আলোকপাত

জাতিসংঘের সিডও সনদ ও বাংলাদেশে নারীর আর্থসামাজিক অগ্রগতি

হান্নানা বেগম

৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস—নারী তথা বিশ্ব সমাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্ববহ ও তাৎপর্যপূর্ণ। দিবসটির সূত্রপাত হয় ১৮৫৭ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি কারখানার নারী শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, শ্রমঘণ্টা ১৬ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৮ ঘণ্টা নির্ধারণ এবং কর্মপরিবেশ উন্নয়নের দাবিতে, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। ১৯১০ সালে সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের প্রস্তাবক্রমে ৮ মার্চকে ‘নারী দিবস’ হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে প্রথমবারের মতো ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে উদযাপন করে। এর পর থেকে জাতিসংঘভুক্ত প্রতিটি দেশে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে উদযাপিত হচ্ছে। বাংলাদেশেও নারী সমাজসহ সমাজের সচেতন অংশ প্রতি বছর দিবসটি গুরুত্ব ও মর্যাদার সঙ্গে পালন করে আসছে।

সাধারণত এ দিনে আমরা বিশ্ব নারী সমাজের অগ্রগতি মূল্যায়ন করে থাকি। এক্ষেত্রে প্রথমেই আমি তুলে ধরতে চাই কী বলেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব। দেখা যাচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আগে (৬ মার্চ, ২০২৩) এক বক্তব্যে তিনি বলেন, নারী-পুরুষের সমতা অর্জনে এখনো বহু পথ বাকি। বর্তমানে যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে, তাতে এ সমতা অর্জনে ৩০০ বছরও লাগতে পারে। এন্তোনিও গুতেরেস বলেন, মাতৃমৃত্যু, বাল্যবিবাহ, মেয়েদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়াসহ নারীদের নানা পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে নারীদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার, সুশীল সমাজকে এ বিষয়ে ‘সম্মিলিত পদক্ষেপ’ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব। 

জাতিসংঘের নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও)

১৯৭৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। ইংরেজিতে একে বলা হয় Convention on the Elimination of All Forms of Discrimination Against Women। বাংলায় বলা হয়, নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য বিলোপ সনদ। সংক্ষেপে বলা হয় সিডও (CEDAW)। 

প্রাসঙ্গিকভাবে মনে রাখার বিষয়, ১৯৬০-এর দশকে জাতিসংঘ প্রথম তার অতীত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন ও পুনঃরূপায়ণ শুরু করে দশকওয়ারিভাবে। জাতিসংঘের প্রথম দশকের (১৯৬০-৭০) উন্নয়ন তত্ত্ব ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে নারীরা ছিল বহু দূরে। নারীদের মূলত দেখা হতো মা ও গৃহবধূ রূপে। পারিবারিক কল্যাণের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। সত্তরের দশকের শুরুতে একদল উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ মতামত উপস্থাপন করেন যে তৃতীয় বিশ্বে যে উন্নয়ন প্রক্রিয়া চলছে, তাতে নারীর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ নেই। আর নারীর সরাসরি অংশগ্রহণ ছাড়া বিশ্বজগতের যাবতীয় বিস্ফোরক সমস্যা যেমন জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য সমস্যার সমাধান, শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তোলা কোনোটির সফলতা সম্ভব নয়। এ ধারণা উন্নয়ন চিন্তার ক্ষেত্রে এক বিশেষ ধারা সৃষ্টি করে। তাদের মতে, কোনো উন্নয়নের সুফল ঘরে বসা নারীর কাছে আপনাআপনি চুইয়ে পড়বে না। তাকে মূল স্রোতধারায় উন্নয়নকাজের অংশীদার হতে হবে, তাকে হতে হবে উন্নয়নের চালিকাশক্তি। তবেই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে। এ পটভূমিকায় জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালকে নারীবর্ষ হিসেবে ঘোষণা করে। ফলে নারী ইস্যুটি মানবাধিকার হিসেবে বিবেচিত হতে থাকে এবং সামাজিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিণত হয়।

সিডও সনদের ধারা: সিডও সনদ ৩০টি ধারাসংবলিত। এ ৩০টি ধারা তিন ভাগে বিভক্ত। 

ক) ধারা ১ থেকে ১৬ নারী-পুরুষের সমতা আনয়ন সম্পর্কিত। খ) ধারা ১৭ থেকে ২২ সিডও ও এর কর্মপন্থা ও দায়িত্ব্ববিষয়ক।  গ) ধারা ২৩ থেকে ৩০ সিডও ও এর প্রশাসন-সংক্রান্ত।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গ: বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৪ সালে এ সনদে স্বাক্ষর করে। কিন্তু সিডও সনদ বাংলাদেশ অনুমোদন করলেও তা পরিপূর্ণভাবে করেনি। বাংলাদেশ সরকার সিডও সনদের ধারা-২, ১৩(ক), ১৬.১(গ) ও (চ) ধারাগুলোয় আপত্তি জানিয়ে তা অনুমোদন করেনি। পরবর্তী সময়ে সরকার ১৩(ক), ১৬.১(চ) অনুচ্ছেদ থেকে আপত্তি তুলে নেয়।

বাংলাদেশের আপত্তি দেয়া দুটি ধারা

ধারা-২: বৈষম্য বিলোপ করে নারী ও পুরুষের মধ্যে সমতা স্থাপনের নীতিমালা গ্রহণ। প্রতিটি দেশের জাতীয় সংবিধান, আইন-কানুন ও নীতিমালায় নারী ও পুরুষের সমতার নীতিমালা সংযুক্তকরণ ও তার প্রয়োগ নিশ্চিতকরণ। নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক আইন-কানুন, রীতিনীতি, আচার-ব্যবহার নিষিদ্ধ করা। সব ক্ষেত্রে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ। আদালত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নারীকে সব ধরনের বৈষম্য থেকে রক্ষা করা। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নারীর প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন রোধ করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া।

ধারা-১৬.১(গ): বিবাহ এবং বিবাহ বিচ্ছেদকালে নারী ও পুরুষের একই অধিকার ও দায়দায়িত্ব নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশের অষ্টম সাময়িক প্রতিবেদনের ওপর সিডও কমিটির সুপারিশ (২০১৬):

সুপারিশকৃত সমাপনী অভিমত—

সংরক্ষণ: কমিটি এ মর্মে অসন্তোষ ব্যক্ত করছে যে পূর্ববর্তী প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও সরকার এখন পর্যন্ত সিডও সনদের ২ ও ১৬.১(গ) ধারার ওপর থেকে সংরক্ষণ প্রত্যাহার করেনি। সরকারের এ অবস্থান সিডওর মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।

আইনগত কাঠামো: কমিটি উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে যে দেশে এখনো বৈষম্যমূলক আইন ও বিধি রয়ে গেছে। যেমন বিভিন্ন আইনে ছেলে শিশু ও মেয়ে শিশুর সংজ্ঞা নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন বয়সের উল্লেখ রয়েছে। এর ফলে বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধের আওতায় বিবেচনা করা যাচ্ছে না, নারী নির্যাতনবিরোধী বিশেষ ট্রাইবুন্যালে নারীর প্রতি বৈষম্যসংক্রান্ত মামলাগুলোর বিচার করা সম্ভব হচ্ছে না। 

নারীর উন্নয়নে জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো: কমিটি উল্লেখ করে যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় নারীর অধিকার বাস্তবায়নে ও সরকারের সব বিভাগে জেন্ডার মূলধারাকরণের কাজের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। যদিও কমিটি হতাশার সঙ্গে লক্ষ করছে কার্যকরভাবে নারীর অধিকার ও জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠায় মন্ত্রণালয়টির অস্পষ্ট কাজের এখতিয়ার, দুর্বল প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো এবং প্রয়োজনীয় জনবল, কারিগরি ও আর্থিক সম্পদের অভাব রয়েছে। 

প্রচলিত গৎবাঁধা ধারণা এবং ক্ষতিকর চর্চাগুলো

পুরুষের পাশাপাশি নারীর পূর্ণ মানবাধিকার উপভোগ ও জীবনের সব ক্ষেত্রে তাদের সমানাধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক যাবতীয় গৎবাঁধা বৈষম্যমূলক ধারণাগুলোকে নির্মূল করার ব্যাপারে রাষ্ট্রের যথেষ্ট প্রচেষ্টা না থাকায় কমিটি তার হতাশা ব্যক্ত করে।

জেন্ডারভিত্তিক নারী নির্যাতন: কমিটি উদ্বিগ্ন যে বাংলাদেশে নারী ও মেয়ে শিশুর বিরুদ্ধে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা যার মধ্যে ধর্ষণ, ফতোয়া ও যৌতুকের কারণে নির্যাতন, পরিবারে ও জনজীবনে যৌন হয়রানির মতো ঘটনা এখনো বন্ধ হয়নি। জেন্ডারভিত্তিক নির্যাতনের মাত্রা বোঝার জন্য জরিপ/গবেষণা এবং জেন্ডার বিভাজিত তথ্য-উপাত্ত নিয়মিত হালনাগাদ করা হচ্ছে না। 

পাচার এবং পতিতাবৃত্তির মাধ্যমে শোষণ: কমিটি দেশের নারী ও মেয়েশিশু পাচারের অব্যাহত ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছে। শুধু তা-ই নয়, বাংলাদেশ নারী পাচারের একটি ট্রানজিট বা পথ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২ এবং এর কর্মপরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। কিন্তু কমিটি উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে যে ২০১২ সালের পর থেকে কতজন পাচারকারীর বিচার ও সাজা হয়েছে এ ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই। 

রাজনৈতিক ও জনজীবনে নারীর অংশগ্রহণ: জাতীয় সংসদে নারীদের সংরক্ষিত আসনসংখ্যা ৫০তে উন্নীত করার উদ্যোগকে কমিটি স্বাগত জানায়। তবে কমিটি উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে যে কেবল অল্পকিছু নারী রাজনৈতিক ক্ষমতার উচ্চপর্যায়ে যেতে পারছে; কিন্তু সাধারণভাবে সংসদে, বিচার বিভাগে, প্রশাসনে এবং ব্যক্তি খাতে নারীদের প্রতিনিধিত্ব এখনো কম। 

বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)

২০১৬ সালের অক্টোবরে প্রণীত বৈদেশিক সাহায্য: আইন অনুযায়ী সরকার ইচ্ছা করলেই নারী সংগঠনসহ সুশীল সমাজের সংস্থাগুলোর ওপর বিশেষ করে তাদের অর্থায়নের ব্যাপারে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারে যা এনজিওদের বিনামূল্যে নিবন্ধন এবং কর্মসূচি পরিচালনায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। কমিটি উদ্বেগের সঙ্গে এটাও লক্ষ করছে যে সরকারের সমালোচনাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার ক্রমবর্ধমান প্রবণতা বেসরকারি সংস্থাসহ যেসব সংস্থা মানবাধিকার ও নারীর অধিকার নিয়ে কাজ করে তাদের কর্মকাণ্ডকে আরো সীমিত করে ফেলতে পারে।

জাতীয়তা: কমিটি সরকারকে নাগরিকত্ব আইনের কার্যকর বাস্তবায়নের সুপারিশ করছে যাতে বাংলাদেশী মাতা-পিতার ঔরসে জন্ম নেয়া সব শিশু বাংলাদেশী নাগরিকত্ব লাভ করতে পারে। কমিটি আরো সুপারিশ করছে যেন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে জন্ম নেয়া সব শিশুর জন্মের পর পরই নিবন্ধন করা হয়।

শিক্ষা: প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠা হওয়ায় কমিটি সরকারকে সাধুবাদ জানায়। তবে কমিটি কিছু বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। 

কর্মসংস্থান: কমিটি সরকারের শ্রম আইন ও নীতি ২০১৩ প্রণয়নের উদ্যোগকে স্বাগত জানায়। এতে মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস করা হয়েছে। কিন্তু কমিটি উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করেছে যে আইনটি অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ২০১৩ সালের পর থেকে রেজিস্ট্রেশনের হার বৃদ্ধি পেলেও শ্রমিকদের ইউনিয়ন করার ক্ষেত্রে আইনগত প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, বিশেষ করে নারীনির্ভর শিল্প-কারখানা ও কৃষিতে।

গৃহশ্রমিক নারী: কমিটি সুপারিশ করছে যে গৃহশ্রমিকদের কাজের পরিবেশ যাচাইয়ে ফ্যাক্টরিতে নিয়মিত পরিবীক্ষণ প্রক্রিয়া চালু করতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত করতে হবে। গৃহশ্রমিকদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে তাদের বিনামূল্যে আইনি সহযোগিতা প্রদান করতে হবে। 

স্বাস্থ্য: অল্প বয়সে বিয়ে ও মা হওয়ার কারণে দেশে মাতৃমৃত্যুর উচ্চহার এবং গর্ভপাতকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করায় কমিটি উদ্বেগ প্রকাশ করে। 

নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন : গ্রামীণ নারীদের অপ্রতুল ঋণ, সরকারি ব্যাংকের লোন সুবিধা না থাকা এবং নারী কৃষকদের কৃষক হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়ায় কমিটি উদ্বেগ প্রকাশ করে।

গ্রামীণ নারী: কমিটি সুপারিশ করছে যাতে সরকার গ্রামীণ নারীর ক্ষমতায়নে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক পরিষেবা, ভূমির মালিকানা ও উত্তরাধিকারীর এবং বিশুদ্ধ খাবার পানি ব্যবহারের সুযোগ নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেবে। 

সুবিধাবঞ্চিত নারী: কমিটি সরকারের প্রতি সুপারিশ করছে যে বিশেষ দুর্বল জনগোষ্ঠীর মেয়েশিশুসহ নারী ও মেয়েশিশুদের প্রতি সব ধরনের বৈষম্য, জেন্ডারভিত্তিক নির্যাতন রোধে সাময়িক বিশেষ ব্যবস্থাসহ সর্বাত্মক আইন প্রণয়ন এবং আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

বিয়ে ও পারিবারিক সম্পর্ক: কমিটি সুপারিশ করেছে যে সরকার বর্তমানে প্রচলিত আইনগুলোর পর্যালোচনা করবে এবং একটি সর্বজনীন পারিবারিক আইন চালু করবে যা সব ধর্ম ও বিশ্বাসের লোকদের ক্ষেত্রে একইভাবে প্রযোজ্য হবে। এতে বিয়ে এবং তালাকের সময় সম্পত্তিতে নারীর সমানাধিকার নিশ্চিত করবে।

তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ: সিডও সনদের সব বিষয়ের ওপর তথ্যের যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে সে ব্যাপারে কমিটি উদ্বেগ প্রকাশ করছে। 

বেইজিং ঘোষণা ও প্ল্যাটফরম ফর অ্যাকশন: কমিটি পরামর্শ দিচ্ছে যাতে সিডও সনদের ধারাগুলোর বাস্তবায়নে সরকার বেইজিং ঘোষণা বা প্লাটফর্ম ফর অ্যাকশনকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে।

টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডা ২০৩০: কমিটি সরকারকে এ মর্মে আহ্বান জানাচ্ছে যেন সরকার টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডা ২০৩০ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় সিডও সনদের ধারা অনুযায়ী সর্বাত্মক জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করে।

প্রচার: সিডও সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে কমিটি রাষ্ট্রপক্ষকে অনুরোধ জানাচ্ছে যেন বর্তমান সমাপনী অভিমতগুলো দেশের রাষ্ট্রভাষায় সব পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ করে সরকার, মন্ত্রণালয় এবং বিচার বিভাগের কাছে তুলে ধরে।

শেষের কথায় বাংলাদেশ সরকার সিডওর অষ্টম সাময়িক প্রতিবেদন জমা দেয়ায় কমিটি সন্তোষ প্রকাশ করে। 

হান্নানা বেগম: সাবেক অধ্যক্ষ, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

সহসভাপতি, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন