সেমিনারে বক্তারা

রফতানিতে এগোতে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

কৃষিপণ্য রফতানিতে বাংলাদেশের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে না পারায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কৃষিপণ্য রফতানিতে পিছিয়ে বাংলাদেশ। এছাড়া সংরক্ষণ দুর্বলতা ও উৎপাদন-পরবর্তী ক্ষতির কারণেও জাতীয় উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। রফতানিতে এগোতে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আয়োজনে ‘হারমোনাইজেশন অব ফুড সেফটি স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলেশনস অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘‌সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ কারণে নিরাপদ খাদ্য আইন করা হয়েছে, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। আমরা রফতানির বহুমুখীকরণ করতে চাই। খাদ্য রফতানিতে যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। বাংলাদেশের খাদ্যের ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে। কিন্তু নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত না করতে পারায় আমরা এ খাতে পিছিয়ে আছি। খাদ্যের মানোন্নয়ন ও বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা হলে তা এ খাতকে সমৃদ্ধ করবে।’

নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকার সমন্বিত পদক্ষেপ নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গুণগত মানসম্পন্ন ও বিশুদ্ধ খাদ্য নিশ্চিত করতে পারলে আন্তর্জাতিক খাদ্যের বাজারে প্রবেশ করা যাবে। আমি বিশ্বাস করি, যখন নিয়মনীতি কার্যকর হবে, তখন দেশের মানুষের ফুড চেইনেও নিরাপদ খাদ্য ঢুকে যাবে। আমি বিশ্বাস করি, খাদ্যকে নিরাপদ করা কারো একার দায়িত্ব না।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য সরাসরি কৃষির সঙ্গে জড়িত। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্য বাংলাদেশে কৃষিকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। আমরা চার কোটি টন ধান উৎপাদন করি। এখন আমাদের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা আমাদের অনেক খাদ্যই সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়।’

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘খাদ্য মন্ত্রণালয় খাদ্য নিরাপত্তা ও নিরাপদ খাদ্য নিয়ে কাজ করে। যদিও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের বয়স বেশি হয়নি। তবে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে আমরা আগে থেকেই কাজ করছি। চাল আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য। আবার অনেক খাদ্যশস্য আমাদের আমদানি করতে হয়। কিন্তু আমাদের অনেক খাদ্য রফতানি করার সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সবজি ও ফল। কিন্তু সার্টিফিকেশনের অভাবে আমরা সেভাবে রফতানি করতে পারি না। আমাদের উৎপাদক ও ব্যবসায়ীরা বাইরে রফতানির বিষয়ে অনেক আগ্রহী।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসন বলেন, ‘বাংলাদেশের খাদ্য আরো আন্তর্জাতিক হয়ে উঠছে। এফএওর সহায়তায় বাংলাদেশ এখন কোডেক্সের মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য করার পথে রয়েছে। এটি করার মাধ্যমে দেশ নিজেকে মানসম্পন্ন নিরাপদ খাদ্যের একটি বিশ্বস্ত সরবরাহকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ভিত্তি স্থাপন করছে।’

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের মুখপাত্র মাউরিজিও চিয়ান, এফএও আন্তর্জাতিক খাদ্যনিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ সঞ্জয় দেব, বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের সহযোগিতা প্রধান মাউরিজিও সিয়ানসহ প্রমুখ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন