বগুড়ায় বোরো চাষে ৮ লাখ টন চাল উৎপাদনের আশা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, বগুড়া

শাজাহানপুর উপজেলার নন্দগ্রামে ধান খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

বগুড়া অঞ্চলে এখন সবুজের সমারোহ। যতদূর চোখ যায় মাঠের পর মাঠ এখন সবুজে ভরে উঠেছে। এ সবুজ ধান খেতই কিছু পর সোনালি রঙ ধারণ করবে। তখন হাসি ফুটবে কৃষকের মুখে। আর গোলায় উঠবে নতুন ধান। বগুড়ার চাষীরা এবারো ভালো ফলন পাওয়ার আশায় বোরো ধান খেত পরিচর্যা করে যাচ্ছেন। জমিতে নিড়ানি, সার ও কীটনাশক দেয়াসহ খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কৃষি অফিস বলছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শেষ পর্যন্ত প্রায় ৮ লাখ টন চাল আকারে ফলন পাওয়া যাবে। 

গত বছরের তুলনায় এবার জেলায় বোরো ধানের আবাদ বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা। ধান ও গো-খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় এবার বেশি  জমিতে আবাদ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, ফসলের মাঠে কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা, সময়মতো সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা কৃষক ও কৃষি বিভাগের। 

বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ লাখ ৩৫ হাজার ৫৩ টন চাল। বগুড়ায় বরাবরই বোরোর আবাদ ভালো হয় বলে ফলন বেড়ে ৮ লাখ টন চাল উৎপাদন হতে পারে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করা সম্ভব হবে। গত বছর এ জেলায় বোরো আবাদ হয়েছিল ১ লাখ ৮৪ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে।

বগুড়ার আশোকোলা এলাকার ফারুক হোসেন জানান, গত বছর বোরোর ধানের দাম ছিল ১ হাজার ১০০-১ হাজার ৩০০ টাকা মণ। এতে ধান বিক্রি করে কৃষক লাভবান হয়েছেন। চলতি বছর ধান কাটা ও মাড়াইয়ের পর দাম থাকলে কৃষক বোরো চাষে আরো আগ্রহী হয়ে উঠবেন। বাজারে ধানের দাম না পেলে চাষীরা ধান চাষের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এখন ধান চাষে খরচ বেশি। শ্রমিক, সার, বীজ, সেচ বাবদ খরচ বেড়েছে। আগে যেখানে ৩-৪ হাজার টাকায় বিঘাপ্রতি চাষ হতো এখন সেখানে খরচ প্রায় ৮-১০ হাজার টাকা। 

শাজাহানপুর উপজেলার নন্দগ্রাম এলাকার কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এক বিঘার কিছু বেশি জমিতে উফশী ও হাইব্রিড জাতের বোরো চাষ করেছি। শুরু থেকে সার কীটনাশক প্রয়োগসহ সঠিক পরিচর্যা করছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে না পড়লে এবার বাম্পার ফলন হবে।’

বগুড়া সদর উপজেলার কৃষক আব্দুল হামিদ বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূল থাকার পাশাপাশি সঠিক সময়ে সেচ দিতে পারলে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে। ধান পাকার পর তা নিরাপদে ঘরে তুলতে পারলে বাজারে ভালো দাম পাওয়া যাবে। গত বছর ধানের দাম বেশি ছিল। এবারো দাম পাওয়া গেলে চাষীরা ধান চাষমুখী হবেন।’ 

বগুড়া জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক এনামুল হক বলেন, ‘এরই মধ্যে জেলায় বোরো ধান রোপণ শেষ হয়েছে। তবে কিছু এলাকায় দেরিতে রোপণ হয়। গত বছরের মতো এবারো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। এবারো বাম্পার ফলন হবে এমন লক্ষ্য নিয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ধানের বাম্পার ফলন হবে। ’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন