যশোর-খুলনা মহাসড়ক

৪ কিলোমিটার অংশে কংক্রিট ঢালাই করতে চায় সওজ

আবদুল কাদের, যশোর

যশোর-খুলনা মহাসড়কের শনির দশা কাটছে না। মাত্র আট মাসের মাথায় মহাসড়কের বুকে ফুলেফেঁপে উঁচু-নিচু অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ ৩৮ কিলোমিটার মহাসড়কের মধ্যে ১৭ কিলোমিটার অংশে বেহাল দশা পর্যবেক্ষণ করেছে। অবস্থায় কংক্রিট মহাসড়ক করার জন্য সড়ক মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে যশোর সওজ। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে চার কিলোমিটার কংক্রিট বা ঢালাই সড়ক করার জন্য বলা হয়েছে। যাতে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যশোর-খুলনা মহাসড়কের উন্নয়নকাজ শুরু করা হয় ২০১৮ সালের মে মাসে। ২০২২ সালের জুনে সড়কের কাজ শেষ করা হয়েছিল। সড়কের নির্মাণকাজ চলমান থাকাবস্থায় আট কিলোমিটার সড়ক ফুলেফেঁপে ওঠে। ওই সময় সরকার বুয়েটের একজন শিক্ষককে পরামর্শক নিয়োগ করে। তিনি সরজমিন ঘুরে সড়কের দুই পাশে ওয়্যারিং করার সুপারিশ করেছিলেন।

সওজ অধিদপ্তর যশোরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফ মাহমুদ বলেন, ‘সড়কের বুকজুড়ে ফুলেফেঁপে উঠছিল। আমাদের পরামর্শকের সুপারিশে সড়কের ১৭ কিলোমিটার অংশ কংক্রিট ঢালাই করার জন্য বলা হয়েছে। আমরা সেই অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথমে শহরের মুড়লী রেলক্রসিং থেকে নওয়াপাড়া-ভাঙ্গা পর্যন্ত ছয়টি রেলক্রসিংয়ে চার কিলোমিটার ঢালাই রাস্তা করা হবে। পর্যায়ক্রমে ১৭ কিলোমিটার সড়কে ঢালাই করা হবে।

সওজ সূত্র জানায়, যশোর-খুলনা মহাসড়কের ৩৮ কিলোমিটার উন্নয়নে ৩২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। মহাসড়কটি যশোর শহরতলির পালবাড়ী মোড় থেকে শুরু হয়ে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ার রাজঘাট পর্যন্ত নতুন করে নির্মিত হয়। ২৭ কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহবুব অ্যান্ড ব্রাদার্স, তমা কনস্ট্রাশন অ্যান্ড কোং। অথচ আট কিলোমিটার সড়কে সৃষ্টি হয়েছিল উঁচু-নিচু অবস্থা। ফুলেফেঁপে ওঠায় যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। সড়কটি বর্তমানে ২৪ ফুট চওড়া রয়েছে। এটি আরো ১০ ফুট উন্নীত করে ৩৪ ফুট চওড়া দুই লেন করা হয়।

সড়কটির কাজের শুরুতেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়ক উন্নয়নের কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্রের কোনো নিয়মনীতি মানেনি। তারা গোঁজামিল দিয়ে ইচ্ছামতো কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ঠিকাদাররা সড়কের পুরনো ব্রিটিশ আমলের লোন ধরা ইট খোয়া তুলে সেটাই আবার ভেঙে গর্তে ব্যবহার করেছেন, যা দরপত্রে বলা হয়নি। এছাড়া সড়কটি ফুট গর্ত করে ভিত তৈরির নির্দেশনা থাকলেও সে নিয়ম মানা হয়নি। সড়কে নতুন ইট, বালি, খোয়া ব্যবহার না করে খুঁড়ে ওঠানো মালাপত্রই ফের ভরাট করা হয়েছে। যে কারণে সড়কটির শনির দশা কাটেনি।

যশোর সওজ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সড়কটির কাজ চলমান থাকাবস্থায় কিছু জায়গায় সমস্যা হয়েছিল। সেগুলো ঠিক করা হয়েছে। সড়কের কাজও শেষ হয়েছে। তবু সড়কটিতে সমস্যা খুঁজে পেয়েছেন পরামর্শক। যে কারণে আপাতত চার কিলোমিটার ঢালাই সড়ক করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আশা করছি কোরবানির ঈদের পর কাজ শুরু করতে পারব।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন