যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে অবনতি ঘটবে না —পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্কিনদের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। একটা-দুইটা ঘটনা নিয়ে সম্পর্কে কোনো অবনতি ঘটবে না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী . কে আব্দুল মোমেন। র্যাবের ওপর বিদ্যমান বিধিনিষেধের মধ্যে নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হবে কিনা, প্রশ্নের জবাবে তিনি কথা বলেন।

গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের কাছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ধরনের দুর্ঘটনা আমেরিকায় প্রতিদিন ঘটছে। সপ্তাহে সেখানে স্কুলপড়ুয়া বাচ্চা মেরে ফেলা হয়েছে। নিয়ে কারো সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে? নো। হঠাৎ করে দুর্ঘটনা হতে পারে। এটার যে তথ্য পত্রিকার মাধ্যমে এখন পেলাম, সত্য-মিথ্যা পুরোটা জানি না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে, র্যাব বলতে পারবে। ওনাকে তারা নিয়ে গিয়েছিল, উনি ফেক আইডি তৈরি করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছিল। তার ফলে তাকে হেফাজতে নেয়। পাবলিকলি তাকে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছে। উনি এত অন্যায় করেছেন, বোধহয় যার ফলে হার্ট ফেলে মারা গেছে।

আরেক অনুষ্ঠানে মন্ত্রীকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, র্যাবের ওপর মার্কিন বিধিনিষেধ রয়েছে, নওগাঁর ঘটনায় পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হবে কিনা। এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, মার্কিনদের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। একটা-দুইটা ঘটনা নিয়ে সম্পর্কে কোনো অবনতি ঘটবে না।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বাধীনতা দিবসে বিভিন্ন দেশের অভিনন্দন বার্তা প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে . কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা খুব ভাগ্যবান যে শেখ হাসিনার কারণে গত কয়েক বছরে আমাদের উন্নয়ন ঈর্ষণীয়। দুনিয়ার সব পত্রপত্রিকায় আমাদের উন্নয়নকে ম্যাজিক্যাল উন্নয়ন বলা হয়েছে। আমাদের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে মান-ইজ্জত অনেক বেড়েছে। বহু দেশ এখন আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে, ব্যবসা বাড়াতে, সম্পর্ক আরো শক্তিশালী করার জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছে। স্বাধীনতা দিবসে কিংবা আমাদের রমজানের শুরুতে একাধিক দেশের রাষ্ট্রপতি, সরকারপ্রধান, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের চিঠি অভিনন্দন পেয়েছি। আগে কোনোদিন এতগুলো অভিনন্দন বার্তা আসেনি। এটা সুখবর যে ওইসব দেশ আমাদের সম্মান দিচ্ছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির বিভিন্ন দিক থেকে আমরা থ্যাংক ইউ নোট পাচ্ছি, খুব প্রশংসা করছে।

গণতন্ত্রের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের বাংলাদেশের ডেমোক্রেসি অত্যন্ত পরিপক্ব। শেখ হাসিনার কারণে বাংলাদেশের গণতন্ত্র আরো শক্তিশালী হয়েছে। ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে যখন বিএনপি সরকার ক্ষমতায় ছিল, তখন তো গণতন্ত্র ছিল না; তখন জিহাদি ছিল, সন্ত্রাস ছিল। তখন পাঁচবার আমরা এক নম্বর দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হয়েছি।

মন্ত্রী আরো বলেন, এখন খুব স্বচ্ছ, সুন্দর গ্রহণযোগ্য ইলেকশন করার জন্য আমরা অনেকগুলো প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরি করেছি। যেমন আমরা এখন ফটো আইডিযুক্ত বায়োমেট্রিক ভোটার তালিকা করেছি, যাতে ফেক ভোটার না হয়। আমরা এখন স্বচ্ছ, ট্রান্সপারেন্ট ব্যালট বাক্স করেছি। স্বাধীন নির্বাচন কমিশন করেছি। আমরা চাই স্বচ্ছ সুন্দর নির্বাচন হোক। আমেরিকাও চায়। তার দেশেও গণতন্ত্র নিয়ে সমস্যা। অন্য দল বিশ্বাসই করে না আমেরিকার নির্বাচন স্বচ্ছ হয়েছে। তাদের দেশেও গণতন্ত্র দুর্বল। তাই তারা গণতন্ত্রকে আরো সোচ্চার করতে দেশে-বিদেশে চেষ্টা করছে। আমরাও চেষ্টা করছি। এসব যদি তারা বলে তাতে নাথিং রং।

কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা হচ্ছি সেই দেশ, গণতন্ত্রের জন্য আমাদের কারো থেকে সবক নিতে হবে না। আমরাই একমাত্র পৃথিবীর দেশ যেখানে গণতন্ত্রের জন্য, ন্যায়বিচারের জন্য, মানবিকতার জন্য ৩০ লাখ লোক প্রাণ দিয়েছে। এটা অনেকে ভুলে যায়। গত ১৪ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অনেক নির্বাচন হয়েছে এবং তা স্বচ্ছ হয়েছে। এক হাজারের মধ্যে পাঁচটা হয়তো প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা আশা করি, আগামী নির্বাচন স্বচ্ছ গ্রহণযোগ্য হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন