সপ্তাহের ব্যবধানে হিলিতে বেড়েছে ছোলার দাম

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, হিলি

আমদানীকৃত ছোলা ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

চাহিদার তুলনায় আমদানি কমায় সপ্তাহের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে আমদানীকৃত ছোলার দাম বেড়েছে। আগে প্রতি কেজি ছোলা ৭২-৭৩ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ৭-৮ টাকা বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হঠাৎ দাম বাড়ায় বিপাকে পাইকারসহ নিম্নআয়ের মানুষ।

হিলি স্থলবন্দরে ছোলা কিনতে আসা পাইকার আইয়ুব আলী বলেন, ‘‌দেশের বিভিন্ন মোকামে ক্রেতাদের চাহিদামতো বন্দর থেকে ছোলা কিনে সরবরাহ করে আসছি। বন্দরে ছোলার দাম কম থাকায় মোকামে বেশ চাহিদা ছিল। তবে এখন মোকামগুলোয় তেমন একটা ছোলার চাহিদা নেই। তার ওপর দাম বেশি হওয়ায় অনেকেই কিনছে না।’

তিনি বলেন, ‘‌রমজান শুরু হয়ে যাওয়ায় ছোলা বিক্রি নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। অল্প ছোলা আমদানি হচ্ছে। কিন্তু সে তুলনায় চাহিদা বেশি থাকায় দামও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী ছোলা কিনে সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে দাম বেশি হওয়ায় পুঁজিও বেশি লাগছে। সাধারণ মানুষকেও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।’

হিলি স্থলবন্দরে কর্মরত শ্রমিক আব্দুল মজিদ বলেন, ‘‌রমজানকে ঘিরে বন্দর দিয়ে বেশি পরিমাণে ছোলা আমদানি শুরু হয়েছিল। এতে আমাদের আয়ও বেড়েছিল। বর্তমানে আমদানি কমে যাওয়ায় আমাদের আয়ও কমে গেছে। আগে যেখানে দিনে ৬০০-৭০০ টাকা আয় হচ্ছিল, এখন তা কমে ২০০-৩০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

বন্দরের ছোলা আমদানিকারক ললিত কেশেরা বলেন, ‘‌ভারত থেকে আমদানি করে পড়তা পড়ে ৭৬-৭৭ টাকা। সেখানে দেশের বাজারে ছোলা বিক্রি হচ্ছিল ৭২-৭৩ টাকা করে। এত লোকসানের কারণে আমদানিকারকরা ছোলা আমদানি কমিয়ে দিয়েছিলেন। তবে পুনরায় আমদানি বাড়ানো হয়েছে।’

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘‌আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে জাহাজের মাধ্যমে ছোলা আমদানি হতো। মুষ্টিমেয় বড় কিছু আমদানিকারক এ কাজ করত। কিন্তু ডলার সংকটে বড় বড় এলসি দেয়া বন্ধ। ফলে ওইসব দেশ থেকে ছোলা আমদানি হচ্ছে না। তবে রমজানকে ঘিরে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক ছোলাসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের এলসিগুলো সব ব্যাংকই দিচ্ছে। আমদানিকারকরা ভারত থেকে ছোলা আমদানির জন্য এলসি খুলছেন। ছোলা দেশে প্রবেশ করতে শুরু করেছে।’

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘‌রমজান মাসকে ঘিরে স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ছোলা আমদানি খানিকটা বেড়ে গিয়েছিল। তবে রমজান শুরুর আগে যেভাবে বন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছিল সে তুলনায় এখন কম। আগে বন্দর দিয়ে ১০-১৫ ট্রাক ছোলা আমদানি হলেও বর্তমানে তা কমে তিন-পাঁচ ট্রাকে দাঁড়িয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘‌গত সোমবার বন্দর দিয়ে ১৫টি ট্রাকে ৬৫৫ টন ছোলা আমদানি হয়েছে। আমদানীকৃত এসব ছোলা যেন দ্রুত দেশে বাজারজাত করতে পারেন, এজন্য কাস্টমসের পরীক্ষণ শুল্কায়ন শেষে দ্রুত ছাড়করণ নেয়ার সব ধরনের ব্যবস্থা রেখেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ফেব্রুয়ারিতে ২১৮টি ট্রাকে ৮ হাজার ৮০ টন ছোলা আমদানি হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত ১৮ কর্মদিবসে ১৯০টি ট্রাকে ৭ হাজার ১৯০ টন ছোলা আমদানি হয়েছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন