১০ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছি

ইশতিয়াক আবেদীন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ পথচলা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন বণিক বার্তা সঙ্গে।

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশের শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় আধুনিক মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদানে বদ্ধপরিকর। এরই ধারাবাহিকতায় আধুনিক, আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর-সংবলিত শ্রেণীকক্ষ, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিসংবলিত ল্যাবরেটরি প্রস্তুত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারটি নিজস্ব সফটওয়্যার আরএফআইডি দ্বারা পরিচালিত। যেখানে রয়েছে সর্বশেষ সংস্করণসমৃদ্ধ প্রায় ৪৫ হাজার বই, ৬৮ হাজার ৩৯২টি সাময়িকী, হাজার ৩৪৩টি অডিও-ভিজুয়াল সামগ্রী লাখ ৭২ হাজার -বুক। গ্রন্থাগারে প্রায় ৫০০ জন শিক্ষার্থী একসঙ্গে বসে অধ্যয়ন করতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে রয়েছে ৮০ হাজার বর্গফুট জায়গা নিয়ে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ফুটবল খেলার মাঠ, বাস্কেট বল কোর্ট, ভলিবল কোর্ট, ক্রিকেট নেট প্র্যাকটিস, ব্যাডমিন্টন কোর্ট টেনিস কোর্ট। এছাড়া রয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য ইনডোর গেমস, আধুনিক ড্রেসিং রুম জিমনেসিয়াম। আন্তর্জাতিক সেমিনার, সিম্পোজিয়াম সভা পরিচালনার জন্য রয়েছে তিনটি অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম। রয়েছে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য মুট কোর্ট। মিডিয়া অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশন বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে মিডিয়া স্টুডিও অ্যানিমেশন ল্যাবরেটরি। বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে একটি মুক্তমঞ্চ যেখানে এআইইউবির শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের জন্য রয়েছেন মনস্তাত্ত্বিক পরামর্শদাতা। রয়েছে একটি ডে-কেয়ার সেন্টার। সব ধর্মাবলম্বীর জন্য রয়েছে পৃথক উপাসনালয়। আছে চার শয্যাবিশিষ্ট মেডিকেল সেন্টার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে বলুন।

এআইইউবি বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়, যার বিভিন্ন একাডেমিক প্রোগ্রাম আন্তর্জাতিক অ্যাক্রিডিটেশন সংস্থা পিএএএসসিইউ দ্বারা অ্যাক্রিডিটেড। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই, সিওই, সিএসই প্রোগ্রাম আইইবি আর্কিটেকচার প্রোগ্রাম আইএবি দ্বারা অ্যাক্রিডিটেড। ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন আন্তর্জাতিক অ্যাক্রিডিটেশন সংস্থা এমসিএসবি এসিবিএসপির সদস্যপদ অর্জন করেছে। এআইইউবি মেগনা কার্টা, সিএইচইএ, আইএইউ, এইউএপি, এপিকিউএনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ অর্জন করেছে। এছাড়া কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাংকিং, টাইমস হায়ার এডুকেশন র‍্যাংকিং উরি ওয়ার্ল্ড র‍্যাংকিংয়ে অবস্থান করছে।  এআইইউবির প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম আইএসও ৯০০১: ২০০৮ দ্বারা স্বীকৃত। ২০১৬ সালে এআইইউবি এশিয়া প্যাসিফিক কোয়ালিটি নেটওয়ার্ক কর্তৃক Best Model IQA University-এর গৌরবে ভূষিত হয়। শিক্ষার্থীদের মানসম্পন্ন শিক্ষাদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদপ্রাপ্ত অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী, যাদের মধ্যে বেশির ভাগই পিএইচডি ডিগ্রিধারী। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী শিক্ষক সংখ্যার অনুপাত ২৩:১।

বিশ্ববিদ্যালয়টির অবকাঠামোগত অবস্থান সম্পর্কে বিস্তারিত বলুন।

ঢাকা মহানগরীর খিলক্ষেত থানাধীন কুড়িলে কুড়াতলী রোডে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের সর্বমোট জমির পরিমাণ ১১২৮.৩৮ শতাংশ বা ১১.২৮৩৮ একর।  যেখানে প্রায় লাখ ৪৫ হাজার বর্গফুট ব্যবহার উপযোগী অবকাঠামো প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া গাজীপুর জেলার অন্তর্গত শ্রীপুর থানাধীন ভাংনাহাটি নামক এলাকায় চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুষদের অধীন নার্সিং ইনস্টিটিউট খোলার প্রয়াসের পাশাপাশি শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের গবেষণা কার্যক্রম, ব্যবহারিক কার্যক্রম হাতে-কলমে শিক্ষা প্রদানের নিমিত্তে অবকাঠামোসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ৪৫৫১.০৬৮ শতাংশ বা ৪৫.৫১০৬৮ একর জমি আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে আধুনিক আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর-সংবলিত ১৯২টি শ্রেণীকক্ষ, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিসংবলিত ৭২টি ল্যাবরেটরি রয়েছে। রয়েছে আধুনিক দৃষ্টিনন্দন প্রশাসনিক ভবনসহ ৯টি ভবন গ্রন্থাগার। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তাদের জন্য রয়েছে চারটি ক্যাফেটেরিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে রয়েছে ৮০ হাজার বর্গফুট জায়গা নিয়ে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ফুটবল খেলার মাঠ, বাস্কেট বল কোর্ট, ভলিবল কোর্ট, ক্রিকেট নেট প্র্যাকটিস, ব্যাডমিন্টন কোর্ট টেনিস কোর্ট। এছাড়া রয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য ইনডোর গেমস, আধুনিক ড্রেসিং রুম জিমনেসিয়াম। আন্তর্জাতিক সেমিনার-সিম্পোজিয়াম সভা পরিচালনার জন্য রয়েছে তিনটি অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম। রয়েছে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য মুট কোর্ট, মিডিয়া অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশন বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে মিডিয়া স্টুডিও অ্যানিমেশন ল্যাবরেটরি। বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে একটি মুক্তমঞ্চ, মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের জন্য রয়েছেন মনোবিজ্ঞানী। রয়েছে একটি ডে-কেয়ার সেন্টার। এছাড়া সব ধর্মাবলম্বীদের জন্য রয়েছে পৃথক উপাসনালয়। আছে চার শয্যাবিশিষ্ট মেডিকেল সেন্টার।

দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে কী কী সুবিধা রয়েছে?

দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে একাডেমিক স্কলারশিপ Need-Based বৃত্তির সুযোগ। এছাড়া রয়েছে শিক্ষার্থীদের এসএসসি এইচএসসির ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে Merit-Based স্কলারশিপ। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য বৃত্তি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীদের জন্য স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অ্যালামনাই ডিসকাউন্ট, ন্যাশনাল ট্যালেন্ট প্রতিরক্ষা সদস্যদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতি সেমিস্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের শতকরা ১৪-১৬ ভাগ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বৃত্তি পেয়ে থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে আপনারা কী কী ভূমিকা পালন করেন?

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিভাগ রয়েছে। যার নাম অফিস অব প্লেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যালামনাই অফিস শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনে প্রবেশের জন্য প্রতি বছর জব ফেয়ার আয়োজন করে। দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ স্থাপন করে থাকে। ১৯৯৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত যেসব শিক্ষার্থী সনদ অর্জন করেছেন, তাদের বেশির ভাগ অংশ গুগল, অ্যামাজন, মাইক্রোসফটসহ দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। এভাবে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে চলেছেন। বর্তমানে দেশ-বিদেশে উচ্চশিক্ষার হার যেমন বেড়েছে, তদ্রূপ কর্মপরিধিও বেড়েছে। তথাপি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সনদ গ্রহণ করার জন্য, ডিগ্রি অর্জন করে বৈশ্বিক কর্মপরিসরে অংশগ্রহণ করার জন্য শিক্ষার্থী অভিভাবকদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় দেশে অন্যতম পছন্দনীয় গ্রহণযোগ্য প্রতিষ্ঠান হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। প্রতি সেমিস্টারে ইন্টার্নশিপ শিক্ষার্থীদের জন্য সিভি রাইটিং ভাইভা প্রস্তুতির জন্য কর্মশালা আয়োজন করা হয়ে থাকে।

আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছু বলুন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে নিজস্ব ভিশন, মিশন গোল ভিশন, মিশন গোলে পৌঁছার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় আগামী ১০ বছরের জন্য নিম্নোক্ত কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।

একাডেমিক নেতৃত্ব :

স্নাতক স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বিশ্বমানের শিক্ষা প্রদান করা, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশ্বের সর্বত্র প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারে। লক্ষ্যে সময় উপযোগী নতুন প্রোগ্রাম শুরুর ব্যবস্থা করা হবে। বিশ্বের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক র‍্যাংকিংয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। লক্ষ্য অর্জনে মানসম্পন্ন শিক্ষা, শিক্ষার্থী বৃত্তি প্রদান, উন্নততর পাঠ্যক্রম সহশিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের সংযোগ নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

টেকসই উন্নয়ন : আধুনিক বৈচিত্র্যময় পরিবেশের উন্নয়ন সাধন, যা শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তাদের আকৃষ্ট করবে। পাশাপাশি আধুনিক, জুতসই টেকসই কর্মপরিবেশকে সমৃদ্ধ করা।

আন্তর্জাতিকীকরণ: আধুনিক উদ্ভাবনমূলক শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের রূপান্তরমূলক শিক্ষার অভিজ্ঞতা প্রসারিত করা। কমিউনিটি সার্ভিস, সামাজিক সম্পৃক্ততা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা।

ডিজিটালাইজেশন: ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষার মান আরো উন্নত করা। ডিজিটাল প্রযুক্তির সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক নাগরিক হিসেবে রূপান্তর করা। 

উদ্ভাবন গবেষণা: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের জন্য ক্রস-ডিসিপ্লিনারি গবেষণার ব্যবস্থা করা। গবেষণার নিমিত্তে প্রয়োজনীয় বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা।

উপরোক্ত কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো একাডেমিক কার্যক্রম বৃদ্ধিকল্পে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। উপরোক্ত কার্যক্রম গ্রহণের ফলে বিশ্ববিদ্যালয় দেশের প্রথম সারির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একটি অনন্য বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তরিত হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন