আইইউবির সমাবর্তনে শিক্ষামন্ত্রী

কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে পিএইচডির অনুমোদন দেয়া হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি: বণিক বার্তা

কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পিএইচডি ডিগ্রি দেয়ার যোগ্যতা এবং সক্ষমতা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি। তিনি বলেন, আমরা এখন মনে করছি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আইইউবি (ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ) সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় পিএইচডি প্রদানের, পিএইচডি গবেষণা করার সক্ষমতা অর্জন করেছে। আমরা ইউজিসির সঙ্গে কথা বলবো, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্ষমতা তৈরি হয়েছে তাদের পিএইচডির অনুমোদন দেয়া হবে। কারো যদি বিশেষ কোনো বিষয়ের ক্ষেত্রে সক্ষমতা থাকে, তাহলে সেগুলোকে বিবেচনা করতে হবে।

আজ রোববার (১৯ মার্চ) আইইউবির ২৩তম সমাবর্তনে এসব কথা বলেন তিনি। এদিন বিকাল ৩টায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় আইইউবি ক্যাম্পাসে এ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের প্রতিনিধি হিসেবে গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে সনদ তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন এবং আদর্শ সমাজ গঠনে শিক্ষার্থীদের ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। আমরা চাই একটা 'অন্ট্রাপ্রেনারশিপ  ইকোসিস্টেম' গড়ে তুলতে। যেখানে সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অভিভাবকদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার সুযোগ রয়েছে।

তিনি বলেনউচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোগত এবং গুণগত মান উন্নয়নের কাজ চলছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। দেশের উন্নয়নের প্রয়োজনে আমাদের যে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা অত্যাবশ্যক সেক্ষেত্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে।

মন্ত্রী বলেন, চাকরিগ্রহীতা এবং চাকরিদাতার যে প্রত্যাশা এ দুয়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক থাকে। এ দূরত্ব নিরসনে সফট স্কিল অর্জন করতে হবে।  দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দায়িত্ব রয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক পর্যায় থেকে এ শিক্ষা দিতে চাই যাতে এগুলো তাদের চর্চার অংশ হয়ে যায়। আমাদের মডিউলার এডুকেশনে যেতে হবে। এখন পৃথিবী আলোকের গতিতে পরিবর্তিত হচ্ছে। দশ বছর আগে যে গতিতে পরিবর্তিত হতো এখন আর তা নয়। দ্রুত পরিবর্তনশীল পৃথিবীর সঙ্গে খাপ খাইয়ে মানিয়ে চলতে হলে আমার মডিউলার এডুকেশনে যেতে হবে।

সমাবর্তন বক্তার বক্তব্যে অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সমাজের উন্নয়নকে নির্দেশ করতে বেশ কিছু ফ্যাক্টর কাজ করে। তার মধ্যে অন্যতম প্রাকৃতিক সম্পদ, জনসংখ্যা, প্রযুক্তি, সুশাসনের গুণগত মান। এগুলোকে ছাপিয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মানবসম্পদের সঠিক ব্যবহার। মানবসম্পদ হচ্ছে রাষ্ট্রের উন্নয়নের মূল ভিত্তি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের জার্মান, জাপানের মতো রাষ্ট্রগুলোর দিকে তাকালে আমরা দেখি, বিশ্বযুদ্ধের পরে তাদের অবকাঠামোগত সম্পদ সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায়।  তারপরও যুদ্ধের দুই দশকের মধ্যে এ দুটি দেশ পৃথিবীর অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক হয়ে যায়।

উপাচার্য ড. অধ্যাপক ড. তানভীর হাসান বলেন, ত্রিশ বছর ধরে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ দেশের জাতীয় উন্নয়নে সহযোগিতা করে আসছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই সময়ে আমরা শিল্প মান উপযুক্ত শিক্ষার্থী তৈরিতে কাজ করছি। তিনি বলেন, আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে জোর দিচ্ছি। যার কয়েকটি উদাহরণ আমাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে দৃশ্যমান।

এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ। আরো বক্তব্য দেন আইইউবি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার, এডুকেশন সায়েন্স টেকনোলজি অ্যান্ড কালচারাল ডেভলপমেন্ট ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সালমা করিম, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান।

এবারের সমাবর্তনে ১৪৫৯ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। যাদের মধ্যে ১১৪০ জন স্নাতক ও ৩১৯ জন স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী। এসময় তিন শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর্স গোল্ড মেডেল দেয়া হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন