ক্রীড়াবিদদের খাদ্যাভ্যাসে প্রভাব ফেলছে সামাজিক মাধ্যম

বণিক বার্তা ডেস্ক

সুস্বাস্থ্য সম্পর্কিত ভুল তথ্যগুলো প্রচার করে ইনফ্লুয়েন্সাররা ছবি: দ্য ডেইলি ইউনিভার্স

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন নিত্যদিনের অংশ। সমাজের প্রভাবশালীদের জন্য এসব মাধ্যম আরো বেশি প্রভাবক। তবে বর্তমানে এর নেতিবাচক দিক দিন দিন বাড়ছে। সম্প্রতি ডা. ক্যাথরিন ভিডলক ও ক্যাথরিন লিগেট এক গবেষণা পরিচালনা করেছেন। যেখানে দেখা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নারী ক্রীড়াবিদদের খাদ্যাভ্যাসে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। খবর টেকটাইমস।

স্প্রিং ফরোয়ার্ড: ব্যালান্সড ইটিং, এক্সারসাইজ অ্যান্ড বডি ইমেজ ইন স্পোর্টস ফর ফিমেল অ্যাথলিটস নামক বইয়ে এ বিষয়টি উঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়, বর্তমানে সব ধরনের খেলায় খাদ্যাভ্যাসের সমস্যা ও শারীরিক গঠন নিয়ে নেতিবাচকতা ব্যাপক ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে হাই স্কুলে এ সমস্যা বেশি, কিন্তু অধিকাংশই আড়ালে থাকে।

কনটেন্টে সতর্ক করে বলা হয়, ফিটনেস নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের তথ্য, ইনস্টাগ্রামে ব্যায়াম সম্পর্কিত ফিটস্পিরেশন ছবি এবং ছবি সম্পাদনার বিভিন্ন সফটওয়্যারের কারসাজি নারী ক্রীড়াবিদদের সরাসরি প্রভাবিত করছে। বিবৃতিতে বইটির লেখক জানান, অধিকাংশ সময়েই সুস্বাস্থ্য সম্পর্কিত ভুল তথ্যগুলোকেই ইনফ্লুয়েন্সাররা প্রচার করে থাকেন। যেগুলোর আসলে কোনো সত্যতা বা ভিত্তি নেই। লেখকদের মতে, এ ধরনের তথ্যের কারণে নারী ক্রীড়াবিদরা এমন এক ধরনের স্বাস্থ্য চান যা আসলে পাওয়া সম্ভব নয়। ফলে তারা খাওয়া কমিয়ে দেন এবং অপুষ্টির কারণে তাদের দেহে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

স্প্রিং ফরোয়ার্ডে একাধিক নারী ক্রীড়াবিদ তাদের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। এর মধ্যে শুধু একটি কুকি বা বিস্কুট খাওয়ার জন্য পাঁচ মাইলের বেশি দৌড়ানো, কোনো খাবার না খেয়ে জিমনেশিয়ামে বেশি সময় থাকার পর অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার বিষয়ও রয়েছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসরণকারীদের কটাক্ষের কারণে কঠোর ডায়েট করার ঘটনাও প্রকাশ্যে এসেছে।

বিশ্বে প্রচলিত বিভিন্ন ক্রীড়ায় শারীরিক গঠনের মাপকাঠি রয়েছে। এসব খেলায় অংশ নেয়ার জন্য নারীদেরও নিয়ম মানতে হয়। যেমন দৌড়বিদদের জন্য হালকা ওজন থাকা বাধ্যতামূলক। নারী ক্রীড়াবিদ যদি সেটির সঙ্গে তাল মিলাতে না পারেন তাহলে অপমানিত হতে হয়। এছাড়া বইটিতে অ্যানোরেক্সিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভলিবল খেলোয়াড়ের মৃত্যুর বিষয়টিও প্রকাশ পেয়েছে।

বইটির লেখকদের মতে, সেকেন্ডারি স্কুল থেকেই নারী ক্রীড়াবিদদের স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিতে সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের বিষয়ে অবগত করা প্রয়োজন। মূলত এর মাধ্যমে ক্রীড়া খাতে নারীদের অবস্থান আরো মজবুত হবে। বইটিতে একটি শিক্ষামূলক প্রকল্পের কথাও বলা হয়েছে। এর নাম স্প্রিং (স্ট্রেন্থ অ্যান্ড পজিটিভিটি রুটেড ইন নিউট্রিশন ফর গার্লস)। হাই স্কুলের জন্য এটি তৈরি করা হয়েছে। মূলত শারীরিক গঠন নিয়ে যে নেতিবাচক ধারণা বিদ্যমান সেটি দূর করাই এর মূল লক্ষ্য। এ প্রোগ্রামে ক্রীড়াবিদদের নিয়ে ১ ঘণ্টারও বেশি সময়ে সেশন পরিচালনা করা হয়। লেখকদের গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, স্প্রিং কলোরাডো স্কুলের চিয়ারলিডারদের মধ্যে বডি ইমেজ ফ্লেক্সিবিলিটি ২২ শতাংশ বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। লেখকরা স্কুল, কলেজ ও প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের এ প্রোগ্রামের আওতায় আনার আহ্বান জানান। এর মাধ্যমে মূলত ঝুঁকিতে থাকা নারীদের শনাক্ত করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি কিশোরী, নারী ক্রীড়াবিদ, প্রশিক্ষক ও ক্লাবের সদস্যদের অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস থেকে বের করে আনা যাবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন