আমদানি বন্ধের প্রভাব

হিলিতে এক লাফে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ টাকা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, হিলি

হিলি স্থল বন্দরে পেঁয়াজভর্তি ট্রাক ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

নতুন করে আমদানির অনুমতি না দেয়ায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। ফলে তিনদিনের ব্যবধানে পণ্যটির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা করে। এক লাফে এত বেশি দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা।

আসন্ন রমজানে পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমদানির অনুমতি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন আমদানিকারকরা। তারা বলছেন, শিগগিরই সমস্যার সমাধান না হলে পণ্যটির বাজার আরো অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে।

সরেজমিন হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচাবাজারসহ সব দোকানেই ভারতীয় ও দেশীয় পেঁয়াজের যথেষ্ট সরবরাহ রয়েছে। এর পরও বাড়তি দামেই পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রকারভেদে ৩০-৩২ টাকা কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে। তিনদিন আগেও ২০-২২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। এছাড়া দেশীয় পেঁয়াজ ৩৫-৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ২৫-৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল।

সুরুজ আলী নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘‌দুই-তিনদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম ১০ টাকা করে বেড়েছে। রাত পোহালেই দাম বাড়ছে। এতে আমাদের মতো সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষ চরম সমস্যায় পড়েছে। বাধ্য হয়ে ক্রয়ের পরিমাণ কমাতে হচ্ছে।’ 

হিলি বাজারের পেঁয়াজবিক্রেতা শাহাবুল ইসলাম বলেন, ‘‌অনুমতিপত্র বা আইপি বন্ধ থাকায় হিলিসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। এতে করে বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কম। চাপ পড়ছে দেশীয় পেঁয়াজের ওপর। এ সুযোগে কৃষকরা দেশীয় পেঁয়াজের দাম খানিকটা বাড়িয়ে দিয়েছেন। এছাড়া আমদানীকৃত পেঁয়াজও বেশি দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।’ 

হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক শাহিনুর রেজা বলেন, ‘‌দেশীয় কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় ১৫ মার্চের পর পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়া বন্ধ করে দেয় সরকার। এর পরদিনই পণ্যটির আমদানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মাত্র তিনদিনের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে ১০ টাকা করে। এ সুযোগে দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন কৃষকরা। উদ্দেশ্য দাম বাড়িয়ে বেশি মুনাফা করা। 

তিনি আরো বলেন, ‘‌রমজান মাসে স্বাভাবিকভাবেই পেঁয়াজের বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়। সে সময় বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমদানির অনুমতি (আইপি) দেয়া উচিত বলে আমরা মনে করছি। অনুমতি দিলে বাজার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।’ 

হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী সঙ্গনিরোধ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, ‘‌সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে যেসব পেঁয়াজ আমদানির জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছিল তার মেয়াদ ছিল ১৫ মার্চ পর্যন্ত। এরপর নতুন করে এখন পর্যন্ত আইপি ইস্যু করা হয়নি। কবে নাগাদ আবার আইপি দেয়া হবে তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই বলতে পারবে।’ 

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর-এ আলম বলেন, ‘‌বাজারে সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক রাখতে আমরা নজরদারি করছি। কেউ যেন পেঁয়াজ মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে সেজন্য অভিযান চালানো হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন