সানেমের জরিপের ফল

নিম্ন আয়ের ৯২ শতাংশ মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিম্ন আয়ের ৯২ শতাংশ মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) জরিপে উঠে এসেছে। নিম্ন আয়ের এ মানুষদের মধ্যে ২৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ মারাত্মক, ৩২ দশমিক ৮১ শতাংশ হালকা ও ৩৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ মাঝারি মাত্রার খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে ওই জরিপে উঠে এসেছে। 

গতকাল রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক ইন সেন্টারে ‘‌কেমন আছে নিম্ন আয়ের মানুষ?’ শীর্ষক সানেমের জরিপের ফল তুলে ধরেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান। জরিপটি এ বছর ৯ থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত দেশের ৮ বিভাগের ১৬০০ নিম্ন আয়ের পরিবারের ওপর করা হয়েছে। যেখানে শহর থেকে ৮০০ পরিবার এবং গ্রাম থেকে ৮০০ পরিবার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

জরিপে নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর মূল্যস্ফীতির চাপ কেমন প্রভাব ফেলেছে এবং তা থেকে কাটিয়ে উঠতে তারা কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন তা তুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে এ রকম অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে কীভাবে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেবেন, তাও তুলে ধরা হয়েছে।

সানেমের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘‌এক বছরের অধিক সময় ধরে মূল্যস্ফীতির চাপ আমরা দেখতি পারছি। প্রতিনিয়ত দ্রব্যমূল্যের দামের উল্লম্ফন নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রায় বড় প্রভাব ফেলেছে। সরকার ঘোষিত মূল্যস্ফীতির চেয়ে নিম্ন আয়ের মানুষ আরো অধিক হারে মূল্যস্ফীতি মোকাবেলা করে।’

মূল্যস্ফীতির কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘‌বৈশ্বিক বাজারে খাদ্য, জ্বালানি ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম অনেক বেড়ছে। একই সঙ্গে সরবরাহ পরিস্থিতি ও দেশের বাজারেও বড় ধরনের ত্রুটি রয়েছে। মূল্যস্ফীতি হলেও দরিদ্র জনগোষ্ঠী চাইলেও একটা নির্দিষ্ট মাত্রার বাইরে তাদের খরচ আর বাড়াতে পারেন না।’ 

জরিপে দেখানো হয়েছে, পাঁচজনের পরিবারে খরচ গড়ে ১৩ শতাংশ হারে বেড়েছে। ছয় মাস আগেও যেখানে একটি পরিবারের খরচ ছিল ১২ হাজার ৮৮০ টাকা, তা এখন ১৪ হাজার ৫৬৯ টাকা। পরিবারগুলোতে খাদ্যের পেছনে ১৭ দশমিক ২ শতাংশ খরচ বেড়েছে। এই পরিস্থিতি সামলাতে ৯০ শতাংশের বেশি পরিবার তাদের খাবারের অভ্যাস পরিবর্তন করেছে এবং ৭৩.৮ শতাংশ ধার করে চলছে। শহরের লোকজন সবচেয়ে বেশি ৯৪ শতাংশ খাবারের অভ্যাস পরিবর্তন করেছে। একই সঙ্গে যেসব পরিবার ধার করছে তাদের মধ্যে ৪৫ শতাংশ ক্ষুদ্র ঋণের ওপরে ঝুঁকেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন