মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ

জাপানের ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের প্যাকেজ

বণিক বার্তা ডেস্ক

উচ্চমূল্যস্ফীতি ও পারিবারিক ব্যয় বৃদ্ধির জের ধরে জাপানের জনজীবনে বিরাজ করছে অস্থিরতা, যা মোকাবেলায় মজুরি বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থা। স্বস্তি ফিরছে না তবু। চলমান মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাষ্ট্রীয় বাজেটের রিজার্ভ ফান্ড থেকে অতিরিক্ত ২ ট্রিলিয়ন ইয়েন (দেড় হাজার কোটি ডলার) ব্যয় করতে যাচ্ছে দেশটি। এ তহবিলের অর্থ চলতি হিসাব বছর থেকে মার্চ পর্যন্ত স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোকে দেয়া হবে। পাশাপাশি নতুন মূল্যস্ফীতি-ত্রাণ প্যাকেজের অংশ থেকে তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস বিল বাবদ ভতুর্কিও দেয়া হবে। সোমবার জাপান সরকারের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। খবর কিয়োদো এজেন্সি। 

বিশেষ এ ত্রাণ প্যাকেজের আওতায় জাপান সরকার প্রতিটি নিম্নআয়ের পরিবারকে ৩০ হাজার ইয়েন এবং তাদের প্রতি জন শিশুসন্তানের জন্য অতিরিক্ত ৫০ হাজার ইয়েন দেয়ার পরিকল্পনা করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও কোমেতো জোট স্থানীয় নির্বাচনের আগে পরিবারের ওপর চেপে বসা মূল্যস্ফীতির যন্ত্রণা প্রশমনে অতিরিক্ত পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাকে অনুরোধ করে। সরকার ক্ষমতাসীন দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে প্যাকেজের আকার চূড়ান্ত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মুখ্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিরোকাজু মাতসুনো নিয়মিত সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘মানুষের জীবিকা ও ব্যবসা সুরক্ষার জন্য আমরা অতিরিক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ ও দ্রুত বাস্তবায়ন করব।’
জাপানের গ্রামীণ পরিবারগুলোর মধ্যে অনেকেই এলপি গ্যাস ব্যবহার করে। সরকার এরই মধ্যে শহর ও গ্রামীণ পরিবারগুলোর পারিবারিক ইউটিলিটি বিল কমিয়েছে। এছাড়া পেট্রল ও কেরোসিনের দাম যাতে দ্রুত না বাড়ে, সে লক্ষ্যে তেলের পাইকারি বিক্রেতাদের ভর্তুকিও দেয়া হচ্ছে।
আগের প্যাকেজের অংশ হিসেবে সরকার স্বল্প আয়ের ও শিশু আছে, এমন পরিবারগুলোর জন্য নগদ অর্থ দেয়। জানুয়ারিতে জাপানের ভোক্তা মূল্য এক বছরের আগের তুলনায় বেড়েছে ৪ দশমিক ২ শতাংশ, যা চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।
উচ্চজ্বালানি খরচের বিপরীতে ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়া ইয়েন দেশটির মূল্যস্ফীতির গতিকে ত্বরান্বিত করছে। ফলে জাপান সরকার চলতি বছর সামগ্রিকভাবে ইউটিলিটি বিলের দাম কমাতে গিয়েও সরে দাঁড়ায়।
তবে নতুন পরিকল্পনার অধীনে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে স্থানীয় পৌরসভাগুলোকে ১ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ইয়েন বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। এ তহবিল থেকে এলপি গ্যাসের দামবিষয়ক ভর্তুকিসহ নিম্নআয়ের পরিবারগুলোকে ৩০ হাজার ইয়েন নগদ দেয়া হবে। এছাড়া সরকার কম আয় ও শিশুসন্তান রয়েছে এমন পরিবারগুলোর প্রতি জন শিশুর জন্য ৫০ হাজার ইয়েন প্রদান বাবদ প্রায় ১ ট্রিলিয়ন জাপানি মুদ্রা ব্যয়ের পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।
জাপানের রাষ্ট্রীয় বাজেটের রিজার্ভ ফান্ড মূলত জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবহারের জন্য বরাদ্দকৃত। তাছাড়া এ অর্থ ব্যয়ের জন্য সরকারের সংসদীয় অনুমোদনেরও প্রয়োজন হয় না।
জাপানের আর্থিক স্বাস্থ্য বড় ধরনের সংকটের সম্মুখীন। তাই সরকার রিজার্ভ তহবিল ব্যবহার করে কভিড-১৯ মহামারীর মতো চলমান উচ্চমূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন