সম্পত্তিতে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় আইন ও সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন

সাংগাত ও বণিক বার্তার যৌথ উদ্যোগে ২০ আগস্ট ২০২২ তারিখে ‘সম্পত্তিতে নারীর অবস্থান (সম্পত্তির ওপর নারীর নিয়ন্ত্রণ)’ শীর্ষক একটি অনলাইন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আলোচকদের বক্তব্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে এ ক্রোড়পত্র প্রকাশ হলো

দেওয়ান হানিফ মাহমুদ 

সম্পাদক

বণিক বার্তা

প্রথমত, নারী যেটুকু সম্পত্তি পায়, তার ওপর নিজের অধিকার বা নিয়ন্ত্রণ কতটুকু তা প্রশ্নসাপেক্ষ। আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই দেখেছি, আমার মা বা শাশুড়ি উত্তরাধিকার সূত্রে যতটুকু সম্পদ পেয়েছিলেন, তার খুব কমই ভোগ করতে পেরেছেন। সেগুলো তারা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। দ্বিতীয়ত, যে বিষয়ে আলোচনা হওয়া জরুরি তা হলো সম্পত্তি বিক্রি করতে চাইলে নারীকে কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয় কিনা। তৃতীয়ত, প্রাপ্ত সম্পত্তির ওপর কোনো ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে গেলে কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় কিনা। চতুর্থত, যে প্রপার্টি (সম্পত্তি) তার আছে, সেটা নিয়ে ব্যাংকঋণ পেতে তার কোনো সমস্যা হয় কিনা।

আমরা জানি, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নারী বড় ধরনের শক্তি। বলা যায়, কৃষি ও শিল্প সব জায়গায় নারী এখন অর্থনৈতিক শক্তি। কৃষিতে পুরুষ শ্রমিকদের অবদান কমে যাচ্ছে। ওই স্থান দখল করছে নারীরা। কিন্তু জমির ওপর তাদের অধিকার নেই বললে চলে। ভূমির ওপর তাদের অধিকার যদি না থাকে ভবিষ্যতে কৃষির উৎপাদন বাড়ানো কঠিন হবে। শিল্পের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ক্ষেত্রেও তাই।


খুশী কবির

উপদেষ্টা, সাংগাত 

সমন্বয়কারী, নিজেরা করি

সাংগাত দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের সমন্বয়ে তৈরি একটি নারীবাদী সংগঠন। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কমলা ভাসিন। যিনি এক বছর আগে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। সাংগাতের দায়িত্ব আমার ওপর অর্পণ করে গেছেন তিনি। তিনি একটা স্লোগানের আলোকে ক্যাম্পেইন করতে চেয়েছিলেন। সেটা হলো ‘‌প্রপার্টি ফর হার’। আমরা শুধু উত্তরাধিকার সম্পত্তি নিয়ে কাজ করছি না। সম্পত্তির একটি সার্বিক বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। 

সরকারের নীতি ও আইন আছে যে খাসজমি ভূমিহীনরা পাবে, ক্ষেতমজুররা পাবে। আর খাসজমি বিতরণের যে নীতিমালা করা হয়েছিল, সেখানে খাসজমি দেয়া হবে স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের নামে। রেজিস্ট্রেশনও উভয়ের নামে করা হবে।

আমার জানার খুবই আগ্রহ যৌথভাবে যে জমি দেয়া হচ্ছে, যখন বিচ্ছেদ হয়ে যায়, তখন খাসজমিতে নারীর কতুটুকু অধিকার থাকে। দেখেছি যে নামে জমি তার থাকে, কিন্তু প্রকৃত অর্থে তার কোনো অধিকার থাকে না। এটি চরম বৈষম্য। অনেক জায়গায় নারী জমি দখলে রেখে ফসল ফলিয়ে খেতে পারেন না। পুত্রসন্তান না থাকলে তাকে কিছুই দেয়া হচ্ছে না। আসলে আইন থাকলেও, নীতিমালা থাকলেও তার প্রয়োগ আর মানসিকতার দিক দিয়ে বড় শূন্যতা বিরাজ করছে।

লুৎফুন্নাহার

কৃষি ও মৎস্য উদ্যোক্তা

আমি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হিসেবে কাজ করি। আমার পরিবার হলো একক নারীপ্রধান পরিবার। আমি মাছের চাষ করি এবং আমার দুটি পোলট্রি ফার্ম আছে। ছেলেসন্তানদের নিয়ে সবকিছু আমিই দেখাশোনা করি। ব্যবসা করতে গিয়ে আমার টাকা প্রয়োজন হয়। ভাবলাম, আমরা যেহেতু কৃষি পরিবার তাই কৃষিব্যাংক থেকে লোন আনলে একটু উপকার হবে। ঋণের জন্য বাংলাদেশ কৃষিব্যাংক চান্দিনা শাখায় গিয়েছি। ব্যাংকের মাঠকর্মীরা বললেন, আপনি নারী মানুষ, কী ব্যবসা করবেন, ফিশারিজ! আমি বললাম যে পুরুষ মানুষ মাছের ব্যবসা করতে পারলে আমি কেন পারব না। আমার ফিশারিজ আছে। জায়গা আমার নামে। তারা বললেন, আপনার স্বামী? আমি বললাম, আমার স্বামী তো মারা গেছে, আমি ব্যবসা করি। আমার টাকা প্রয়োজন, টাকা দেয়া লাগবে। তারা বললেন, নারী মানুষ কী করবেন? এই-সেই বলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকলেন। পরে আরেকদিন গেলাম। আচ্ছা ঠিক আছে দেখা যাক, আপনার কী কী ডকুমেন্টস আছে? আমার জমি আছে, কাগজ আছে, দলিল আছে। আমি বলেছি, টাকা নিতে যেসব ডকুমেন্টস লাগবে আমি সব দেব। তারা বললেন, নিয়ে আসেন। একদিন নিয়ে গেলাম। তারা বললেন, টাকা আপনি পাবেন, তবে আপনার গ্যারান্টর লাগবে। গ্যারান্টর কাদের দেয়া লাগবে? আমার দুই ছেলে, দুই মেয়ে। তারা বললেন, মেয়েরা না, আপনার দুই ছেলে গ্যারান্টর হিসেবে লাগবে। আমার যেহেতু টাকা প্রয়োজন, গ্যারান্টর লাগলে দেব।

আমার এক ছেলে বাড়িতে থাকে, আরেক ছেলে ঢাকা নটর ডেম কলেজে পড়ে। ছেলেকে চান্দিনায় আনিয়েছি। প্রায় ছয় মাস আমাকে ঘোরাঘুরি করতে হয়েছে। তারপর তারা মাছ চাষ দেখতে গেল। বিভিন্ন জায়গা থেকে খবর নিল, আমি ব্যবসা করি কিনা। আমি টাকা ফেরত দিতে পারব কিনা। তার পরে তারা রিপোর্ট দিল যে ঠিক আছে, ঋণ দেয়া যাবে। মাছ নিয়ে বাজারে গেলাম, সেখানেও একই অবস্থা। নারী মানুষ আপনার স্বামী কই? আপনি মাছ বেচবেন? আমি নারী বলে ব্যবসা করতে পারব না? তাও বাজারমূল্য পাইনি, কম দরে মাছ বেচতে হয়েছে। বাজারের শেষ মাথায় গিয়ে আমার জায়গা হয়, সব পুরুষের দখলে। ১০ হাজার টাকার পণ্য ৫ হাজার টাকা বলে। অথচ সেটা বাজারে ৮-১০ হাজার চলে।

কোহিনুর বেগম

নারী উদ্যোক্তা

আমি একজন ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তা। খুব ছোটবেলায় আমার বিয়ে হওয়ায় লেখাপড়ার ইচ্ছা থাকলেও তা আর হয়ে ওঠেনি। আমার মা ছিলেন একজন ভূমিহীন সমিতির সদস্য। তার সঙ্গেই সেখানে যাতায়াত করি। কিন্তু আমরা নারী বলে, সমাজ ও পরিবারে এত অবহেলিত তা বলার মতো নয়। একটু বুঝতে শেখার পর মায়ের সঙ্গে হাতের কাজ (সেলাই) শুরু করি। এরপর আমিও ভূমিহীন সমিতির সঙ্গে জড়িত হই। সেখান থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষণে গিয়ে নারী উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে দেখেছি। তখন ভাবতে থাকি নারীরা অনেক কিছু করতে পারে। তখন আমিও উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতে থাকি। কিন্তু আমার পরিবার থেকে বাধা আসে। তারা বলে তুমি মেয়ে তুমি ঘরের কাজ করো। সন্তান লালন-পালন করো। তখন আমার মা আমাকে সমর্থন দেন। তার পরামর্শে এগিয়ে যাই। এরপর আমি একটা এনজিও থেকে মাত্র ৬ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করি। এ টাকা দিয়ে আমি কিছু পাট ও সুতা কিনি আর কিছু টাকা কিস্তির জন্য রেখে দিই। এরপর ছোট ছোট খেলনা, শো-পিস, পাটের ছোট ব্যাগ তৈরি করি। কিন্তু এগুলো বিক্রি করার কোনো দোকান নেই। তখন আমার আব্বা ঘরটা রাস্তার ধারে হওয়ায় সেখানে এক পাশে জায়গা করে দেন। সেখানে পণ্যগুলো ঝুলিয়ে রাখি বিক্রির জন্য। আর বিভিন্ন অফিসে, স্কুলে গিয়ে বিক্রির জন্য প্রচার করতে থাকি। প্রথম দিকে কিছু ব্যাগ উপহার দিয়ে পরিচিত হয়েছি। এভাবে কিছুদিন যাওয়ায় পর আমরা মেলায় পণ্য বিক্রি করতে যাই। কিন্তু রেজিস্ট্রেশন নম্বর না থাকায় মেলায় অংশ নিতে অসুবিধা হয়। সব নিয়ম অনুসরণ করে ২০০৯ সালে আমি আবেদন করি। কিন্তু তারা আমাকে অনেক নিয়মের কথা বলে। একপর্যায়ে তারা আমাকে ১০ হাজার টাকা দিতে বলে। তখন আমি বলি, লোন বা ধারদেনা করে আমি ৫ হাজার টাকা দিতে পারব। তারা বলে, হবে না। তখন বাড়িতে এসে আমি আমার আব্বার একটা গরু ছিল সেটা ৬ হাজার টাকায় বিক্রি করে সেই টাকা তাদের হাতে দিয়ে আসি। তার পরও পাঁচ বছর অনেক হয়রানির পর ২০১৩ সালে আমি রেজিস্ট্রেশন নম্বর হাতে পাই। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমি সরকারি কোনো আর্থিক সহায়তা পাইনি।

তাসলিমা মিজি 

স্বত্বাধিকারী

গুটি পা

আমার গুটি পা লেদার ব্যাগের একটা ব্র্যান্ড। আমি ২০১৬ সালে গুটি পা নিয়ে যাত্রা করি। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষ করার পর কয়েকটি সামাজিক গবেষণাকাজে যুক্ত ছিলাম। পাশাপাশি আমি কয়েক বছর সাংবাদিকতাও করেছি। এরপর আমার একটা হার্ডওয়্যার ফার্ম ছিল। সেখান থেকে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ সরবরাহ করতাম। এরপর গুটি পা শুরু করি। আমাদের পুরুষতান্ত্রিক ব্যবসায়ী সমাজে মেয়েদের ব্যবসা করতে আসাটাকে সাধুবাদ জানানো হয় না। পদে পদে বাধা দেয়া হয়। পরিবার, সমাজ থেকে রাষ্ট্রের যেসব খাতে আমাদের যেতে হয় সব জায়গায় আমাদের বাধার সম্মুখীন হতে হয়।

আমরা লেদার পণ্য তৈরি ও বিক্রি শুরু করি। শুরুতে এর মূলধন জোগানে পারিবারিকভাবে কোনো সমর্থন পাইনি। নিজের কিছু সঞ্চয় থেকে আর কিছু অর্থ জোগাড় করে আমি আমার ব্যবসাটা শুরু করি। এরপর ব্যাংকে যোগাযোগ করি। ওই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে কিছু নির্দেশিকা দিয়েছিল। যেমন জামানতবিহীন ঋণ দেয়া এবং সেটার জন্য হেল্প ডেস্কও চালু করা হয়েছিল। তবু ব্যাংকগুলো থেকে আমরা স্বাভাবিকভাবে সহায়তা পাইনি। 

আমি যখন লোনের জন্য আবেদন করি তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও ব্যাংকগুলো আমার কাছ থেকে কোলাটেরাল নিয়েছে। তাদের ধারণা, নারী উদ্যোক্তারা এ লোন শোধ করতে পারবে না। বিজনেস প্রোফাইল দেখে সিদ্ধান্ত না নিয়ে তারা জেন্ডার আইডেনটিটি দেখে সিদ্ধান্ত@ নিয়ে থাকে বেশি, যেটা খুবই দুঃখজনক।

সোহেল আর কে হুসেইন

ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও 

মেঘনা ব্যাংক লিমিটেড

আমি দুই বছর ধরে মেঘনা ব্যাংকের এমডি হিসেবে কাজ করছি। এর আগে আমি সিটি ব্যাংকের ছয় বছর এমডি ছিলাম। তারও আগে ইস্টার্ন ব্যাংকের হেড অব বিজনেস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। এর আগে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে কাজ করতাম। ইস্টার্ন ব্যাংক থেকে আমাদের প্রথম এসএমইর প্রকাশটা হলো। এটা হলো ২০০১ সাল থেকে। আমি বলব, ২০০১ সালের আগে ব্যাংকিং খাতে এসএমই, নারী উদ্যোক্তা এ ধারণাটা ছিল না। 

সমাজের ইস্যুগুলো ব্যাংকিংয়ের মধ্যেও চলে আসে। ১০-১৫ বছর ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনেক সার্কুলার ও দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ কারণে ব্যাংক বা অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো নারী উদ্যোক্তা ও এসএমই—এ বিভাগে দৃষ্টি দেয়া শুরু করেছে। এখন প্রাতিষ্ঠানিকভাবে একটা ভালো কাঠামো আছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই রিফাইন্যান্স প্রজেক্ট থেকে ব্যাংকগুলো খুবই সহজে অর্থ পায়, যা তারা এসএমই খাতে দিতে পারে। আরেকটা খুব ভালো উদ্যোগ, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংক শুরু করেছিল। সেটা হলো স্টার্টআপ ফাইন্যান্স। 

এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক একটি বড় ফান্ড তৈরি করেছে। যেটা হলো এসএমই রিফাইন্যান্স। এ ফান্ড থেকে প্রতিটি ব্যাংক রিফাইন্যান্স করতে পারে। ৫ শতাংশ সুদহারে আমরা নারী উদ্যোক্তাদের লোন দিই। আমরা আবার এ অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিফাইন্যান্স (পুনঃঅর্থায়ন) হিসেবে পাই। এটা খুবই আকর্ষণীয় একটা প্রডাক্ট। এটাতেও দুটি ভাগ আছে—একটা হলো আনসিকিউরড লোন। এই লোনে কোনো জামানত লাগে না। আরেকটা হলো জামানত নিয়ে লোন প্রদান। ব্যাংকের প্রতিটি ব্রাঞ্চ উইমেনস অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ডেভেলপমেন্ট ইউনিট খুলেছে। এ ডেস্কগুলো নারী উদ্যোক্তাদের স্পেশাল প্রয়োজনীয়তাগুলো পূরণে কাজ করছে। 

আমি প্রথম যখন কাজ শুরু করেছিলাম ২০০২ সালে, তখন আমরা এসে অনেকগুলো মডেল দেখেছি। ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, আমাদের বাহ্যিক সম্পদ বিভাগ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বেশকিছু প্রোগ্রাম নিয়ে আমরা কাজ করেছি। ড. আতিউর রহমান যখন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ছিলেন, প্রক্রিয়াটা তখন অনেক বড়ভাবে শুরু করা হয়েছে। এসব ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক, সরকারের কাছ থেকে শুধু না, আমরা ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির কাছ থেকেও অনেক সমর্থন পাই। 

আমরা একটা গবেষণায় দেখেছি, নারী উদ্যোক্তা যদি লোনের জন্য ব্যাংকে আসেন, তার কাছ থেকে অনেক কাগজপত্র তো বটেই, তাদের ১৩ থেকে ২০ বার ব্যাংকে যেতে হয়। একটা লোন পেতে গেলে চার থেকে ছয় মাস সময় লাগে। 

