পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেডের চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) আগের হিসাব বছরের একই সময়ের তুলনায় কর-পরবর্তী নিট মুনাফা কমেছে প্রায় ৭৬ শতাংশ। বিদ্যুৎ উৎপাদক এ কোম্পানির গতকাল প্রকাশিত চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে ডরিন পাওয়ারের সমন্বিত কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৩২ কোটি ৪২ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১৩৪ কোটি ৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির সমন্বিত নিট মুনাফা কমেছে ১০১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা বা ৭৫ দশমিক ৮২ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ১ টাকা ৭৯ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৭ টাকা ৩৬ পয়সা। গত ৩১ মার্চ শেষে কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪৮ টাকা ৭১ পয়সায়।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির সমন্বিত কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৫৫ কোটি ২ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩ টাকা ২ পয়সা।
সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৮ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ১২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশের সুপারিশ করেছিল ডরিন পাওয়ারের পর্ষদ। এর মধ্যে ১২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ এরই মধ্যে শেয়ারহোল্ডারদের বেনেফিশিয়ারি ওনার্সে (বিও) পাঠিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ১০ টাকা ৩১ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৭ টাকা ২৩ পয়সা। গত বছরের ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির সমন্বিত এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৫৩ টাকা ১৫ পয়সায়, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ৪৩ টাকা ২২ পয়সা।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরের জন্য ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে ডরিন পাওয়ার। এর মধ্যে সব শেয়ারহোল্ডারকে ১২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে। এছাড়া উদ্যোক্তা পরিচালক বাদে বাকি শেয়ারহোল্ডারদের ১৩ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। ২০১৯-২০ হিসাব বছরের জন্য ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল ডরিন পাওয়ার। এর মধ্যে ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির সব শেয়ারহোল্ডার। আর ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়া হয়েছিল উদ্যোক্তা পরিচালক বাদে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের। ওই হিসাব বছরে কোম্পানিটির সাধারণ বিনিয়োগকারীরা মোট ৪ কোটি ৩৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন।
সর্বশেষ ক্রেডিট রেটিং অনুসারে, ডরিন পাওয়ারের ঋণমান দীর্ঘমেয়াদে ‘ডাবল এ’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-টু’। ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন ও রেটিং প্রকাশের দিন পর্যন্ত কোম্পানিটির অন্যান্য গুণগত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রত্যয়ন করেছে ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেট লিমিটেড (সিআরআইএসএল)।
২০০৮ সালের নভেম্বরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে ডরিন পাওয়ার জেনারেশন্স অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেডের যাত্রা হয়। ২০১০ সালে ৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন নর্দার্ন ও সাউদার্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র দুটির বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়। ডরিন পাওয়ার ২০১৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ১৮১ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা।