজ্য হয়েছিল।