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্যে বলা হয়েছে যে ২০২৪-এর মধ্যে মোট যত লোন থাকবে, তার ২৫ শতাংশ দিতে হবে এসএমই খাতে। এ ২৫ শতাংশের মধ্যে ১ শতাংশ থাকতে হবে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য।

ড. মো. মফিজুর রহমান 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক 

এসএমই ফাউন্ডেশন

আমরা যত কথাই বলি না কেন সমাজ পরিবর্তনের ধারা যাকে সমাজ বিবর্তন বলি। সে বিবর্তনের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের সমাজে নারীদের সম্পত্তিতে তাদের অধিকার বা দখলকে কীভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছি? আমাদের মতো যারা হোয়াইট কলার মানুষ আছে, আমাদের কথাও যদি বলি—আমরা কি আমাদের বোন, ভাগ্নি, ফুফু বা অন্যান্য যারা আছে, তাদের সম্পত্তিটাকে তাদের যতটুকু প্রাপ্য, আমরা তাদের প্রাপ্যতা অনুসারে তাদের হাতে সে ডকুমেন্টের দলিল, কাগজপত্র পৌঁছে দিতে পেরেছি কি? আমরা অনেক ক্ষেত্রেই সেটা করি না। যারা একটু ভিন্ন ফ্যামিলির নারী, তারা অনেক ক্ষেত্রে বাবার সম্পত্তি বা স্বামীর সম্পত্তিতে এমনিতেই বলে, না এটা ভাইরা ভোগ করুক, এটা আমার সন্তানরা ভোগ করুক। এটা তো ভিন্ন বিষয়। তাদের বলি, এই হচ্ছে আপনার সম্পত্তি, আপনি এবার বুঝে নিন। আপনার নামে আমি মিউটেশন (পরিবর্তন) করে দিলাম। বাবার সম্পত্তি এটুকু ছিল, মুসলিম আইন অনুসারে, উত্তরাধিকার আইন অনুসারে যে যেটুকু পাওয়ার কথা, সেটুকু আমরা বুঝিয়ে দিই? আসলে আমরা বুঝিয়ে দিই না। আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজে শিক্ষিত, অশিক্ষিত নির্বিশেষে সবার মাঝেই এটা বিরাজ করছে।

স্বামী মরে গেলে বলা হয়, তুমি তো তার স্ত্রী থাকাকালীন এটা ভূমিহীন হিসেবে পেয়েছিলে, এখন যেহেতু তালাক হয়ে গেছে বা অন্য যেকোনো কারণে আলাদা হয়ে গিয়েছ, তুমি এখন আর পাবে না। এটা না পাওয়ার কোনো কারণ নেই এজন্য যে যখন তাকে এ সম্পত্তি দেয়া হয় ভূমিহীন হিসেবে, সেখানে কিন্তু নারী-পুরুষ ফিফটি-ফিফটি বাই নেম দেয়া হয়। আলাদা হলেও ওই পুরুষ যদি নতুন করে বিয়ে করে, তাহলেও ওই নারীর নামে যে অংশটি, সরকারি যে দলিল সেটুকু বহাল আছে, বহাল থাকবে। সেটা প্রয়োগ করা যাচ্ছে কিনা, সেটি হচ্ছে আসল কথা। আমাদের সমাজ, আইন, বিধি ও আশপাশের পরিবেশ ওই নারীকে তার কাগজে-কলমে পাওয়া অংশটুকু দিচ্ছে কিনা বা তার সেটার ওপর দখল আছে কিনা সেটিই হচ্ছে কথা। স্বামী আলাদা হয়ে যাওয়ার পর তার দখলের কোনো প্রশ্নই নেই। কারণ তখন তো বাড়ি থেকেই বের হয়ে যাচ্ছে, এক্ষেত্রে সে কীভাবে এ সম্পত্তি পাবে। এ জায়গাটায় আসলে আমাদের আইন ও সমাজ যতক্ষণ পর্যন্ত ওই নারীকে তার অংশটুকু বুঝিয়ে না দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা যতই চিৎকার করি না কেন, নারী তার সম্পত্তির অধিকার পাবে না।

উত্তরাধিকারের বিষয়ে আগেই বলেছি, আমরা মানসিকভাবে আমাদের মা, বোনদের তাদের ন্যায্য অংশটুকু দিতে চাই না। কোনো কোনো ধর্মে অনেক ক্ষেত্রে নারীদের উত্তরাধিকারই নেই। সে অধিকার বলবৎ করার জন্য আইনগত সংস্কার করা দরকার। সে জায়গায়ও আমরা অনেক ক্ষেত্রে অগ্রসর হতে পারছি না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এ পুরুষতান্ত্রিক সমাজে যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা মানসিকভাবে আমাদের এ দৈন্য কাটিয়ে উঠতে না পারব, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সমাজে নারীদের সম্পত্তির অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা দুরূহ। সেক্ষেত্রে আইন আরো কঠোর করতে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

ড. ফাহমিদা খাতুন 

নির্বাহী পরিচালক

সিপিডি

সম্পত্তিতে নারীর অবস্থান বা নিয়ন্ত্রণ কেমন সেটা আলোচনা করার আগে আমি সম্পত্তির সংজ্ঞাটা একটু দিতে চাই। একজন মানুষের ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য জমিজমা, অর্থ, ঘরবাড়ি অর্থাৎ জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রিক বস্তু বা উপায়ই সম্পত্তির আওতায় পড়ে। এগুলো একজন নারী কীভাবে পাচ্ছে। এগুলো পাওয়ার দুটো উপায় রয়েছে। একটা উত্তরাধিকার সূত্রে অন্যটা মেয়েরা নিজেরাই অর্জন বা সৃষ্টি করে নিচ্ছে। 

বর্তমানে ওয়েলথ জেনারেশন করছে মেয়েরা। এটা আবার করছে দুটো উপায়ে। একটি হলো সরাসরি শ্রমবাজারে যুক্ত হয়ে মানে চাকরি করে। এটা একদিকে যেমন দৈনন্দিন ভরণপোষণে সহায়তা করছে আবার ভবিষ্যতের জন্য কিছু সঞ্চয় করতেও সহায়তা করছে। অন্যটি বিভিন্নভাবে উদ্যোগ নিয়ে ব্যবসার মাধ্যমে অর্থাৎ উদ্যোক্তা হয়ে। আর এসবের মাধ্যমে সম্পদ সৃষ্টি বা সম্পদ ব্যবহারে নারীর নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ থাকে। 

উত্তরাধিকার সূত্রের ক্ষেত্রে নারীদের সম্পত্তি অর্জনে কিছু আইনগত দুর্বলতা রয়েছে। এখানে আইনের প্রায়োগিক সমস্যা রয়েছে। এখানে পরিবর্তন আনা দরকার। বর্তমানে বাংলাদেশের নারীরা শ্রমবাজারে ক্রমান্বয়ে যোগদান করছে। এ শ্রমবাজারের ৩৬ শতাংশই এখন নারী। যেটা আগে আরো অনেক কম ছিল। আইনে একটা সমস্যা রয়েছে। তা হলো শ্রমবাজারে নারীরা ৮০ শতাংশের ওপরেই অনানুষ্ঠানিক খাতে জড়িত। অর্থাৎ যেসব কাজ নিম্ন আয়ের, সেসব চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই। সে ধরনের কাজেই কিন্তু তারা অংশগ্রহণ করে। 

এ কারণেই শ্রমবাজারে ৩৬ শতাংশ নারী অংশ নেয়ার পরও এখানে একটা ওয়েজ গ্যাপ বা মজুরির বৈষম্য থাকে। আর এটার কারণ হলো তারা অধিকাংশই অনানুষ্ঠানিক খাতে জড়িত। এজন্যই মজুরির বৈষম্য হচ্ছে। এটার আরেকটি সমস্যা হলো এ খাতের কাজের কোনো নিশ্চয়তা নেই। তারা যেকোনো সময় ছাঁটাই হয়ে যায়। এর বড় উদাহরণ হলো, কভিডের সময় এ অনানুষ্ঠানিক খাতে জড়িতরাই প্রথমে কাজ থেকে ছাঁটাই হয়েছে। সেটা নারী ও পুরুষ উভয়েই। 

বাংলাদেশে বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ২ শতাংশ। এর মধ্যে যুবক বেকারত্বের হার ১০ শতাংশের ওপরে। নারীদের বেকারত্বের হার আরো বেশি। নারীদের কর্মসংস্থানে নানা বৈচিত্র্য এসেছে। কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। কিন্তু ভূমিতে অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় নানা সমস্যার সম্মুখীন তাদের হতে হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার ও সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার প্রয়োজন। নারী উদ্যোক্তারা এখন আর বিউটি পার্লার, বুটিকের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে নানা কাজে যুক্ত হচ্ছে। ক্রিকেটের ব্যাট তৈরিতেও তারা সম্পৃক্ত। সামাজিকভাবে নারীর কাজের স্বীকৃতি মেলে না। 

ভূমিতে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান ও আইন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশে অনেক ভালো আইন ও বিধিবিধান রয়েছে কিন্তু বাস্তবায়নে দুর্বলতার কারণে তার সুফল মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয় না। মানুষের মানসিক পরিবর্তনও প্রয়োজন। শিক্ষিত মানুষের মধ্যেও উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে নারীর অধিকারের প্রশ্নে নানা কুসংস্কার রয়েছে।

ড. আতিউর রহমান

সাবেক গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংক

যতদিন পর্যন্ত আমাদের নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা না হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত-চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করেই এগোতে হবে। সবকিছু এক ধাক্কায় সরিয়ে ফেলা সম্ভব নয়। খনি শ্রমিকদের মতো ধীরে ধীরে এগোতে হবে। অস্বীকার করর উপায় নেই, মুক্তিযুদ্ধের পর সমাজের মনটা যেমন উদার ছিল, সেটা ধীরে ধীরে পেছনে যাচ্ছে এখন। নানা রকম সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাম্প্রদায়িক প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। একদিকে নারীরা অনেক বেশি কর্মক্ষেত্রে আসছেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে নারীর সংখ্যা বাড়ছে। তার পরও সমাজের ভেতরে কেমন করে যেন উদারনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিটা সুপ্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না। এজন্যই সমাজ সংস্কারের কথা বলছি। এখানেও আজকে আলোচনা হচ্ছে। সেটা একটা বড় কাজ। রবীন্দ্রনাথও বলেছেন, সমাজ সচেষ্ট হলে পরিবর্তনগুলো আনা সহজ হয়। সমাজের জন্য যে কাজগুলো আপনারা করছেন, এগুলো আমরা সবাই মিলে সমর্থন দেব, এ প্রত্যাশা করছি। 

একই সঙ্গে অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আজকে বেশি আলোচনা হচ্ছে। আমাদের ব্যাংকার ও গবেষকরা কথা বলছেন। সেখানেই নিয়ে আসতে পারি আলোচনা। একজন সাবেক গভর্নর হিসেবে নয়, একজন অর্থনীতিবিদ হিসেবে বলতে পারি সম্পত্তিতে অধিকার যত বাড়বে, ততই নারীর মবিলিটি বাড়বে। অনেক সময় নারী আটকে থাকেন অনেক অনেক ব্যবস্থায়। নারীরা উদ্যোক্তা হিসেবে ঋণ নিতে চাইলে ব্যাংক কিংবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান তাদের কোলাটেরাল চায়। যদিও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত@জামানত ছাড়াও ঋণ দেয়ার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সেই সুযোগ দিয়েছে। তার পরও নারীরা অনেক সময় জামানতের বেড়াজাল থেকে বের হতে পারেন না। অনেক সময় ব্যাংক তাদের অবস্থান থেকে সরে আসতে চায় না। ব্যাংকাররাও ভয় পান। ভয়ের বাস্তব কারণও আছে। অনেক ব্যাংক অনেক লোন যখন ফেরত আনতে পারে না, তখন তাদের সার্ভিস লাইফ এফেক্টেড হয়। এটা একটা বড় ব্যাপার। প্রতিষ্ঠানগুলোর ভেতরেও মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। নারীবান্ধব করা দরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে। সেটা করতে গেলে আমাদের যেসব সুবিধা আমরা ওপর থেকে বলছি, সেটা সত্যি সত্যি বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য একটা কাঠামো দরকার। এ কাঠামোটা এখনো আমরা খুব ভালোভাবে তৈরি করতে পারিনি। 

এ জায়গাটায় পার্টনারশিপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজকে এসএমই ফাউন্ডেশন প্রণোদনা প্যাকেজের ২৯ শতাংশ নারীর জন্য দিতে পারল। কিন্তু অন্যান্য জায়গায় দিতে পারল না বলেই সার্বিক অগ্রগতি ৬ শতাংশে নেমে এসেছে। সেখানে বড় কাজটি হয়েছে এসএমই ফাউন্ডেশন কিছু পার্টনারশিপ গড়ে তুলেছে। সেই যে একসঙ্গে হওয়ার চেষ্টা, সেটাই কাজ হয়েছে। প্রণোদনা প্যাকেজের একটা অংশ পার্টনারশিপের মাধ্যমে দেয়ার চেষ্টাও কাজ করছে। তার মানে একটা সংগঠন নিয়ে এগোতে পারলে পার্টনারশিপ কাজ করে। 

আমাদের বর্গাচাষীরা কখনো টাকা পান না। ব্যাংকগুলো বর্গাচাষীকে টাকা দিতে চায় না। এখানেও সম্পত্তির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বর্গাচাষীদের নিজস্ব জমি নেই। তারা অন্যের জমি চাষ করেন। এ টাকাকে ব্যাংক জামানত হিসেবে মানতে চায় না। তাদের সামাজিক গুরুত্ব দিতে চায় না। সেজন্য আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটা ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। একটি বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমরা পার্টনারশিপে গিয়েছিলাম। বাংলাদেশ ব্যাংক সরাসরি পার্টনারশিপ নিয়েছিল। বর্গাচাষীদের জন্য আলাদা করে একটা ক্রেডিট লাইন ওপেন করেছিলাম। প্রতি বছর ৫০০-৬০০ কোটি টাকা আমরা দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম। কয়েক লাখ নারী চাষী এ উদ্যোগের মাধ্যমে টাকা পেয়েছিলেন। একটা নির্দিষ্ট গ্রেড অব ইন্টারেস্টের মধ্য দিয়েই তারা এটা পেয়েছিলেন। মূল কাজটি করেছিল সেই বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এটি দিতে গিয়ে আমি যে বিপদে পড়েছিলাম সেটা না বললেই নয়। কিছুতেই আমার বোর্ড রাজি হচ্ছিল না। তারা বলেছে যে এদের জামানত নেই, টাকা নিয়ে ফেরত দেবে না। সুতরাং তাদের এত টাকা কেমন করে দিচ্ছেন? আমি বললাম যে কী দিলে আপনারা আশ্বস্ত হবেন? তখন ওই প্রতিষ্ঠানকে বললাম, আপনারা আমাকে ব্যাংক গ্যারান্টি দেন। ড. মাহবুব হোসেন ছিলেন তখন সেই প্রতিষ্ঠানটির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর। মাহবুব ভাই আমাকে একটা সাদা কাগজে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ব্যাংক গ্যারান্টি দিলেন। এটি বড় ঘটনা।

নারীদের সংগঠিত করাটা একটা বড় কাজ। নিজেরা করি যেভাবে নারীদের সংগঠিত করে। এ রকম আরো অনেক সংগঠন হচ্ছে। কোহিনুর বেগম সংগঠিত হওয়ার পরও কী কষ্টের মধ্য দিয়ে তাকে উদ্ধার পেতে হলো, সেটাও দেখার বিষয়। আমার মনে হয়, এ জায়গাগুলোয় ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেম দাঁড় করানো জরুরি। অনেক ব্যাংক দাবি করে, তারা নারীদের এটা দেয়, ওটা দেয়, এতজনকে দেয়। এজন্যই আমরা ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেম দাঁড় করাতে পারি। এই যে ২৫ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন করে আবার রিফাইন্যান্স স্কিম ওপেন করেছে। তার মধ্যে ১০ শতাংশ দিতে হবে ক্লাস্টারে। এসএমইর শেয়ার সেখানে থাকার কথা। 


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন