সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে বিএনপিকে চিঠি দেয়া হয়নি —সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে (বিএনপি) প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) পক্ষ থেকে দেয়া চিঠির সঙ্গে সরকারের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে ইসি কোনো চিঠি দেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি কথা বলেন। সময় চার নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, বিএনপিকে দেয়া ওই পত্রে সংলাপের কথা উল্লেখ করা হয়নি, অনানুষ্ঠানিক আলোচনার জন্যই চিঠি দেয়া হয়েছে। মূল জিনিসটা হলো আমরা কিন্তু সংলাপে আহ্বান করিনি, সংলাপ বিষয়টি আনুষ্ঠানিক। আমরা কোনোভাবেই ওনাদের সংলাপে ডাকিনি। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলেছি, অন্তত অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় আপনারা আসতে পারেন। অত্যন্ত বিনীতভাবে আহ্বান করেছি। এটি আনুষ্ঠানিক নয়। অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় অন্তত আপনারা অংশগ্রহণ করতে পারেন। একটি চিঠি দিয়েছিলাম বৃহস্পতিবার শেষবেলায়। আমার মনে হয়, চিঠিটা তারা পেয়েছেন। আমার কাছে কোনো জবাব আসেনি। ধরে নিচ্ছি তারা পেয়েছেন। বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানোয় সরকারের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে আলোচনায় ডাকার জন্য। চিঠি কমিশনের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। সব কমিশনারই জানেন। এটি সিইসির পত্র নয়। সিইসি লিখেছেন, কিন্তু কমিশনের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে।

বিএনপিকে চিঠি দেয়ায় সরকারের কোনো কূটকৌশল নেই উল্লেখ করে সিইসি বলেন, কেউ যদি এটিকে কূটকৌশল মনে করেন, অনেকে বলতে চেয়েছেন, এটা সরকারের একটি 

কূটকৌশল। আমি আপনাদের মাধ্যমে পুরো জাতিকে অবহিত করতে চাই, আশ্বস্ত করতে চাই, পত্রের সঙ্গে সরকারের কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। কেউ যদি এটাকে কূটকৌশল হিসেবে মনে করতে চান, তাহলে এটা নির্বাচন কমিশনের কূটকৌশল হতে পারে; সরকারের নয়। আর নির্বাচন কমিশন কখনো কূটকৌশল হিসেবে কাজ করেনি। নির্বাচন কমিশন শুরু থেকেই অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক এবং কার্যকর প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করে আসছে। ইসি মনে করে, গণতন্ত্রের স্বার্থে, নির্বাচনের স্বার্থে, দলীয় গণতন্ত্রের স্বার্থে দলগুলোর নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রয়োজন। চিঠিতে আমরা বলেছি, আপনাদের কৌশল থাকলে তার ওপর ইসির কোনো মন্তব্য থাকবে না। তার পরও আমরা আলোচনা করতে চাই আপনাদের সঙ্গে। ফল ইতিবাচক হতেও পারে, নাও হতে পারে। প্রয়াস থাকবে, প্রয়াস গ্রহণ করতে বাধা থাকা উচিত নয়।

সংসদীয় গণতন্ত্রে দলীয় শাসনটাই মুখ্য বলেও মন্তব্য করেন সিইসি। তিনি বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে সরকার গঠন কখনো সম্ভব হয় না। দলগুলোর চর্চার মাধ্যমে তা বিকশিত হোক, গণতান্ত্রিক সরকার সংহত হোক, এটা চেষ্টা করা হয়েছে। এটুকুই স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্য ব্রিফিং। যদি কোনো ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকে সেটা যেন নিরসন হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমরা বৃহস্পতিবার শেষবেলায় চিঠিটা দিয়েছিলাম। আমার মনে হয় ওনারা পেয়েছেন। আমার কাছে কোনো জবাব আসেনি, ধরে নিচ্ছি ওনারা পেয়েছেন। আমরা কোনো চিঠি পাইনি। আমি চিঠি দিয়েছি, যেকোনো রেসপন্স আমাদের চিঠির মাধ্যমে দিতে হবে।...আমরা আশা করি, যেহেতু মহাসচিব মহোদয়কে চিঠি দিয়েছি। যেকোনো বক্তব্য আমাদের কাছে পত্রের মাধ্যমে আসবে, সেটাই কাঙ্ক্ষিত। এরপর আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত নেব। আগাম কোনো মন্তব্য নেই।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন