ভয়াবহ দাবানলে স্পেনের ৩ হাজার হেক্টর বনভূমি ধ্বংস

বণিক বার্তা ডেস্ক

বছরের শুরুতেই ভয়াবহ দাবানলের মুখে ইউরোপীয় দেশ স্পেন। দেশটির পূর্ব ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলে সম্প্রতি সংঘটিত বছরের প্রথম বৃহৎ দাবানলে তিন হাজার হেক্টরের অধিক বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকারি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ দাবানলের ফলে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে ওই অঞ্চলের হাজার দেড়েক বাসিন্দা। খবর রয়টার্স।

ইউরোপীয় কমিশনের (ইসি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে ইউরোপজুড়ে সংঘটিত দাবানলে ৭ লাখ ৮৫ হাজার হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত ১৬ বছরের বার্ষিক গড়ের তুলনায় যা দ্বিগুণেরও বেশি। সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপীয় মহাদেশের দক্ষিণ অংশে বিরূপ আবহাওয়ার প্রভাবে মাটির আর্দ্রতা কমেছে। ফলে বিগত সময়ের ধ্বংসযজ্ঞের পুনরাবৃত্তি চলতি বছরও ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। 

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ব্রাসেলসে একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনাগুলো আমরা দেখছি। বিশেষ করে বছরের প্রথম দিকে। জলবায়ু যে কতটা ভয়াবহ পরিস্থিতিতে রয়েছে সেটা এখন খুবই স্পষ্ট। মানুষের জীবনে এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে। বিশেষ করে আমাদের মতো দেশগুলোকে প্রভাবিত করছে এবং ধ্বংস করে দিচ্ছে।’ 

ইউরোপীয় ফরেস্ট ফায়ার ইনফরমেশন সিস্টেমের তথ্যমতে, ২০২২ সালে স্পেনে ৪৯৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ৩ লাখ ৭ হাজার হেক্টর বনাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলের দাবানল নিয়ন্ত্রণে গত শুক্রবার রাতভর পাঁচ শতাধিক অগ্নিনির্বাপক কর্মী সেখানে কাজ করেছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে মারিয়া অ্যান্তোনিয়া মনতালাজ নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘আমাদের বাড়ি পুড়ে গেছে কিনা কিংবা আমাদের পশু-পাখি ঠিক আছে কিনা এসব দুশ্চিন্তায় ভালোভাবে ঘুমাতে পারছি না।’

ভ্যালেন্সিয়ার আঞ্চলিক প্রধান গ্যাব্রিয়েলা ব্রাভো বলেন, ‘যদিও অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা মনে করছেন, দাবানলের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয়েছেন। তবে তীব্র বাতাস এবং অত্যধিক তাপমাত্রা এটি পুনরায় সক্রিয় করতে পারে।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, তিন বছর ধরে কম বৃষ্টিপাতের ফলে স্পেনে দীর্ঘকালীন খরা দেখা দিয়েছে। স্পেনের সরকারি আবহাওয়া সংস্থা অ্যামেট জানিয়েছে, দেশটির উত্তর-পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলের আবহাওয়া এ বসন্তে স্বাভাবিকের তুলনায় শুষ্ক ও উত্তপ্ত হবে। ফলে দাবানলের ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে।

ইসির সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে শীত মৌসুমে কম বৃষ্টিপাত এবং স্বাভাবিকের তুলনায় অধিক উষ্ণতা দেখা গেছে। এ কারণে দক্ষিণ স্পেন, ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড, ব্রিটেন, উত্তর ইতালি, গ্রিস ও পূর্ব ইউরোপের কিছু অংশে খরার সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন