আলোকপাত

আমাদের নগরের ঐতিহ্যগত ভিন্নতা ও নিজস্বতা হারিয়ে যাচ্ছে

মাহফুজুল হক জগলুল

গত ১৮ জানুয়ারি নেপালের স্থপতিদের সংগঠন, SONA-এর (Society of Nepalese Architects) কনভেনশনে আমন্ত্রিত হয়ে বাংলাদেশের স্থপতি ইনস্টিটিউটের প্রতিনিধি হিসেবে গিয়েছিলাম কাঠমান্ডু। এ SONA কনভেনশনের থিম ছিল—সমসাময়িক শহরের পরিচয় নির্মাণে স্থাপত্যের ভূমিকা (‘‌Role of architecture in the creation of identity of the contemporary city’)।

তাদের কনভেনশনের থিমটা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে এবং পশ্চিমাদের ‘‌দুধভাত মার্কা’ স্লোগানের সেই অতিপরিচিত শব্দ ‘‌ গ্লোবালাইজেশন’-এর ডামাডোলের বিপরীতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী মনে হয়েছে। নেপালের স্থপতিদের সোসাইটি খুব সুন্দরভাবে তাদের প্রাচীন প্রজ্ঞার নির্দেশনার ফসল, তাদের শহরগুলোর নিজস্ব অনন্যসাধারণ আইডেন্টিটির ধারণাটি তাদের থিম পেপারে বর্ণনা করা হয়েছে।

আধুনিক নামধারী আমাদের অঞ্চলের শহরগুলো তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যগত আইডেন্টিটি ক্রমে হারিয়ে ফেলছে। তথাকথিত এই গ্লোবালাইজেশনের ভাইরাসে আক্রান্ত যুগে সাংহাইও যেমন, নিউইয়র্কও তেমন, আবার দুবাইও সেই একই রকম। সবাইকে যেন সবকিছু ভেঙেচুরে যে করেই হোক নিউইয়র্ক বা শিকাগো হতে হবে, তাতেই যেন আমাদের নগর সভ্যতা ও এর ত্রিমাত্রিক আবহ এবং জীবনাচরণের একমাত্র মোক্ষ লাভ সম্ভব।

কাঠমান্ডু এয়ারপোর্টে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন নেপালের স্থপতি সোসাইটির প্রেসিডেন্ট, বিশিষ্ট স্থপতি রাজেশ থাপা। তিনি তার নিজের গাড়িতেই আমাদের হোটেলে পৌঁছে দেন। পথে আসতে আসতে একটা জনবহুল জায়গা দেখিয়ে বলেন এখানেই কেটেছে তার শৈশব। তিনি বলছিলেন তার শৈশবে এ জায়গাটা অনেক সুন্দর ছিল। লাল টালির ছোট ছোট ঘরে ভরা ছিল এলাকাটি। বেশ কয়েকটা নগর চত্বর ছিল কয়েকটা মন্দিরকে কেন্দ্র করে, যেখানে কেটে যেত তাদের পাড়ার ছেলেদের দিন-রাত্রির দুরন্ত কৈশোর। আজ সব হারিয়ে গেছে। উঁচু উঁচু কংক্রিটের অপরিচ্ছন্ন ও অপরিমিত মাত্রার ভবনগুলো গিলে ফেলেছে রাজেশ থাপার মধুর স্মৃতিময় কৈশোর। কথা বলতে বলতে বৃদ্ধ রাজেশ থাপার চোখ ভিজে আসে, তার কণ্ঠ থেকে ভেসে আসে পরিচিত এক হাহাকার। এ হাহাকার আমি অনেক দেশের, অনেক নগরের, অনেক মানুষের কণ্ঠে বহুবার বেজে উঠতে শুনেছি।

কিছুদিন আগে দুবাইয়ে এক স্থপতি আক্ষেপ করে বলেছিলেন, আমরা দিন-রাত পরিশ্রম করছি তোমাদের মতো গাছপালা শোভিত সবুজ প্রাণবন্ত নগর হতে আর তোমরা উল্টো মাতালের মতো চেষ্টা করছ সব গাছপালা কেটে আমাদের মতো স্টেইনলেস স্টিল, এনোডাইজড অ্যালুমিনিয়াম, ঝকঝকে টিন্টেড গ্লাস আর কংক্রিটের প্রাণহীন জঙ্গল হতে। কী আশ্চর্য।

আমরা যেহেতু শিক্ষার ভাষা হিসেবে ইংরেজিকে প্রচণ্ড সম্মান দিয়ে গ্রহণ করেছি, তাই আমাদের মনোজগতে ‘‌যাহাই’ ইংরেজিতে লিখিত ‘‌তাহাই’ আমাদের কাছে জ্ঞানের শেষ কথা অর্থাৎ সর্বোচ্চ জ্ঞান। এ জ্ঞানকে কোনো প্রশ্ন করতে আমরা শিখিনি। আমরা ভুলে গেছি যে উত্তর আমেরিকায় শ্বেতাঙ্গরা প্রায় ১০ কোটি আদিবাসী হত্যা করে তাদের সভ্যতাকে আক্ষরিক অর্থেই মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে সেখানে তাদের নগরগুলো পত্তন করেছে। সোজা কথা একদম সাদা কাগজের ওপর তারা তাদের নগরগুলো পরিকল্পনা করেছে। তাদের মাথায় না ছিল কোনো ঐতিহ্য, ইতিহাস, ভূমিজাত সংস্কৃতি বা সভ্যতাজাত জীবনাচরণের চাপ। সাদা কাগজের ওপর রুলার বসিয়ে গ্রিড আয়রন প্যাটার্নে তারা তাদের নগর ডিজাইন করেছে। কোনো প্রাচীন মন্দির, মসজিদ, ঐতিহাসিক সমাধিক্ষেত্র, দরগা, রাজপ্রাসাদ বা ঐতিহাসিক কোনো স্থাপনার জন্য তাদের রাস্তাকে ঘুরিয়ে নিতে হয়নি, তাদের পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আনতে হয়নি। কেননা নতুন ভূমিতে তাদের কোনো ইতিহাসই ছিল না। তাদের ছিল না আমাদের অঞ্চলের মতো হাজার বছর ধরে চলে আসা নানা রকমের ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব। তাই তাদের নগরের চরিত্র ছিল অন্য রকম। আমি বলছি না, তারা তাদের জন্য যা করেছে তা সঠিক না বেঠিক। হয়তো তাদের বাস্তবতায় তারা যা করেছে তা তাদের জন্য প্রাসঙ্গিকই ছিল বা আছে, যদিও পশ্চিমের অনেক চিন্তাশীল স্থপতিকেই আজ বলতে শুনছি যে তারা ভুল করেছে আর আমাদের বলেছে আমরা যেন সে ভুলগুলো আবার না করি। তাদের সমালোচনা তারা করুক। আমার মোদ্দা কথা হচ্ছে, তাদের অন্ধ ও প্রশ্নহীন অনুকরণ আমাদের জন্য হয়েছে ভয়াবহ, এ সত্যটা বুঝতে চেষ্টা করা।

এ শতাব্দীর প্রথম থেকেই আমাদের দেশের ইংরেজি শিক্ষিত মেধাবী ছাত্ররা তাদের কাছে গেছে নগর পরিকল্পনা, স্থাপত্য ইত্যাদি শিখতে। যেহেতু সেখানে সবকিছু ইংরেজিতে লেখা, তাই সেগুলো আমাদের জন্য হয়ে গেছে বেদবাক্য। দেবতাদের ভাষা অনেক দিন থেকেই ইংরেজি। তাই বিনা প্রশ্নে আমরা সেগুলোকে পরম জ্ঞান বলে ধরে নিয়েছি। দেশে যারা পড়াশোনা করেছি তারাও তাদের বানানো পাঠ্যসূচি অনুযায়ী ও প্রাথমিকভাবে তাদের সরাসরি তত্ত্বাবধানেই ‘‌প্রশিক্ষিত’ হয়েছি। এভাবে তাদের জ্ঞান, দৃষ্টিভঙ্গি, নন্দনতত্ত্ব ও ওয়ার্ল্ড ভিউগুলোকেই আমাদের মস্তিষ্কে ধারণ করে হুবহু আমাদের নগর স্থাপত্য ও পরিকল্পনায় প্রয়োগ করেছি। যতই প্রয়োগ করেছি ততই আমরা আমাদের আইডেন্টিটি হারিয়েছি আর ততই আমাদের নগরগুলোর প্রাণ হরণ করেছি। দশকের পর দশক ধরে এভাবে প্রাণ হরণ করতে করতে আমরা একের পর এক সমস্যার জন্ম দিয়েছি। জঞ্জালের জন্ম দিয়েছি। আমাদের অঞ্চলের নগরগুলো ধীরে ধীরে তাদের স্বকীয়তা, পরিচয় তথা আইডেন্টিটি হারিয়ে ফেলছে।

এককালে কলকাতা বা আমাদের পুরান ঢাকায় প্রায় সব বাড়িতেই রক বলে একটা স্পেস ছিল। রক হলো রাস্তার সঙ্গে লাগানো উঁচু একটা বাঁধানো খোলা বসার জায়গা। রক থাকা মানেই কোনো বাউন্ডারি ওয়াল না থাকা। রকে যেমন ক্লান্ত ভিখারি এসে বসত আবার বাড়ির মালিকও তার পৌঢ় বন্ধুদের নিয়ে বসত, গল্পগুজব করত। তাস, পাশা বা দাবা খেলত। আর পাড়ার কিশোর ও যুবকদের জন্য এই রক ছিল যতসব সম্ভব-অসম্ভব দুষ্টুমি, অভিযান আর সামাজিক বা খেলাধুলা আয়োজনের পরিকল্পনার সূতিকাগার বা মিটিং স্পেস। মোদ্দা কথা, রক ছিল দারুণ একটা সোশ্যাল ইনক্লুসিভ স্পেস। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিখ্যাত টেনিদার গল্পের চার মূর্তির প্রিয় সেই চাটুজ্জদের রকের কথা কে না জানে—

চাটুজ্জেদের রকে আমি, টেনিদা আর হাবুল সেন বসে মোড়ের বুড়ো হিন্দুস্থানীর কাছ থেকে কিনে আনা তিনটে ভুট্টাপোড়া খুব তরিবত করে খাচ্ছিলুম। হঠাৎ কোত্থেকে লাফাতে লাফাতে ক্যাবলা এসে হাজির।

—ডি লা গ্র্যান্ডি মেফিস্টোফিলিস। "

আমাদের মফস্বল শহরগুলোতে যাদের টিনের ঘর ছিল তাদের সংগত কারণেই রক বানানোর মতো উঁচু প্লিন্থ ছিল না কিন্তু প্রায় সব টিনের ঘরের সামনেই উন্মুক্ত মুখোমুখি এক জোড়া ইট-সিমেন্টের শানবাঁধানো সোফা থাকত, সেখানে যে কেউ এসে বসতে পারত। অনেকটা রকের মতোই ছিল এর চরিত্র। পিরোজপুরে আমার নানাবাড়িতে এখনো অমন এক জোড়া শানবাঁধানো রেড অক্সাইড ফিনিস সোফা আছে। কিন্তু আজ সে রক কোথায়? প্রতিটি বাড়ি এখন উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়েছে। শুধু দেয়াল নয়, সাত ফুট দেয়ালের ওপর আছে আবার তিন ফুট উঁচু সুচালো লোহার গ্রিল। সে দেয়ালের বাইরে ইউনিফর্ম পরা দারোয়ান আর দেয়ালের ভেতরে লম্বা জিহ্বার হিংস্র এলসেশিয়ান বা জার্মান শেফার্ড কুকুর। আমরা আমাদের প্রতিবেশীকে এখন আর বিশ্বাস করি না। নিজেকে ছাড়া সবাইকেই বিপজ্জনক মনে করি। আগের দিনের সেই পাড়ার কনসেপ্ট আমরা হারিয়ে ফেলেছি। এখন আমার পাশের বিল্ডিংয়ে কে থাকে তা-ই আমরা ঠিকমতো জানি না। আধুনিক সাজসরঞ্জাম আর নগর পরিকল্পনা দিয়ে আমরা গড়ে তুলেছি এক একটা অবিশ্বাসের শহর। প্রত্যেকটা ভবন যেন এক একটা আন্দামান দ্বীপের সেই সেলুলার জেলখানা। আমরা নিজেরাই নিজেদের হাজতে পুড়েছি। আমাদের ঘরবাড়ির এখন আর কোনো সমাজ সম্পৃক্ত চরিত্র নেই। 

আমাদের উপমহাদেশে ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক নগরেরই স্থাপত্যের অন্যতম মৌলিক উপাদান ছিল নিজস্ব বারান্দা স্থাপত্য, আসলে তখনকার সমাজের সমাজ সম্পৃক্ততা বা প্রতিবেশীর সঙ্গে সংযোগমুখী মনস্তত্ত্বেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটত গৃহের সামনের কোলাহলমুখর রাস্তার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী এ লম্বা বারান্দারগুলোর মাধ্যমে। এ বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই মানুষ তার পাড়ার সঙ্গে, বাইরের জগতের সঙ্গে সর্বদা সংযুক্ত থাকত। এখান থেকেই সে নিচের রাস্তার মানুষের সঙ্গে কথা বলত, কেনাকাটা করত, এমনকি ঝগড়াও করত; আবার কখনো কখনো মানব-মানবীর প্রেমের প্রাথমিক সূত্রপাতও হতো এখান থেকেই। এ বারান্দাগুলোই ছিল গৃহ ও সমাজের প্রাথমিক সংযোগ কেন্দ্র।

গত ২৪ জানুয়ারি পরলোকগত বিশ্বখ্যাত ভারতীয় স্থপতি বি ভি দোশীও ছিলেন আমাদের উপমহাদেশে এ বারান্দা স্থাপত্যের একজন পরম ভক্ত। আমাদের অঞ্চলের নগর ও স্থাপত্য পরিকল্পনার প্রাচীন প্রজ্ঞার উদাহরণ দেখিয়ে বারান্দা স্থাপত্য নিয়ে খুব সুন্দর বুদ্ধিদীপ্ত ভাষায় দোশী বলেছিলেন—

‘‌The meeting place between the sacred and profane; the house and the street’.

গত ২০ জানুয়ারি, সেমিনারের মাঝখানে কিছুটা সময় বের করে নেপাল, ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের কিছু স্থপতি মিলে গিয়েছিলাম চতুর্দশ শতক থেকে অষ্টাদশ শতকের মধ্যে গড়ে ওঠা কাঠমান্ডু থেকে সামান্য দূরে ভক্ত ভক্তপুর দরবার স্কয়ারে।

এখানে আমি আগেও গিয়েছি; তবে এখানে গেলে প্রাচীন স্থাপত্য দেখার চেয়ে আমার বেশি ভালো লাগে এ প্রাচীন শহর ঘিরে মানুষের চলাফেরা, কারুকার্যখচিত ছাউনি দেয়া রকে বসে বসে গল্পগুজবে মুখরিত মানুষের হাস্যোজ্জ্বল মুখমণ্ডল ও তাদের সুখী স্বতঃস্ফূর্ত জীবনাচার দেখা। শহরের পরিকল্পনাটাই এত বেশি নাগরিকঘনিষ্ঠ যে শহর আর শহরের মানুষ যেন কোনো এক প্রাচীন প্রজ্ঞায় সিদ্ধ হয়ে অবলীলায় মিলেমিশে এক হয়ে গেছে।

নগর আর নাগরিককে এখানে আর আলাদা করা যায় না। শীতের রোদে স্নান করে নগরের বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের এমন প্রাণবন্ত আর আমোদে হাস্যোজ্জ্বল করে দিতে পারে আমাদের কোনো আধুনিক শহর। তথাকথিত আধুনিক শহর, গুলশান, বনানী, বারিধারা, উত্তরা; কোথায় এ ছবিগুলোর মতো এমন পরম আন্তরিক, হাস্যোজ্জ্বল আর নির্ভরতায় পরিপূর্ণ নাগরিক নর-নারীর পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ায় মুখরিত চত্বর মিলবে যা আমি ভক্তপুরে দেখতে পাই।

শত চেষ্টা করলেও আর একটা শাঁখারিপট্টি আমরা পাব না। পাব না আর একটা নারিন্দা, ওয়ারী, নাজিরাবাজার, লালবাগ বা জিন্দাবাহার লেন। এ এলাকাগুলো যেন প্রকৃতি আর ঐতিহ্যকে আগলে ধরেই অর্গানিকভাবেই আপনাআপনি গড়ে উঠেছে। আমরা আমাদের অঞ্চলের মানুষদের কালচার ডিএনএর গঠন ও চরিত্র বুঝতে অনেক দেরি করে ফেলেছি আর ততদিনে আমরা ভুল পথে অনেক দূর চলে গেছি। এভাবে যেতে যেতে কয়েক দশক ধরে একদল ভিন্ন চিন্তার স্থপতি ও আরবান ডিজাইনাররা হঠাৎ আবিষ্কার করতে শুরু করে যে এ অন্ধ অনুকরণে আমরা ক্রমেই আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সমাজ, সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নগরের উপাদানগুলো হারিয়ে ফেলতে বসেছি। মোট কথা, আমরা আমাদের নগরগুলোর একান্ত নিজস্ব পরিচয় হরিয়ে ফেলছি।

নেপাল যেহেতু একটি প্রচণ্ড সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যমণ্ডিত দেশ আর এ উপমহাদেশের প্রত্যেকটি দেশই ব্রিটিশ উপনিবেশ দ্বারা সুদীর্ঘ কাল শোষিত ও শাসিত হলেও নেপাল আশ্চর্যজনকভাবে উপনিবেশবাদ মুক্ত ছিল পুরোটা সময়। তাই নেপালের স্থপতিরাই এই আইডেন্টিটির ব্যাপারটা খুব ভালোভাবে হয়তো অনুধাবন করতে পেরেছে। এজন্যই এশিয়ার ১০-১২টি দেশের স্থপতিদের নিয়ে তারা দুদিনব্যাপী এ বিশাল কনভেনশনের থিম হিসেবে আমাদের শহর ও নগরগুলোর আইডেন্টিটির ব্যাপারটি এত জোরালোভাবে তুলে ধরেছে আমাদের সবার চোখের সামনে। আজ এটা শুধু নেপালের একার বাস্তবতার চিত্র নয়, এটা আমাদের উপমহাদেশ তথা এশিয়ার প্রায় সব দেশেরই ভ্রান্ত নগর পরিকল্পনার সাধারণ গল্প। মনে পড়ে, আমার এক বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক বন্ধু একবার বলেছিল, কখনো কখনো শিক্ষার চেয়ে অশিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং পুনরায় শিখতে শুরু করা অপরিহার্য হয়ে দাঁড়ায় (Sometimes unlearning is more important than learning and then it is essential to start relearning)।

নগর পরিকল্পনার ক্ষেত্রে আমার মনে হয়, এখনই সময় এ কথাটাকে গুরুত্ব দিয়ে চিন্তা করার।

মাহফুজুল হক জগলুল: স্থপতি, ফেলো আইএবি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন