
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ই-মেইল সার্ভার হ্যাক হয়েছে। পাঁচদিন ধরে তা হ্যাকারদের দখলে রয়েছে। ১০ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে হ্যাকাররা বিমানের কাছে অনেক টাকা দাবি করেছে। তা না করলে সব তথ্য ফাঁস করে দেয়া হবে বলেও হুমকি দিচ্ছে তারা।
এ ঘটনায় এরই মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিমানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত শুক্রবার বিমানের মেইল সার্ভার র্যানসমওয়্যার দ্বারা আক্রান্ত হয়। এর পর থেকেই বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ই-মেইলে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি বন্ধ আছে বিমানের নিজেদের মেইল থেকে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক যোগাযোগ। ই-মেইল সার্ভারের মাধ্যমে বিমানের যোগাযোগের তথ্যগুলো ফাঁস হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে। বিমানের অভ্যন্তরীণ কেনাকাটা, শিডিউল, বিলিংসহ অন্যান্য বিষয়ে ই-মেইলের মাধ্যমেই যোগাযোগ করেন কর্মকর্তারা। পাঁচদিন ধরে চেষ্টা করেও হ্যাকারদের কাছ থেকে তা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, র্যানসমওয়্যার হলো বিশেষ এক ধরনের ম্যালওয়্যার, যা কম্পিউটার বা সার্ভারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে। তখন সেই সার্ভারে ঢুকতে গেলে কিংবা ফাইল খুলতে গেলে মুক্তিপণ দাবি করে হ্যাকাররা।
এসব বিষয়ে গতকাল রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ‘ই-মেইল সার্ভার হ্যাকের ঘটনাটি তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।’ হ্যাকারদের আক্রমণের ফলে কোনো তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনো
বিষয়গুলো সেভাবে জানা যায়নি।’
তবে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শফিউল আজিমের দাবি, র্যানসমওয়্যার দ্বারা বিমানের ই-মেইল সার্ভার আক্রান্ত হয়নি। হয়তো কারো পেনড্রাইভ থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে। তবে হ্যাকারদের কাছে বিমানের সব তথ্য চলে যাওয়ার আগেই তা সুরক্ষা করা হয়। বর্তমানে বিকল্প পদ্ধতিতে বিমানের কার্যক্রম চালু আছে বলেও জানান সংস্থাটির এমডি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিমানের একজন পরিচালক জানিয়েছেন, হ্যাকাররা বারবার লিংক পাঠাচ্ছে। তাদের দাবি, ওই লিংকে ক্লিক করলে বিষয়টির সমাধান হবে। তারা এখন বিপুল পরিমাণ অর্থ দাবি করেছে। প্রতিষ্ঠানটির ই-মেইল বন্ধ হওয়ায় কাজে অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছে।