কয়লার চাহিদা বৃদ্ধি

আমদানি না উৎপাদন কোন দিকে ঝুঁকবে চীন

বণিক বার্তা ডেস্ক

মহামারী-পরবর্তী সময়ে চীনের জ্বালানি চাহিদা বেড়েছে, যা দৃশ্যমান দেশটির কয়লা খাতে। হঠাৎ কয়লার চাহিদা বাড়ায় সম্প্রতি দেখা দিয়েছে নতুন বিতর্ক। অতিরিক্ত চাহিদা পূরণে দেশটি আমদানির দিকে ঝুঁকবে নাকি দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত কয়লার দিকে তা নিয়ে বিতর্ক চলছে। কোনো বিশ্লেষক দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর দিকে জোর দিয়েছেন। তাদের কাছে দেশীয় উৎপাদন চলতি বছরের কয়লা চাহিদা পূরণে সক্ষম। তবে বিপরীত দাবি করেছেন কেউ। তাদের মতে, আমদানি করা অপরিহার্য। খবর প্লাটস।

এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংয়ের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, দেশীয় উৎপাদনের মাধ্যমে চীন আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে আনতে চাচ্ছে। অন্যদিকে এএনজেডের গবেষণায় উঠে এসেছে, বর্ধিত চাহিদা পূরণই ২০২৩ সালে কয়লা আমদানি বৃদ্ধির অনুঘটকে পরিণত হবে। চলতি বছর কয়লা আমদানি রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছতে পারে। চীন ২৯ কোটি ৩২ লাখ টন কয়লা আমদানি করেছে ২০২২ সালে, যা ২০২১ সালের তুলনায় দশমিক ২১ শতাংশ কম। ২০১৩ সালে দেশটি সর্বোচ্চ ৩২ কোটি ৭০ লাখ টন আমদানি করে।

কভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবেলায় থমকে যায় বিশ্ব অর্থনীতি। তার ওপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সূত্র ধরে বিশ্বব্যাপী বাড়তে থাকে জ্বালানির দাম। ফলে অভ্যন্তরে উৎপাদন বাড়াতে প্রস্তুতি নিতে থাকে দেশটি। জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশটির অভ্যন্তরে কয়লা উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৪৪৯ কোটি টন, যা ২০২১ সালের বার্ষিক উৎপাদনের চেয়ে বেশি। সে বছর বার্ষিক কয়লা উৎপাদন ছিল ৪০৭ কোটি টন। উৎপাদন বাড়তে থাকায় কয়লা আমদানি কমানোর দিকে গুরুত্ব দিয়েছে চীন।

এদিকে ২০২২ সালের শেষ মাত্রিকে দেশটিতে গড়ে প্রতিদিন কোটি ২০ লাখ টন কয়লা উৎপাদন হয়। তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে গড়ে দৈনিক কয়লা উৎপাদন হতো কোটি ১১ লাখ টন। অর্থাৎ উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। তার পরও এএনজেডের প্রতিবেদনে দাবি, দেশটিতে উৎপাদন কিছুটা চাপের মধ্যে রয়েছে। এজন্যই চীন গত জানুয়ারি থেকে অস্ট্রেলিয়ার কয়লা আমদানি করছে। তবে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কয়লা বাণিজ্য খুব একটা বাড়ার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করে এসঅ্যান্ডপি। কারণ চীনের জ্বালানি কোম্পানিগুলো প্রধানত নির্ভর করে দেশীয় কয়লার ওপর। দেশীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই তাদের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি বিদ্যমান। তাছাড়া দেশীয় কয়লা বিদেশী কয়লার চেয়ে স্বল্পমূল্য। ২০২২ সালে জ্বালানি সংকট দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সূত্র ধরে চীন উল্লেখযোগ্য হারে দেশীয় উৎপাদন বাড়িয়েছে। ক্রেতারাও দেশীয় খনির প্রতিই বেশি আগ্রহী। সে বছরই চীন ১০৬ গিগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প অনুমোদন দেয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন