২০২২-২৬ চক্র

১১০০ কোটি ডলার আয়ের লক্ষ্য ফিফার

ক্রীড়া ডেস্ক

তৃতীয় মেয়াদে ফিফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েই পরবর্তী চার বছরের চক্রে ১ হাজার ১০০ কোটি ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রার কথা জানিয়েছেন জিয়ান্নি ইনফ্যান্তিনো। পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় তিনি দায়িত্ব পালন করবেন ২০২৭ সাল পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার রুয়ান্ডার কিগালিতে অনুষ্ঠিত ৭৩তম ফিফা কংগ্রেসে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তিনি। 

ফিফা প্রেসিডেন্ট পদে ইনফ্যান্তিনোর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কেউ ছিলেন না। ফলে তিনি একেবারেই বাধাহীনভাবে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে ক্ষমতাধর চেয়ারটিতে আবারো বসতে চলেছেন। তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চ্যালেঞ্জটা কেউ নেয়নি বলে ফিফা কংগ্রেসে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। মূলত আর্থিকভাবে ফিফাকে এতটাই শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে গেছেন ইনফ্যান্তিনো যে অন্তত এ জায়গাটিতে তাকে চ্যালেঞ্জ করার মতো সুযোগও নেই। 

নির্বাচিত হয়ে ৫২ বছর বয়সী ইতালিয়ান বংশোদ্ভূত এ সুইস নাগরিক বলেন, ‘‌এটা অনেক বড় সম্মান ও গৌরবের, একই সঙ্গে গুরুদায়িত্বেরও। ফিফা ও বিশ্বব্যাপী ফুটবলের সেবা করার অঙ্গীকার করছি আমি।’

এর পরই আর্থিকভাবে ফিফার টেকসই ভবিষ্যৎ নিয়ে উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার কথা জানান ইনফ্যান্তিনো। তিনি নিশ্চিত করেন, ২০১৯-২২ চক্রে ফিফা রেকর্ড আয় করেছে। এখানে কাতার বিশ্বকাপ বড় ভূমিকা রেখেছে। অনেক সমালোচনা ও বাধা পেরিয়ে সফলভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে কাতার, তাতে আর্থিকভাবে বিরাট লাভবান হয়েছে ফিফা। ইনফ্যান্তিনো অঙ্গীকার করেছেন, পুরুষ ও নারী উভয় বিশ্বকাপে দলসংখ্যা বাড়ানোর মাধ্যমে আয় বৃদ্ধির এ ধারা ধরে রাখবেন তারা। ফিফাপ্রধান বলেন, ‘‌কভিড-১৯-এ বিপর্যস্ত একটি সময়ে আমাদের রেকর্ড ৭৫০ কোটি ডলার আয় হয়েছে। আমি যখন আসি তখন ফিফার রিজার্ভ ছিল মাত্র ১০০ কোটি ডলার, এখন তা দাঁড়িয়েছে ৪০০ কোটি ডলারে। পরবর্তী চক্রে (২০২৬ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত) আমাদের ১ হাজার ১০০ কোটি ডলার আয়ের লক্ষ্য। এর মধ্যে আবার ক্লাব বিশ্বকাপ অন্তর্ভুক্ত নয়। সেটি থাকলে আরো বিলিয়ন বাড়ত।’

বাংলাদেশসহ ২১১টি সদস্য সংস্থা আগে ফিফার কাছ থেকে বার্ষিক আড়াই লাখ ডলার করে তহবিল পেলে ইনফ্যান্তিনো আসার পর গত চার বছরে তার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ডলারে! তাই এ সুইস আইনজীবী গর্ব করে বলেন, ‘কোনো সিইও যদি তার কোম্পানির পর্ষদকে বলে যে পণ্য সাত গুণ বেড়েছে, আমার তো মনে হয় তাকে আজীবনের জন্য সিইও হিসেবে রেখে দেয়া হবে। তারা নিশ্চিতভাবেই এ গল্পকে এগিয়ে নিতেই ভালোবাসবে। কিন্তু আমি তো এখানে মাত্র চার বছরের চক্রে থাকব।’‌

২০২৬ সালের বিশ্বকাপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে ৪৮টি দল এবং ক্লাব বিশ্বকাপের ৩২ দলের নতুন ফরম্যাটেরও ঘোষণা এসেছে ফিফা কংগ্রেস থেকে। যদিও প্লেয়ার্স ইউনিয়ন আর লা লিগার পক্ষ থেকে ফুটবলের সম্প্রসারণের সমালোচনা করা হয়েছে। এ নিয়ে ইনফ্যান্তিনো বলেছেন, ‘‌অনেক বেশি ফুটবল হচ্ছে শুনি, কিন্তু তা খুব বেশি জায়গায় নয়। বিশ্বের বেশির ভাগ জায়গায়ই যথেষ্ট পরিমাণ ফুটবল হয় না। বিশ্বব্যাপী ফুটবলের উন্নয়নে আমাদের আরো বেশি ফুটবল প্রতিযোগিতা আয়োজন করা প্রয়োজন।’

প্রথম দুই মেয়াদেই ছয়-সাত বছর কাটিয়ে দিয়েছেন ইনফ্যান্তিনো। দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়ে সাবেক সভাপতি সেপ ব্লাটারের বিদায় ঘটলে এবং ফিফায় যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে ব্যাপকভিত্তিক পরিবর্তন এলে ২০১৬ সালে ফিফা সভাপতি নির্বাচিত হন ইনফ্যান্তিনো। তার সময় ফিফা নতুন নতুন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে এবং আগের প্রতিযোগিতায় দলসংখ্যা বাড়ানো ও কোয়ালিফাই করার সুযোগ বাড়ানোর মধ্য দিয়ে ফিফার আয় বাড়াতে সমর্থ হয়। এর মধ্য দিয়ে সদস্য দেশগুলোর আয়ও বাড়ে। এপি। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন