মাখোঁর পেনশন সংস্কার ঘিরে সহিংস ফ্রান্স

বণিক বার্তা অনলাইন

ছবি: রয়টার্স

প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর পেনশন সংস্কার ঘিরে ফ্রান্সে চলমান বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। সর্বশেষ দিনে দেশটিতে রাস্তায় নামে লাখ লাখ জনতা। এ সময় আহত হয় দেড় শতের মতো পুলিশ। খবর রয়টার্স।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর বোর্দোর টাউন হল ভবনের সামনের গেটে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। এরপর কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে।

সম্প্রতি জাতীয় সংসদে ভোটাভুটি ছাড়াই পেনশনসংক্রান্ত আইন সংস্কার করেছে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ সরকার। নতুন আইনে অবসরকালীন বয়স ৬২ থেকে দুই বছর বাড়িয়ে ৬৪ বছর করা হয়। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয় দেশটিতে।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন বলেছেন, সারা দেশে ১৪৯ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে থেকে ১৭২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, মধ্য প্যারিসে বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ ছিল। কিন্তু দাঙ্গাকারীদের একটি দল দোকানের জানালা, রাস্তার আসবাবপত্র ভাংচুরের পাশাপাশি ম্যাকডোনাল্ডসের একটি রেস্তোরাঁয় লুটপাট চালায়। দাঙ্গা পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড ছুড়ে তাদের পিছু হটাতে চাইলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। 

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল ফ্রান্সজুড়ে ১০ লাখেরও বেশি ও রাজধানী প্যারিসে এক লাখ ১৯ হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নামে পুলিশ সারাদেশ থেকে ৮০ জনকে গ্রেফতার করেছে।

দেশব্যাপী বিক্ষোভের নবম দিন চলছে ফ্রান্সে। এর জের ধরে ব্যাহত হচ্ছে ট্রেন ও বিমান চলাচল। সরকার পেনশন সংস্কারের আইন প্রণয়নের কিছু দিন পর শিক্ষকসহ অনেক পেশাজীবী চাকরি থেকে অব্যহতি দেন। 

গত দুই মাস ধরে অবসর নেওয়ার বয়সসীমা সংস্কারের ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে এ প্রস্তাবের পক্ষে ও বিপক্ষে জনমতও গঠিত হয়। সরকারপন্থীদের দাবি পেনশনের বয়সসীমা বাড়ালে দেশের সামগ্রিক কর্মসংস্থানে কোনো চাপ পড়বে না। বরং প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে অচলাবস্থা শুরু হয়েছে, তার সমাধান মিলবে। তবে পার্লামেন্টের বিরোধী দলগুলো বলছে, কয়েকটি ট্রেড ইউনিয়ন এবং জনসাধারণের একাংশ সরকারের এ প্রস্তাব নিয়ে একমত হতে পারেনি।

সব মিলিয়ে পেনশন ঘিরে চলমান আন্দোলন এখন বড় সংকটের দিকে মোড় নিচ্ছে। বিক্ষোভকারীদের অনেকেই শুধু সংস্কার বাতিল নয় বরং অবসরকালীন বয়স কমিয়ে ৬০ বছর করার দাবি করছেন। ২০১০ সালের আগে যেমনটা ছিল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন