বেসরকারি উদ্যোক্তারা অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি ও বিনিয়োগ আকর্ষণে সফল

বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে আটটি এখন পর্যন্ত উৎপাদনে গেছে। এর মধ্যে বলতে গেলে সবার আগে আসবে মেঘনা গ্রুপের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো। গ্রুপের অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বড় যে কারখানাটি হয়েছে সেখানে সাড়ে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এটি পিভিসির কারখানা। এটি একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। জাপানের অনেক বড় কোম্পানি হোন্ডাও বিনিয়োগ করেছে আব্দুল মোনেম ইকোনমিক জোনে। আবার সিটি গ্রুপের যে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠেছে, সেখানেও অনেক কারখানা স্থাপন হয়েছে, সেখানেও বাইরের বিনিয়োগকারী রয়েছেন। আমি মনে করি, বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল যে লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছিল সেটি সফল

শেখ ইউসুফ হারুন

নির্বাহী চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)

১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ কতদূর এগিয়েছে?

আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এর মধ্যে ৯৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় গভর্নিং বডির অনুমোদন পেয়েছি। -যাবৎকালে যতটুকু জায়গা সংগ্রহ করেছি তার পরিমাণ প্রায় ৬২ হাজার একর। বর্তমানে ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল উৎপাদনে রয়েছে। আরো ২৯টি অঞ্চল নিয়ে কাজ করছি। তবে অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন সময়ের ব্যাপার। অর্থেরও অনেক বেশি প্রয়োজন। ধীরে ধীরে আমরা কাজটি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য, ২০৪১ সালে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান এবং ৪০ বিলিয়ন ডলারের সেবা পণ্য উৎপাদন করব।

সরকারি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের তুলনামূলক অগ্রগতি মূল্যায়ন জানতে চাই।

আমি বেজায় যোগদান করার পর আমাদের সবচেয়ে বড় যে অর্থনৈতিক অঞ্চল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরী, সেখানে চারটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উৎপাদন এগিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সেগুলো উদ্বোধন করেছেন। একই সঙ্গে শ্রীহট্ট ইকোনমিক জোন, সেখানেও একটা প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে গেছে। তারপর জিটুজি পদ্ধতিতে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানের যে অর্থনৈতিক অঞ্চলটি হচ্ছে, সেখানে ডেভেলপার সুমিতোমো করপোরেশনকে আমরা জায়গা দিয়েছি। প্রথম ফেজের কাজ মোটামুটি শেষ। দ্বিতীয় ফেজের কাজ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে চারটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। তারা সেখানে তাদের কারখানা তৈরির কাজ করছে। আমরা আশা করছি, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আরো সাত-আটটি জাপানি কোম্পানির সঙ্গে আমরা চুক্তিবদ্ধ হতে পারব এবং কাজটি আমরা এগিয়ে নিতে পারব। এটি ছাড়াও আমাদের যে সাবরাং ট্যুরিজম জোন, সেখানে মাটি ভরাটের কাজ শেষ। আমরা এখানে প্রায় ১৭টি প্রতিষ্ঠানকে জায়গা দিয়েছি, তারাও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করতে পারবে বলে আশা করছি।

বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের সামগ্রিক অগ্রগতি সাফল্য সম্পর্কে আপনার মতামত কী?

বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে আটটি এখন পর্যন্ত উৎপাদনে গেছে। এর মধ্যে বলতে গেলে সবার আগে আসবে মেঘনা গ্রুপের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো। গ্রুপের অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বড় যে কারখানাটি হয়েছে সেখানে সাড়ে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে, এটি পিভিসির কারখানা। এটি একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। মেঘনার অর্থনৈতিক অঞ্চলে অনেক বড় বিদেশী কোম্পানিও কারখানা স্থাপন করেছে। জাপানের অনেক বড় কোম্পানি হোন্ডাও বিনিয়োগ করেছে একটি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে, সেটি হলো আব্দুল মোনেম ইকোনমিক জোন। আবার সিটি গ্রুপের যে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠেছে, সেখানেও অনেক কারখানা স্থাপন হয়েছে, সেখানেও বাইরের বিনিয়োগকারী রয়েছেন। আমি মনে করি, বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল যে লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছিল সেটি সফল। বেসরকারি উদ্যোক্তারা খুব চমৎকারভাবে তাদের ইকোনমিক জোন তৈরি এবং বিনিয়োগ আকর্ষণে যে প্রচেষ্টাগুলো নিয়েছেন, তাতে সফলও হয়েছে।

আপনি কি মনে করেন যে বেসরকারিগুলো সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর চেয়ে এগিয়ে রয়েছে?

বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো আকারে অনেক ছোট। সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল অনেক বড়। যদি শুধু বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরীর কথা বলি সেখানে সাড়ে ৩৩ হাজার একর জমি। এটি যদি একবারে উন্নয়ন করতে চাই, সেটি সম্ভব নয়। বাইটার্ন আমরা এগুলো করছি। আর বেসরকারিগুলো ছোট জায়গায় খুব তাড়াতাড়ি কাজ করা, তাদের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া, অর্থায়নের ক্ষেত্রে তারা এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। সব মিলিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রক্রিয়া সহজ। সরকারিগুলোর ক্ষেত্রে আমাদের তহবিল সংগ্রহ করতে হয়, নিয়ম-কানুন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা মেনে তারপর কাজ করতে হয়; এজন্য সময় কিছুটা বেশি লাগতে পারে। আমি মনে করি বিশালত্ব, কাজের ভলিউম বিবেচনায় আমরা পিছিয়ে নেই। বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে অনেক ক্রাইটেরিয়ার পরিপালন করতে হয়, যেমন তাদের জায়গা সংগ্রহ করতে হয়। বাংলাদেশে জমি সংগ্রহ একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। জায়গা পাওয়ার পর পরিবেশের ছাড়পত্র পাওয়া, বাঁধ তৈরি, মাটি ভরাট সব মিলিয়ে অনেক কাজ। একটি বেসরকারি জোনে কাজগুলো করতে যে পরিমাণ বিনিয়োগ সংগ্রহ করতে হয়, সেটির পরিমাণও কিন্তু অনেক। ইচ্ছা করলে তারা পারবে না এমন না। আইনে কোনো বাধা নেই। তারা যদি বড় আকারের অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে চায় আমাদের আইনি যে সহায়তা রয়েছে সেগুলো আমরা দিতে পারব। এক্ষেত্রে আমাদের দিক থেকে কোনো অসুবিধা নেই।

বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরী নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। এর কারণ কী?

এর অন্যতম কারণ হলো যে জায়গা আমরা নির্বাচন করেছি, সেই জায়গার ব্যয় অন্যান্য ইকোনমিক জোনের চেয়ে অনেক কম। তারপর এখানে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির ইউটিলিটি সুবিধা রয়েছে, আমরা সেখানে সাপোর্টগুলো দিচ্ছি। আমরা জোনটিকে পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এটিই আমাদের উদ্দেশ্য। যারা ক্রেতা তারা প্রতি মুহূর্তে আগ্রহ প্রকাশ করে জিজ্ঞাসা করছে এই জোনটি কেমন? পরিবেশবান্ধব কিনা। এখানে অত্যাধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থাকবে। এখানে যে সিইটিপি করব, সেটি উন্নত এবং বিশ্বমানের। এখানে রয়েছে সড়ক, আকাশ, সমুদ্রপথের মাল্টিমোড যোগাযোগ ব্যবস্থা। এগুলো সব আমরা তৈরি করছি এবং এগুলো কাজ চলছে। অর্থনৈতিক অঞ্চলটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে একেবারেই কাছে। সবকিছু মিলিয়ে আমি মনে করি বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরী একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব।

বেজার ওএসএস নিয়ে ব্যবসায়ীদের প্রতিক্রিয়া কেমন?

আমাদের ওএসএসটি আন্তর্জাতিক মানের, জাইকার সহযোগিতা নিয়ে আমরা এটি করেছি। এখানে আমাদের সার্ভিস আছে ১২৫টি। আজকে পর্যন্ত ৫০টি সার্ভিস আমরা অনলাইনে দিতে পেরেছি। বাকি অনেক সার্ভিস যে রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে অনেকগুলো বেজার হাতে নেই, অন্য অনেক যে সমস্ত বিভাগ রয়েছে, তাদের ওপর আমাদের নির্ভর করতে হয়। ওএসএস আইন যেটি তৈরি হয়েছে, সে অনুযায়ী প্রতিটি বিভাগের প্রতিনিধি একটি ছাদের নিচে বসে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটিই আদর্শ। এখানে যে প্রতিনিধিরা আসেন, অনেক ক্ষেত্রে তারা হয়তো অনেক সময় সিদ্ধান্ত সরাসরি নিতে পারেন না। তাদের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে সময় বেশি লাগছে এমন ঘটনা রয়েছে, আমরা চেষ্টা করছি সময় কমিয়ে আনার। আমাদের ওএসএস সেন্টার সম্পর্কে বলতে পারি, এটি নিয়ে আমাদের বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের অভিযোগ নেই। তারা স্বাচ্ছন্দ্যে, কম সময়ের মধ্যে আমাদের ওএসএস থেকে যে সুবিধাগুলো পাওয়ার কথা, সে সুবিধাগুলো তারা পাচ্ছে।

বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে বেজার উদ্যোগগুলো সম্পর্কে বলুন।

বিদেশী বিনিয়োগের জন্য সুবিধার মধ্যে আছে কম মূল্যে জমি প্রাপ্তির সুুবিধা। ফিসকল এবং নন-ফিসকল ইনসেনটিভ দিচ্ছি। ফিসকল ইনসেনটিভের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো তিন বছর পর্যন্ত করপোরেট ট্যাক্স ফ্রি। চতুর্থ বছর থেকে একটু একটু করে দশম বছর পর্যন্ত তারা সুবিধা পাচ্ছে। ইউটিলিটি যেগুলো আছে সেগুলো ভ্যাট ফ্রি। আরো অনেক ধরনের ফিসকল ইনসেনটিভ তাদের আমরা দিচ্ছি। নন-ফিসকলের মধ্যে বিজনেস প্রসেস সিমপ্লিফিকেশন, তাড়াতাড়ি যেনো কাস্টমস থেকে মালপত্র ছাড়াতে পারে, এটি আমরা সবসময় তদারক করছি। কাঁচামাল যেটা আমদানি হচ্ছে সেটা ট্যাক্স ফ্রি। আমরা বন্ডের সুবিধা দিচ্ছি। সবচেয়ে বড় বিষয়টি হলো একটা জোনে যদি বিদেশী বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করতে চান তার দোরগোড়ায় আমরা ইউটিলিটি সুবিধা পৌঁছে দিচ্ছি।

বিনিয়োগকারীরা অনেক সময় বলেন দক্ষ জনবলের ঘাটতির কথা। নিয়ে বেজার কোনো পরিকল্পনা আছে?

অবশ্যই আপনারা জানেন যে দক্ষ জনবলের ঘাটতি আমাদের সবসময়ই ছিল, এখনো রয়েছে। ঘাটতি পূরণে আমাদের সবচেয়ে বড় একটি প্রকল্প রয়েছে প্রাইড। এটি বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় আমরা একটি বড় প্রকল্প নিয়েছি। প্রকল্পের আওতায় আমরা ২২ হাজার দক্ষ শ্রমিক তৈরি করব। যেহেতু আমার প্রকল্পের স্থান মিরসরাই, তাই প্রকল্পে স্থানীয় লোকজনকে গুরুত্ব দেব। কেননা, এখানের স্থানীয়রা কিছুটা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই ২২ হাজারের মধ্যে দুই হাজার লোক নেয়া হবে মিরসরাই এলাকা থেকে। বাকি ২০ হাজার সারা দেশ থেকে বাছাই করে চাহিদার ভিত্তিতে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

আমাদের যে ফ্যাক্টরিগুলো ওখানে স্থাপিত হচ্ছে, তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের চাহিদা কী কী? চাহিদার নিরেখে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। আমরা এখন ফার্ম নিয়োগের পর্যায় রয়েছি। আমরা তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রায় ২২ হাজার লোককে দক্ষ করে গড়ে তুলব।

বর্তমানের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ভাবে অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের সম্ভাবনা ফিকে হওয়ার কোনো আশঙ্কা আছে কি?

আমি সেটি মনে করি না। আমাদের কভিডের সময় আমরা দেখেছি, আমাদের এখানে বিনিয়োগ হয়েছে সব মিলিয়ে মিলিয়ন ডলার। আর কভিডের পর যখন ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলো, কিছু ক্ষেত্রে হয়তো আমাদের তেলের দাম, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু আমরা দেখেছি ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, অনেক দেশ থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায়। তো এটি আমাদের জন্য এক ধরনের সুযোগ। তেলের দাম, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, যুদ্ধ থেমে গেলে যখন দাম স্বাভাবিক হবে, তখন বিনিয়োগকারীরা আরো স্বস্তিতে থাকবেন। বিবেচনায় আমি মনে করি, বাংলাদেশের অবস্থান আরো ভালো। বিশেষ করে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এবং মনে করি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি হবে।

আমাদের জ্বালানিসহ অন্য পরিষেবা পানি-বিদ্যুৎ এগুলোর যে এক ধরনের অপ্রতুলতা আছে, বাস্তবতায় বিনিয়োগ আকর্ষণ কতটুকু সফল হবে বলে মনে করেন?

এটি ঠিক, আমাদের গ্যাসের যে মোট মজুদ রয়েছে, আপনি জানেন যে আমাদের ইকোনমিক জোনগুলো যখন তৈরি করি তখন আমরা বলেছিলাম আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস দেব। সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা এখনো আশা করি, সরকার আমাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইকোনমিক জোনগুলোয় গ্যাস দেবে। বিদ্যুতের ক্ষেত্রে আপনি যদি বলেন, অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে, অনেক উদ্বোধন হয়েছে, বাকিগুলো যদি বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে তাহলে আমি মনে করি বাংলাদেশে বিদ্যুতের যে চাহিদা সেটি পূরণ হবে। ইদানীং সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি হলো সোলার। নবায়নযোগ্য জ্বালানি। এক্ষেত্রে আমাদের যে জোনগুলো রয়েছে, যেগুলোয় এখনই হয়তো বড় বড় শিল্প কারখানা তৈরি সম্ভব নয়। এখানে প্রচুর পরিমাণে জার্মান কোম্পানি থেকে শুরু অনেক বড় বড় কোম্পানি আছে তারা এখানে এসেছে সোলার করবে। সোলার এবং সবকিছু মিলিয়ে আমি মনে করি বিদ্যুতের যে ঘাতটি আছে সেটি পূরণ সম্ভব। আর ইউক্রেন যুদ্ধ পার হওয়ার পর আমাদের যদি তেল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়, সেক্ষেত্রে আমি মনে করি, বিদ্যুতের কোনো অসুবিধা থাকবে না।

পানির যে কথাটি বলেছেন, আমাদের সবচেয়ে বড় শিল্প নগরী বঙ্গবন্ধু ইকোনমিক জোন, সেখানে আমাদের পানির চাহিদা এক হাজার এমএলডি।  এটি পূরণে আমরা ২০২৮ সাল পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি একটা পরিকল্পনা নিয়েছি। আমরা কিছু প্রকল্প গ্রহণ করেছি। সেখান থেকে চাহিদাটি আমরা পূরণ করতে পারব। ২০২৮ সালের পর একটু বড় আকারে প্রকল্প নেয়া হবে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিয়েছিল, তারা কোরিয়ান একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে মেঘনা থেকে পানি নিয়ে প্রায় ১৪২ কিলোমিটার দূরে আমাদের জোনে পানি সরবরাহ করবে। আমাদের টার্গেট করেই চুক্তি করা হয়েছে। আমরা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করলে প্রায় এক হাজার এমএলডি পানি সেখান থেকে পাব। পানি পেলে আমাদের আর পানির জন্য চিন্তা করতে হবে না।

বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে যারা বিনিয়োগ করতে চান তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?

বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে আমরা বরাদ্দ দিয়েছি। এখানের যারা মালিক তাদের চিন্তা করতে হবে সরকারি জায়গা আমরা যেভাবে দিচ্ছি তার চেয়ে বেশি উচ্চমূল্যে যেন বিনিয়োগকারীদের দেয়া না হয়। এটি দিলে তাদের বিনিয়োগ কম হবে। কারণ জায়গার দাম পড়ে যাবে বেশি। আমরা চাই, আমাদের অনুমোদন পাওয়ার পর তাদের দায়িত্বগুলো যেন দ্রুততার সঙ্গে পালন করে। বেজা সবসময় তাদের সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত। আমাদের সেবাটি যেন তারা দ্রুত গ্রহণ করে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন