পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে ৪ এপ্রিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত পর্যন্ত রেলপথের কাজ শেষ হয়েছে ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে নয় মাস আগে। এবার ট্রেন চলাচলের জন্যও প্রস্তুত হচ্ছে দেশের দীর্ঘতম সেতু। আগামী এপ্রিল সেতুর ওপর দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের দিন ধার্য করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। ওইদিন ভাঙ্গা থেকে একটি গ্যাংকার ট্রেন পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে মাওয়া স্টেশনে থামবে। রেলপথ মন্ত্রণালয় পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ তথ্য জানিয়েছে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত পর্যন্ত রেলপথটির কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। অন্যদিকে মাওয়া স্টেশন থেকে পদ্মা সেতুর সংযোগ পর্যন্তও রেলপথ প্রস্তুত। এখন কেবল মূল সেতুর ৪১ মিটার অংশে রেলপথ বসানোর কাজ বাকি। অংশটি ৩০ মার্চের মধ্যেই সম্পন্ন হবে বলে আশা করছেন প্রকল্পের কর্মকর্তারা।

বিষয়ে জানতে চাইলে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে গ্যাংকার ট্রেনটি ভাঙ্গা থেকে রওনা হয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে মাওয়া পর্যন্ত আসবে। ট্রেনটি মূলত নির্মিত রেলপথটি ইন্সপেকশনের কাজে ব্যবহার করা হয়। এপ্রিল ট্রেনে ভ্রমণ করে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন নির্মিত রেলপথসহ প্রকল্পের সার্বিক কাজ পরিদর্শন করবেন। পুরোপুরি চালু হওয়ার আগে রেলপথ দিয়ে আমরা প্রকল্পের বিভিন্ন পণ্য পরিবহন করব।

পদ্মা সেতুর ওপরে রেলপথ বসানোর কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ৪১ মিটারের মতো বাদ আছে। অংশে একটি বিশেষ ধরনের স্লিপার বসাতে হচ্ছে। স্লিপারটি এরই মধ্যে আমরা পেয়েছি। আগামীকাল সাইটে নিয়ে যাওয়া হবে। এটা ঢালাই করতে এক-দুইদিন লাগবে। ঢালাই জমাট বাঁধতে আরো কিছু সময় লাগবে। সেই হিসাবে আমরা দেখেছিপদ্মা সেতুর রেলপথটি প্রস্তুত হতে এক সপ্তাহের মতো সময় লাগবে।

প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী আগস্ট বা সেপ্টেম্বরে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে। অন্যদিকে প্রকল্পের মেয়াদ অনুযায়ী (জুন, ২০২৪) ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে যশোর পর্যন্ত পুরো রেলপথটি চালুর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু সংযোগ রেলপথটিতে কী পরিমাণ যাত্রী পণ্য পরিবহন হতে পারে, তার একটি বিশ্লেষণ এরই মধ্যে তৈরি করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিআরইসি। স্বল্পমেয়াদি বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ২০৩০ সাল নাগাদ রেলপথটির ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে প্রতিদিন ১৩ জোড়া ট্রেন চলবে। একইভাবে ভাঙ্গা-কাশিয়ানী অংশে প্রতিদিন সাত জোড়া কাশিয়ানী-যশোর অংশে প্রতিদিন চলবে পাঁচ জোড়া ট্রেন। সময়ের মধ্যে ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে বছরে ৪০ লাখ, ভাঙ্গা-কাশিয়ানী অংশে বছরে ১৭ লাখ কাশিয়ানী-যশোর অংশে বছরে সাড়ে ১৩ লাখ যাত্রী পরিবহন করা হবে। ওয়ান-ডিরেকশন বা একমুখী চলাচলের ওপর ভিত্তি করে প্রাক্কলনটি তৈরি করেছে সিআরইসি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন