আইপিএল শুরু হচ্ছে কাল। জনপ্রিয় এই ক্রিকেট লিগ শুরুর আগে নিজেদের উপস্থিতিও যেন জানান দিলেন বাংলাদেশের তারকা সাকিব আল হাসান ও লিটন কুমার দাস। সাকিব-লিটনের যুগলবন্দিতেই টি২০ সিরিজে আয়ারল্যান্ডকে একপেশেভাবে হারাল বাংলাদেশ। কলকাতা নাইট রাইডার্সে খেলতে যাওয়া এই দুই তারকার প্রতাপেই গতকাল চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচে ৭৭ রানে জিতেছে টাইগাররা। এক ম্যাচ হাতে রেখে সাকিবরা সিরিজে এগিয়ে ২-০-তে।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গতকাল বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়লেন লিটন। আর আন্তর্জাতিক টি২০-তে সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিক হলেন সাকিব। দুজনের গৌরবোজ্জ্বল পারফরম্যান্সে ভর করে আয়ারল্যান্ডকে ৭৭ রানের বড় ব্যবধানে হারাল বাংলাদেশ।
বৃষ্টির বাগড়ায় কাল ২টার পরিবর্তে ম্যাচ শুরু হয় ৩টা ৪০ মিনিটে। আর খেলা হয় ১৭ ওভারের। কার্টেল ওভারের এই ম্যাচে আইরিশদের গুঁড়িয়ে দেয় স্বাগতিকরা। প্রথমে ব্যাটাররা, পরে অতিথি দলকে কোণঠাসা করেন বোলাররা। ১৮ বলে ফিফটি করেন লিটন। ৫ ওভারের পাওয়ার প্লে শেষে স্বাগতিকরা বিনা উইকেটে ৭৩ রান তুলে নেয়। সেই গতি ছিল শেষ পর্যন্ত। ১৭ ওভারে তিন উইকেটে ২০২ রানের সৌধ গড়ে স্বাগতিকরা।
ওপেনারদের গড়ে দেয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে পরে অন্যরাও রান করেন। লিটন ১০টি চার ও তিন ছক্কায় ৪১ বলে ৮৩ রান করেন। এছাড়া রনি তালুকদার ২৩ বলে ৪৪, সাকিব আল হাসান ২৪ বলে ৩৮* ও তৌহিদ হৃদয় ১৩ বলে ২৪ রান করেন। ওপেনিং জুটিতে ৯.২ ওভারে ১২৪ রান তুলে এদিন রেকর্ড গড়েন লিটন ও রনি। ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০২ রান তুলে রেকর্ড গড়েছিলেন সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ নাইম শেখ। এছাড়া দ্রুততম দলীয় ফিফটি ও সেঞ্চুরির রেকর্ডও হয়েছে। কাল ২১ বলে ৫০ রান আসে বাংলাদেশের। ২০১৬ সালে এই দলটির বিপক্ষেই এসেছিল আগের দ্রুততম ফিফটি (২৪ বল)। কাল ৪৩ বলে রানের সেঞ্চুরি আসে বাংলাদেশের। আগের দ্রুততম সেঞ্চুরি ছিল ৫৩ বলে, এই সিরিজেরই প্রথম ম্যাচে।
প্রথম ম্যাচের মতো কালও লিটনের ব্যাটে ঝড় ওঠে। তবে সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েও তিনি আউট হয়ে যান। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জোহানেসবার্গে ২০ বলে ফিফটি করেছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। ১৬ বছর পর সেই রেকর্ড ভাঙলেন লিটন। লিটনের পর সাগরিকায় দেখা গেল সাকিব-শো। তাসকিন আহমেদ প্রথম বলেই পল স্টার্লিংকে সাজঘরে ফেরান। এরপর সাকিবের ঘূর্ণি বিষে নীল আইরিশরা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসেই নিজের প্রথম বলে লরকান টাকারকে শিকার করেন সাকিব। এরপর চতুর্থ ওভারে দুটি ও ষষ্ঠ ওভারে আরো দুটি উইকেট শিকার করেন বাংলাদেশ দলনায়ক। এর মধ্য দিয়ে নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদিকে (১৩৪) টপকে আন্তর্জাতিক টি২০-তে সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিক হন তিনি। ১১৪ ম্যাচে ১৩৬ উইকেট শিকার করলেন সাকিব। আর সাউদি ১৩৪ উইকেট নেন ১০৭ ম্যাচে।
ইনফর্ম তাসকিন পরে আরো দুটি উইকেট নেন। নিয়মিত উইকেট হারিয়ে আইরিশরা ৯ উইকেটে ১২৫ রান তুলতে সমর্থ হয়। তাসকিন ২৭ রানে নেন তিন উইকেট। কার্টিস ক্যামফার ৩০ বলে ৫০ রান, হ্যারি টেক্টর ১৬ বলে ২২ ও গ্রাহাম হিউম ১৭ বলে ২০ রান করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ: ১৭ ওভারে ২০২/৩ (লিটন ৮৩, রনি ৪৪, সাকিব ৩৮*, হৃদয় ২৪; বেন হোয়াইট ২/২৮)। আয়ারল্যান্ড: ১৭ ওভারে ১২৫/৯ (ক্যামফার ৫০, টেক্টর ২২, হিউম ২০; সাকিব ৫/২২, তাসকিন ৩/২৭, হাসান ১/৬)। ফল: বাংলাদেশ ৭৭ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ)। সিরিজ: বাংলাদেশ ২-০-তে এগিয়ে।