প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে চিঠি

সুষ্ঠু নির্বাচনের গুরুত্ব পুনরাবৃত্তি জো বাইডেনের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনসাধারণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এক চিঠিতে গণতন্ত্র, সমতা, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান এবং অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতি গুরুত্বের কথাও তুলে ধরেছেন তিনি। ২১ মার্চ প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানো হয়। গতকাল বার্তার তথ্য গণমাধ্যমকে জানায় ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাস।

প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিতে জো বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমি আপনাকে এবং বাংলাদেশের জনগণকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানাই। বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতা স্বাধীনতার মূল্য গভীরভাবে বোঝে। কারণ তারা ১৯৭১ সালে নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণে এবং নিজের ভাষায় কথা বলার অধিকার পেতে সাহসের সঙ্গে লড়াই করেছিল।

বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ উভয়ই গণতন্ত্র, সমতা, মানবাধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখায় এবং অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনকে গুরুত্ব দেয় বলেও উল্লেখ করেন জো বাইডেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এমন সময়ে দাঁড়িয়ে দুই দেশের জনগণের গণতন্ত্র, সমতা, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান এবং অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতি গুরুত্বের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছি।

শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সবচেয়ে বড় অবদানকারী হিসেবে বাংলাদেশের প্রদর্শিত অঙ্গীকারকে সাধুবাদ জানিয়ে বাইডেন বলেন, মন্ত্রী পর্যায়ে গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যানের যৌথ আয়োজনের জন্য আমরা বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ তা বৈশ্বিক মহামারী নির্মূলে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নীত করেছে।

বাইডেন আরো বলেন, বাংলাদেশ উদারভাবে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে স্বাগত জানিয়েছে। সহানুভূতি উদারতার ক্ষেত্রে বিশ্বের বুকে একটি উদাহরণ স্থাপন করেছে। শরণার্থী সংকট এবং নৃশংসতায় যুক্ত অপরাধীদের জবাবদিহি করাসহ রোহিঙ্গাদের বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান খোঁজার জন্য আমরা একে অন্যের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রগতি, জনগণের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করা, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জলবায়ু সমস্যা মোকাবেলা করা, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি মানবিক প্রতিক্রিয়ায় অংশীদারত্ব এবং একটি সমৃদ্ধ, নিরাপদ, গণতান্ত্রিক স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ৫০ বছরেরও বেশি সময়ের কূটনৈতিক সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ একসঙ্গে অনেক কিছু অর্জন করেছে। উদযাপনের এই দিনে আপনি এবং বাংলাদেশের জনগণ আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। জয় বাংলা।

এর আগে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানান। বিবৃতিতে স্বাধীন বাংলাদেশের অর্জন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারত্বের বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি। ব্লিংকেন বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন সবার জন্য উন্মুক্ত, অবাধ সুষ্ঠু করার জন্য আপনাদের সঙ্গে কাজ করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতির শুরুতে ব্লিংকেন বলেন, ৫৩তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনকালে বাংলাদেশের গর্ব করার অনেক কারণ রয়েছে। দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতি, ক্রমবর্ধমান সুশিক্ষিত কর্মশক্তি এবং গতিশীল যুব জনগোষ্ঠী নিয়ে দ্রুত আঞ্চলিক নেতা হয়ে উঠছে বাংলাদেশ।

বিবৃতিতে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের আশ্রয়ের বিষয়টিও উঠে আসে। বাংলাদেশের জনগণকে উদ্দেশ করে ব্লিংকেন বলেন, গণহত্যা থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের উদারভাবে স্বাগত জানিয়ে, দুর্বল উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দিয়ে আপনারা মানবিক প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছেন।

জলবায়ু সংকটে অভিযোজন কৌশল তৈরি করে পরিবেশ রক্ষা এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা জোরদার করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নেতৃত্ব দেখিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বিবৃতিতে বলা হয়, অতিসম্প্রতি আমরা কভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াই, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং মুক্ত অবাধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রচারে একসঙ্গে বাস্তব পদক্ষেপ নিয়েছি। গণতান্ত্রিক রীতিনীতি, সুশাসন, মানবাধিকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এসবই উন্নয়নশীল, স্থিতিশীল সমৃদ্ধ সমাজের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে বিবৃতিতে ব্লিংকেন বলেন, আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ সেই সম্ভাবনা অর্জন করবে।

আগামী বছর দুই দেশের অংশীদারত্ব আরো গভীর করার জন্য উন্মুখ বলেও জানান অ্যান্টনি ব্লিংকেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন