২০২৩ সাল

মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় এআই ব্যয় ৩০০ কোটি ডলার ছাড়াবে

বণিক বার্তা ডেস্ক

ফেডারেল সরকারের পাশাপাশি সবচেয়ে বড় অংকের অর্থ ব্যয় হবে উৎপাদন, ব্যাংক ও খুচরা বাণিজ্য খাতে ছবি: ফাস্ট কোম্পানি মিডলইস্ট

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বদলে দিচ্ছে বৈশ্বিক পটভূমি। পরিবর্তন আসছে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবসায়িক পরিকল্পনায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগামীতে এআই হতে পারে অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। বিভিন্ন অঞ্চল দেশ তাই ব্যয় বাড়াচ্ছে খাতে। ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর মধ্যপ্রাচ্য আফ্রিকা অঞ্চলে এআই খাতে ব্যয় ৩০০ কোটি ডলারে উন্নীত হবে। খাতটিতে বৈশ্বিক মোট ব্যয়ের (১৫ হাজার ১৪০ কোটি ডলারের), যা প্রায় শতাংশ। খবর দ্য ন্যাশনাল।

আগামী বছরগুলোতে অঞ্চলটি এআই খাতে বিশ্বব্যাপী দ্রুততম প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন গবেষণা সংস্থাটির প্রাক্কলন বলছে, মধ্যপ্রাচ্য আফ্রিকায় এআইসংক্রান্ত ব্যয় ২৯ দশমিক শতাংশ চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়ে ২০২৬ সাল নাগাদ ৬৪০ কোটি ডলারে পৌঁছাতে পারে।

প্রতিবেদন আনুসারে, বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের দ্রুত ক্লাউড পরিষেবা গ্রহণ গতিশীল ডিজিটাল রূপান্তর সামনের বছরগুলোতে এআইসংক্রান্ত ব্যয়ের পরিমাণ বাড়াবে। আইডিসির মধ্যপ্রাচ্য আফ্রিকার সফটওয়্যার, ক্লাউড আইটি পরিষেবা বিভাগের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মনীশ রঞ্জন বলেন, ‘অটোমেশনের মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি দ্রুত কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে অঞ্চলজুড়ে সংস্থাগুলো এআই প্রযুক্তি, সফটওয়্যার পরিষেবাগুলোতে বিনিয়োগ করছে।

তিনি আরো বলেন, ‘মহামারীর প্রভাবজনিত কারণে ব্যাংক ফাইন্যান্স, উৎপাদন খাত, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য পরিচর্যা সরকারি সংস্থাগুলো এআই বা এমএল (মেশিন লার্নিং) পরিষেবা খাতে ব্যয় বাড়িয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বাজার গবেষণা পরামর্শকারী সংস্থা গ্র্যান্ড ভিউ রিসার্চের তথ্যানুসারে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বৈশ্বিক বাজার ২০৩০ সালে লাখ ৭০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। ২০২১ সালের হাজার ৩৫০ কোটি ডলারের তুলনায় যা ৩৮ শতাংশেরও অধিক সম্প্রসারিত হবে।

আইডিসির তথ্য বলছে, চলতি বছর মধ্যপ্রাচ্য আফ্রিকা অঞ্চলে এআইয়ের পেছনে ফেডারেল সরকারের পাশাপাশি সবচেয়ে বড় অংকের অর্থ ব্যয় করবে উৎপাদন, ব্যাংকিং খুচরা বাণিজ্য খাত। চলতি বছর সম্মিলিতভাবে অঞ্চলটিতে এআইবিষয়ক মোট ব্যয়ের প্রায় ৪৪ শতাংশ আসবে চারটি খাত থেকে।

আইডিসি ধারণা করছে, ২০২২ থেকে ২০২৬ সময়কালে কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তার পেছনে ব্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে পরিবহন পেশাদার পরিষেবা হবে দ্রুততম বর্ধনশীল শিল্প। এর বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার পৌঁছবে যথাক্রমে ৩৬ দশমিক ৩৩ দশমিক শতাংশে।

ওয়াল স্ট্রিটভিত্তিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকসের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জেনারেটিভ এআই হচ্ছে কৃত্রিম প্রযুক্তির সবচেয়ে জটিল শাখাগুলোর মধ্যে একটি। তাছাড়া এটি অপার সম্ভাবনাময়ও।

এটি মেশিন লার্নিং ব্যবহারের মাধ্যমে টেক্সট, ছবি, ভিডিও অডিও কন্টেন্ট তৈরি করতে সক্ষম। এছাড়া প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ সেটি ব্যবহারের পরিবর্তে সঠিক প্রেক্ষাপটে নতুন কনটেন্ট তৈরি করতেও পারদর্শী।

জেনারেটিভ এআই বিশ্ব অর্থনীতির শতাংশ (বা প্রায় ট্রিলিয়ন ডলার) প্রবৃদ্ধি এবং ১০ বছরে উৎপাদনশীলতার প্রবৃদ্ধি দশমিক শতাংশ পয়েন্টে উন্নীত করতে পারে বলেও মনে করছে গোল্ডম্যান স্যাকস।

প্রসঙ্গে বৈশ্বিক বাজার বিশ্লেষক ব্রেইনি ইনসাইটসেনের প্রতিবেদনে বলা হয়, জেনারেটিভ এআইয়ের বৈশ্বিক বাজার ২০৩২ সালের মধ্যে ১৮ হাজার ৮৬২ কোটি ডলারে পৌঁছতে পারে। প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানটি গত বছরের ৮৬৫ কোটি ডলারের তুলনায় ৩৬ শতাংশ বেশি। সামগ্রিকভাবে মধ্যপ্রাচ্য আফ্রিকা অঞ্চলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সম্ভাবনা আশাব্যঞ্জক। কেননা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের অভিজ্ঞতাকে ইতিবাচক সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে ডিজিটাল সক্ষমতা তৈরি উদ্ভাবন পরিচালনার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশ্লেষণভিত্তিক সমাধানগুলোতে ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগ করছে বলে জানান মনীশ রঞ্জন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন