গ্যালারি

চলমান প্রদর্শনী ও অন্যান্য

অরুণীমা রহমান

স্টুডিও ভাস্কর্মীতে চলছে সাত শিল্পীর শিল্প সংগঠন দাগী আর্ট গ্যারেজের ‘জিরো ক্যালরি’ ছবি: তারেক ইমন/দাগী

কিবরিয়া ছাপচিত্র মেলা

ঘড়ির কাঁটা বিকাল ৫টা ছুঁই ছুঁই। প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়ে, শিল্পী ওয়াকিলুর রহমানসহ কয়েকজন বসে বেশ খোশমেজাজে গল্প করছেন। চারপাশ নবীন শিল্পী দর্শনার্থীদের সরগরম। লালমাটিয়ার গ্যালারি পাড়ায় অবস্থিত কলাকেন্দ্রে শুরু হওয়া কিবরিয়া ছাপচিত্র মেলাকে ঘিরেই সবার ব্যস্ততা আগ্রহ।

সাধারণ শিল্পানুরাগীরা যেন সুলভ মূল্যে শিল্পকর্ম সংগ্রহ করতে পারেন, সে লক্ষ্য নিয়ে ২০১২ সালে শুরু হয় কিবরিয়া ছাপচিত্র মেলা। এবার ফেব্রুয়ারি সুলভ মূল্যে ছাপচিত্র, সবার জন্য ছাপচিত্র স্লোগান নিয়ে শুরু হয়েছে কিবরিয়া প্রিন্ট মেকিং স্টুডিও আয়োজিত মেলার একাদশতম আসর। গ্যালারির চার দেয়ালে রয়েছে এচিং, কাঠখোদাই, ভেস্কোসিটি, লিথোগ্রাফি, লিনোকাট, অ্যাকোয়াটিন্ট, ড্রাই পয়েন্টসহ বিভিন্ন মাধ্যমের নান্দনিক বৈচিত্র্যময় শিল্পকর্মের সম্ভার। নবীন যে ছাপচিত্রীরা তাদের কাজ নিয়ে এসেছেন তাদের অনেককেই দেখা যায় এখানে।

মেলায় কাইয়ুম চৌধুরী, হাশেম খান, রফিকুন নবী, আবুল বারক আলভী, কালিদাস কর্মকার, শাহাবুদ্দিন আহমেদ, শহীদ কবির, নিসার হোসেন, শিশির ভট্টাচার্যের মতো দেশের স্বনামখ্যাত শিল্পীদের কাজ যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে ভারতের সুভা প্রসন্ন, সনৎ কর, যোগেন চৌধুরী, গণেশ হালুইয়ের মতো শিল্পীদের কাজ। মাস্টার শিল্পীদের কাজের সঙ্গেই তরুণ নবীন আঁকিয়েদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে আয়োজনটি ভিন্ন এক দৃষ্টান্ত নিয়ে উপস্থিত।

এবার ছাপচিত্র মেলায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ছাপচিত্র বিভাগ, বেসরকারি গ্যালারির প্রিন্টমেকিং স্টুডিওসহ ১৬টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে রয়েছে অন্তত ২০ জন নবীন প্রবীণ শিল্পীর কাজ। সব মিলিয়ে চার শতাধিক শিল্পীর ছাপচিত্রের বিভিন্ন মাধ্যমের বৈচিত্র্যময় কাজগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে একসঙ্গে। প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত মেলা চলবে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

দাগী আর্ট গ্যারেজের জিরো ক্যালরি

ঢাকাকেন্দ্রিক দৃশ্যশিল্প মাধ্যমের সাতজন শিল্পীর সমন্বয়ে গঠিত শিল্প সংগঠন দাগী আর্ট গ্যারেজ। ফেব্রুয়ারি রাজধানীর হাজারীবাগের স্টুডিও ভাস্কর্মীতে শুরু হয়েছে জিরো ক্যালরি শিরোনামে তাদের প্রথম দলগত প্রদর্শনী। অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা হলেন ধীমান সরকার, ইমরান সোহেল, রাসেল চৌধুরী, রুপম রায়, সানজিদ মাহমুদ, সনদ বিশ্বাস, সৈয়দ তারেক রহমান।

মানুষের স্থূল হয়ে যাওয়ার নেপথ্যে সম্ভাব্য কী কী কারণ থাকতে পারেঅনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, আলস্যে দিন যাপন, নাকি জাংক ফুডে মাত্রাহীন আসক্তি? মোটা হওয়ার পেছনে সবচেয়ে শক্তিশালী কারণটা যা- থাকুক না কেন, এই নিওলিবারাল দুনিয়ায় মুটিয়ে যাওয়াকে অবশেষে বিদ্রুপের চোখেই কিন্তু দেখা হয় তথাকথিত নাগরিক আচারের প্রতিটি স্তরে। সৌন্দর্যের মাপকাঠিতে স্থূলদেহী মানুষ এখানে অননুমোদিত, তাচ্ছিল্যের পাত্র! বিপরীতে স্লিম ফিগার আকর্ষণীয়। কিন্তু তার মানে কি এই, যেসব সংযমী স্বাস্থ্যসচেতন আধুনিক নাগরিক মানুষ দমন করতে পেরেছে তাদের জীবনের প্রতিটি উদগ্র বাসনাকে? সময়টা অবিরত বৃদ্ধির; সংখ্যায় কিংবা মাত্রায়; যখন ভোক্তা ভোগ্যের ভেদরেখা নিয়ত অপসৃয়মাণ। শূন্য ক্যালরিতে মেদবাহুল্যকে ফাঁকি দিয়ে দেহের কাঙ্ক্ষিত আকার আর আস্বাদন দুটোই তো হলো, এই বিরাট প্রসারমাণ বাস্তবকে ফাঁকি দিয়ে অবশেষে আকাঙ্ক্ষার কাঙ্ক্ষিত আকার কি পেলাম আমরা? জিরো ক্যালরিতে অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা প্রত্যেকে যার যার ব্যক্তিগত শৈল্পিক অভিপ্রকাশ নিয়ে নিজেদের কাজগুলো তুলে ধরেছেন। প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত প্রদর্শনীটি চলবে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

কায়ায় চলছে নাজিব তারেকের শিল্পকর্মের একক প্রদর্শনী

শুক্রবার থেকে উত্তরার গ্যালারি কায়ায় শুরু হয়েছে শিল্পী নাজিব তারেকের শিল্পকর্মের অষ্টম একক প্রদর্শনী। এতে স্থান পেয়েছে রিলিফ মিডিয়ামে করা ৬৭টি চিত্রকর্ম। প্রতিদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত প্রদর্শনীটি চলবে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন