ক্যাম্পাস ক্যাফেটেরিয়া

আইইউবিএটির লেমন লাইমে সজীব জীবন

ফিচার প্রতিবেদক

সবুজে ঘেরা আইইউবিএটির ক্যাফেটেরিয়ার একাংশ ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

সকালের সূর্য উঁকি দিতেই উত্তরার আশপাশে বাজারে ছোটেন রাব্বি। নিজ হাতে দেখেশুনে বাজার করেন। সেরা মাছ, মুরগি আর সঙ্গে থাকে টাটকা সবজি। দরদাম হাঁকিয়ে হিসাবি বাজার করলেও গুণগতমানে একচুল ছাড় দিতে নারাজ রাব্বি। নিজের পরিবার মনে করেই প্রতিদিন আট হাজার শিক্ষার্থীর জন্য দিনভর খাবারের আয়োজনে এমন বাজারে ছুটছেন রাব্বি। রাব্বি কাজ করছেন ঢাকার উত্তরার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) লেমন লাইম ক্যাফেটেরিয়ায়। 

রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনে প্রতিদিন আট হাজার শিক্ষার্থী উপস্থিত হয় এ ক্যাম্পাসে। সকাল সাড়ে ৭টা থেকেই একে একে এসে পৌঁছায় শিক্ষার্থীদের ২৫টি পরিবহন। ক্যাম্পাসে ঢুকেই আধো ঘুমে শিক্ষার্থীরা সকালের নাশতা সারতে ছোটেন লেমন লাইম ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে। বিশুদ্ধ তেলে তৈরি পরোটা, ডালসবজি, ডিম, সুজির হালুয়া, গরম গরম সবজি খিচুড়ি আর ধোঁয়া ওঠা কফির ঘ্রাণে সকালের ঘুমের রেশ কাটে তাদের। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একই সঙ্গে লাইন ধরে টোকেন সংগ্রহ করে কাউন্টার থেকে বুঝে নেন খাবার। সেলফ সার্ভিস চালু থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের নিজেদেরই খাবার সংগ্রহ করতে হয়। 

এরপর ঘড়ির কাঁটা ৯টা পেরোতেই লেমন লাইমের নাশতায় যোগ হয় ভুনা খিচুড়ি, শিঙাড়া, সমুচা আর চিকেন রোল। কফির সঙ্গে সঙ্গে এ পর্বে যুক্ত হয় ভিন্ন স্বাদের লেমনটি এসব খাবারের সবই তৈরি হয় ক্যাফেটেরিয়ার নিজস্ব কিচেনে, নিজেদের বাবুর্চি দিয়ে। তাই গুণগত মান আর স্বাদ সবসময় থাকে অক্ষুণ্ন। 

এদিকে পেছনের কিচেনে এরই মধ্যে শুরু হয়ে যায় দুপুরের খাবারের আয়োজন। সকালেই বাজার থেকে কিনে আনা গরুর মাংস, সবজি, ডিম ভুনা, আর ডালের সঙ্গে থাকে সাদা ভাত ও ফ্রাইড রাইস। সঙ্গে থাকছে আইইউবিএটির নিজস্ব পুকুরের নানা ধরনের মাছ। পাশাপাশি বাজার থেকেও সংগ্রহ করা হয় রুই, কই, টাকিসহ নানা ধরনের ছোট মাছ। শিক্ষার্থীদের খাবারে পুষ্টির মান বিবেচনায় রেখে নিয়মিত খাবারে বৈচিত্র্য রাখার চেষ্টা করে লেমন লাইম ক্যাফেটেরিয়া। নিয়মিত শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ক্যাম্পাসের যে কোনো অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার সরবরাহ করে এ ক্যাফেটেরিয়া। ২০১১ সাল থেকে আইইউবিএটির লেমন লাইম শিক্ষক শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের আয়োজন করে আসছে। 

বিকাল গড়াতেই ক্যাম্পাসের পূর্ব কোণের লেমন লাইমে শুরু হয় নাশতার আয়োজন। ছোলা ভুনা, জিলাপি আর লেমন লাইম স্পেশাল- চিকেন প্যাটিস। বেলাশেষের ক্লাস করে শিক্ষার্থী-শিক্ষক সবাই একসঙ্গে নাশতায় বসে লেমন লাইম প্রাঙ্গণে। বিকাল সাড়ে ৫টার পর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনে ঘরে ফেরেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়টির কোষাধ্যক্ষ ড. সেলিনা নার্গিস বলেন, ‘আমাদের ক্যাফের কর্মচারীরার বেতনভুক্ত। কত বেশি খাবার বিক্রি হলো, কত কম বিক্রি হলো এগুলো নিয়ে জোরজবরদস্তি নেই। কোনোদিন খাবার বেঁচে গেলে কিংবা অতিরিক্ত হলে আমরা সেটা কিচেন থেকে সরিয়ে ফেলি। কোনোভাবেই সেটা পরদিনের সঙ্গে যুক্ত করা হয় না। ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে শিক্ষার্থীদের যেন বেশি দামে অস্বাস্থ্যকর খাবার না খেতে হয় এজন্যই ক্যাম্পাসের ভেতরে এমন আয়োজন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন