ক্রেডিট সুইস অধিগ্রহণ করতে চায় ইউবিএস

বণিক বার্তা ডেস্ক

পুঁিজবাজারে অব্যাহত দরপতনের কারণে সংকটে পড়েছে ক্রেডিট সুইস ছবি: রয়টার্স

আলোচিত ক্রেডিট সুইস ব্যাংক পুরোপুরি বা আংশিকভাবে অধিগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে সুইজারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইউবিএস। সম্প্রতি বেশকিছু কারণে সংকটের মুখে পড়ে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেডিট সুইস ব্যাংক। গত সপ্তাহে ইতিহাসের সর্বনিম্নে নামে ব্যাংকটির শেয়ারমূল্য। শুক্রবার দিন শেষে ব্যাংকটির শেয়ারদর ৮ শতাংশ পতনের মুখে পড়ে। এ অবস্থায় সুইস ব্যাংকিং জায়ান্ট ইউবিএস ক্রেডিট সুইস অধিগ্রহণে আলোচনা শুরু করেছে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস।

ক্রেডিট সুইসের ২০২১ ও ২০২২ সালের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা মুখ ঘুরিয়ে নেন ব্যাংকটি থেকে। আবার বিদ্যমান বিনিয়োগকারীরাও অস্বীকৃতি জানান নতুন করে মূলধনের জোগান দিতে। এ অবস্থায় গ্রাহকদের আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়। যার রেশ গিয়ে পড়ে দেশের গোটা ব্যাংক খাতে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ব্যাংক পতনের মুখে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খাতটিতে টালমাটাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। ক্রেডিট সুইসের দরপতন সেখানে আরো ভীতির সৃষ্টি করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা এফআইএনএমএ অধিগ্রহণ-সংক্রান্ত আলোচনার আয়োজন করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, শুক্রবার বিকালে এফআইএনএমএ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের অংশীদারদের জানায়, ইউবিএস ও ক্রেডিট সুইসকে একীভূত করা তাদের প্রথম পরিকল্পনা বা প্ল্যান এ-এর অংশ। এর মাধ্যমে মূলত ক্রেডিট সুইসের প্রতি ভোক্তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করা হবে। এটি ছাড়াও আরো বেশকিছু পরিকল্পনা করা হয়েছে। ব্যাংক দুটির কর্তৃপক্ষের মধ্যে আলোচনায় সেগুলো নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হবে। 

আগামীকাল পুঁজিবাজারের লেনদেন শুরুর আগেই যেন সহজ কোনো সমাধান বের করা যায় সেটিই এখন সুইস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল ভাবনা। তবে এ আলোচনা বা পরিকল্পনার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ক্রেডিট সুইস বা ইউবিএস। একটি সূত্র বলছে, আংশিক বা পুরোপুরি ক্রেডিট সুইস অধিগ্রহণের ইচ্ছা ইউবিএসের। তবে জোর করে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় রাজি নয় কোনো প্রতিষ্ঠানই।

উল্লেখ্য, দুই বছর ধরেই আস্থা ও ভাবমূর্তির সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল ক্রেডিট সুইস। গত বছর দুর্দশাগ্রস্ত ছিল ব্যাংকটির অবস্থা। ব্রিটিশ আর্থিক প্রতিষ্ঠান গ্রিনসিলের সঙ্গে সম্পর্কিত তহবিল সরবরাহ ব্যবস্থায় ধস নামে। এতে ১ হাজার কোটি ডলার হারায় ক্রেডিট সুইস। পাশাপাশি আরকেগোস বিনিয়োগ তহবিলে ধস নামায় ৫৫০ কোটি ডলার বাণিজ্যিক ক্ষতির সম্মুখীন হয় সুইস ব্যাংকটি। বছরের শেষ প্রান্তিকে এসে ২০০ কোটি সুইস ফ্রাংক বা ২২০ কোটি ডলার সমপরিমাণ লোকসান গোনে ব্যাংকটি। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারী ও গ্রাহকদের আস্থা ফেরাতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছিল প্রতিষ্ঠানটিকে। এর মধ্যেই আবার আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য প্রকাশ ও মূল বিনিয়োগকারী সৌদি ন্যাশনাল ব্যাংক নতুন বিনিয়োগ করবে না বলে ঘোষণা দেয়ায় ব্যাংকটির শেয়ারদর অব্যাহত পতনের মুখে পড়ে। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন