
লিডস শহরে রয়েছে গোপন সেই গোরস্তান, সেখানে
শুয়ে আছে ৬২টি কফিন। যার বাসিন্দাদের ২৩ জন শিশু, বাকিরা নারী-পুরুষ। সিসার কফিনে দেড়
হাজার বছর ধরে শুয়ে আছে তাদের দেহাবশেষ।
হাজার বছর দৃষ্টির অগোচরে থাকার পর সমাধিগুলো
সম্প্রতি আবিষ্কৃত হয়েছে। এর পেছনে রয়েছে ইয়র্কশায়ারের প্রত্নতাত্ত্বিক ডেভিড হান্টার
ও তার দল। একে স্রেফ সমাধিই নয়; সভ্যতা ও সংস্কৃতির নিদর্শন হিসেবে দেখছেন তারা। হান্টারের
মতে, এই আবিষ্কার ‘বিস্ময়কর’।
রোমান যুগের শেষ দিকে কিংবা স্যাক্সন যুগের প্রথম দিকে সমাধিস্থ করা হয় এই অভিজাতদের। যুগসন্ধি হওয়ার কারণে রোমান ও স্যাক্সন উভয়ের দেহাবশেষ থাকতে পারে সমাধিতে। গোরস্থানেও দুই সংস্কৃতি অনুসারে সমাধি দেয়ার নিদর্শন রয়েছে।
ছবি: সিএনএন
ডেভিড হান্টার ওই অঞ্চলে প্রত্নতাত্ত্বিক
জরিপ চালানোর সময় বেরিয়ে আসে প্রাচীন স্থাপনাটি। তার কাছে বিষয়টি মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি
পাওয়া মতো। স্থানটিকে প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে বিশেষত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করেন তিনি।
তবে কেউই প্রত্যাশা করেনি, একটা আদিম সমাধিস্থান অপেক্ষা করছিল আবিষ্কৃত হওয়ার জন্য।
এটা সেই সময়ের কথা, যখন খ্রিষ্টধর্ম সবে
ছড়িয়ে পড়ছে ইংল্যান্ডে। তার প্রমাণ হিসেবে কবরে প্যাগান সংস্কৃতির কিছু নিদর্শনও পাওয়া
গেছে। বিশেষ করে মৃতের সঙ্গে ছুরি বা পাত্র রাখার রীতি। কফিনে কিছু অলঙ্কারও পাওয়া
গেছে।
হান্টার এ নিদর্শনকে দুর্লভ মনে করেন। কাঠের বড় কফিনগুলো উপরে সীসার প্রলেপ দেয়া। রোমান সংস্কৃতিতে অভিজাতদের এভাবে কবর দেয়া হতো।
ছবি: সিএনএন
গোরস্থানের বয়স ১৬০০ বছরের কম নয়। রোমান
সাম্রাজ্যের পতন ঘটে ৪০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে। তারপর শুরু হয় অ্যাংলো-স্যাক্সন রাজত্ব।
রোমানরা ব্রিটেন ছেড়ে যাওয়ার পর পশ্চিম ইয়র্কশায়ার পরে এলমেট রাজ্যে। তারা চলে যাওয়ার
পরও সেখানে বিশিষ্ট স্থানে ছিল রোমান সংস্কৃতি। অ্যাংলো-স্যাক্সনদের পাশাপাশি পরবর্তী
২০০ বছর রোমান অস্তিত্ব টিকে ছিল সেখানে।
‘বিস্ময়কর সমাধিক্ষেত্র’টি নিয়ে উচ্ছ্বসিত
হান্টার। তার ধারণা, এ আবিষ্কার প্রাচীন ব্রিটেন ও ইয়র্কশায়ারের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়
যুক্ত করবে।