‘‌তরুণ নির্মাতাদের নিয়ে আমি আশাবাদী’

ছবি: বিজরী বরকতউল্লাহ

দ্য সাইলেন্স ওয়েব সিরিজে নিজেকে ভিন্নরূপে উপস্থাপন করেছেন বিজরী বরকতউল্লাহ। এছাড়া ওটিটি প্লাটফর্মে নিয়মিত অভিনয় করছেন। অভিনয় দিয়ে দেশের বাইরেও দর্শক মাতাচ্ছেন এ অভিনেত্রী। নৃত্যশিল্পী ও মডেল হিসেবেও খ্যাতি রয়েছে তার। অভিনয় ও ব্যক্তিজীবন নিয়ে বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেছেন বিজরী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাবিহা জামান শশী


সাইলেন্সে এমন ব্যতিক্রমী চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব আসার পর প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?

ভালো লেগেছে। কারণ আমরা তো ভিন্নধর্মী চরিত্রই করতে চাই। একই রকম চরিত্রে বেশিদিন অভিনয় করতে ভালো লাগে না। আবার একটা ব্যাপার হয়, একই ধরনের চরিত্র করতে থাকলে ওই চরিত্রের জন্যই পরিচিতি থাকে। তাই সাইলেন্সের চরিত্রটার প্রস্তাব যখন এল আর আমি স্ক্রিপটা পড়লাম, তখনই ভালো লেগে গেল। এক কথায়ই বলেছি চরিত্রটা করব।


তখন কি মনে হয়েছিল, এতটা সাড়া পাবেন? 

সত্যি বলতে, তখনো বুঝিনি এতটা সাড়া পাব। অনেক সময় দেখা যায় স্ক্রিপ্ট ভালো হলেও কাজের সময় এর বৈশিষ্ট্যটাই হারিয়ে যায়। এক্সিকিউশন ভালো হয় না। আবার কখনো মাঝারি মানের স্ক্রিপ্টেরও এক্সিকিউশন এত ভালো হয় যে মানুষের খুব ভালো লাগে। তাই স্ক্রিপ্ট পড়ে তখনই আশা করিনি, কিন্তু কাজ করার সময় আমরা অনেক পরিশ্রম করেছি। সবাই শতভাগ চেষ্টা করেছে কাজটা ভালো করার। পরিশ্রম তো সার্থকতা আনেই।


একাধারে সেরা সব ওটিটি কন্টেন্টে অভিনয় করছেন। এর রহস্য কী? 

আসলে সেভাবে ভেবে কাজ করা হয় না। তবে এখন অনেক কম কাজ করি। ভালো লাগার স্ক্রিপ্টেই কাজ করার চেষ্টা করি। আর সেরার ব্যাপারটা, ওটা হয়ে গেছে। কাজটা সবাই মিলে ভালো করে করলে সেটা ভালো হয়। টিমওয়ার্ক এখানে বড় ভূমিকা রাখে। আর ওটিটিতে তরুণ কিছু ছেলেমেয়ে কাজ করছে, তারা কাজ খুব ভালো জানে।


তরুণ নির্মাতাদের নিয়ে আপনার কাছ থেকে আরো কিছু মুল্যায়ন শুনতে চাই?

আমার একটা কথাই মনে হয়—এরা কই ছিল? মানে, এত সুন্দর কাজ ওরা কোথা থেকে শিখল। তারা যেভাবে কাজগুলো বোঝে, তা আমাকে অবাক করে। ওরা অনেক দেখেছে ও জ্ঞানের দিক থেকে এগিয়ে। তরুণ নির্মাতাদের নিয়ে আমি আশাবাদী। শুধু পরিচালক নয়, সিনেমাটোগ্রাফি, ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশ্বমানের কাজ করার মতো তরুণ আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে আছে। একটু ঠিকমতো গাইড করলে আর বাজেট দিলে ওরা দারুণ সব কাজ করতে পারে। আমার তো গর্ব হয়। আমি ওদের কাছ থেকে শিখছি।


লম্বা সময়ের অভিজ্ঞতায় আপনার দৃষ্টিতে ওটিটি প্লাটফর্ম কেমন?

ইতিবাচকভাবে দেখি। আমাদের টেলিভিশনে নাটক বা অন্যান্য অনুষ্ঠান নির্দিষ্ট সময়ে দেখানো হয়। কিন্তু ওটিটিতে দর্শক তার নিজের সময়মতোই দেখতে পারেন। হয়তো বাড়ি ফিরতে দেরি হচ্ছে, নির্দিষ্ট সময়ের অনুষ্ঠান হলে মিস হতো। এখন ওটিটিতে সেটা হয় না। তাছাড়া নতুন নতুন কাজের সুযোগ হচ্ছে। তরুণরা কাজ করছে। এটাও তো একটা বেশ বড় বিষয়।


কারাগারে রিয়েল লাইফ জুটিকে আমরা অন স্ক্রিন দেখলাম। আপনাদের কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? 

ইন্তেখাব দিনারের সঙ্গে তো আমি অনেক কনটেন্টেই অভিনয় করেছি। কাজ যখন করতে যাই, তখন আমরা একেবারেই পেশাদার। আমাদের মাথায় তখন কাজটাই থাকে। অনেক দিনের অনেক কাজের অভিজ্ঞতা আছে আমাদের। আগেও যেমন কো-আর্টিস্টের মতো করে সেটে কাজ করতাম, এখনো সেটাই করি। 


তাহলে আরেকটু ঘুরিয়ে জানতে চাই। কারাগার নিয়ে এত আলোচনা হলো দর্শক মহলে। এ নিয়ে আপনাদের মধ্যে আলাপ হতো না?

দিনার কারাগারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অনেক আগে। প্রি-প্রডাকশনের কাজ হয়েছে অনেকদিন ধরে। স্ক্রিপ্ট, কাস্টিং নিয়েও অনেকদিন ধরে চলেছে। ওকে প্রথমেই কাস্ট করা হয়েছিল। আমি তখন ছিলাম না। অনেকদিন পর আমাকে ডাকা হয়। শুরুতে দিনারের কাছ থেকে গল্পের খানিকটা শুনেছিলাম। তখন কথা হয় ও বুঝলাম, আমার চরিত্রটার স্ক্রিনটাইম খুব বেশি না হলেও এর গুরুত্ব আছে। কারাগারের গল্পটায় নানাভাবেই মা ও সন্তানের কথা আছে। সেখান থেকে আমার চরিত্রটাও ছিল একজন মায়েরই। আমার শুটিং খুব কম দিন হয়েছিল। আর দিনার প্রায় ২৫-২৬ দিন শুটিং করেছে। দেখতাম সে খুব ভোরে যেত, কখনো মাঝরাতে ফিরত। অভিনয় করে আমাদের দুজনেরই ভালো লেগেছে। দর্শকের অ্যাপ্রিসিয়েশনটা আমাদের জন্য বাড়তি পাওনা।


আপনার আসন্ন কাজ সম্পর্কে পাঠকদের কিছু জানাতে চাইবেন?

সামনে আমার একটা ওয়েব ফিল্ম করার কথা। পরিচালক আপাতত দেশের বাইরে আছেন। তিনি আসলে শুটিং শুরু হবে। এর পরিকল্পনা অনেকদিন ধরেই চলছে। এছাড়া নাটক, বিজ্ঞাপনের কাজ বা প্রস্তাব তো অনেকই আসে। তবে বড় কাজ বলতে ওয়েবফিল্মটা। একটু পিছিয়ে গেছে, তবে এখন এটাই আমার হাতে বড় প্রজেক্ট।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন